পোস্ট বার দেখা হয়েছে
তিয়াসার অভিমান
মৈনাক— কেমন আছো....?
তিয়াসা— যেমনটা কামনা করেছেন ৷
মৈনাক— আমি কেমন আছি ,
জিজ্ঞাসা করবে না ... ??
তিয়াসা— ভালো থাকবেন বলেই অামার স্বচ্ছতার হাত ছেড়ে গেছিলেন আপনার বউ শিক্ষিতা সুন্দরী ঝর্ণার কাছে, তাই ভালো না থাকার প্রশ্নই আসে না ৷
মৈনাক— রেগে আছো আমার
আমার ওপর.......?
তিয়াসা— না.......কোথায় .....
একদম না ........
মৈনাক— তাহলে অভিমান
করেছো .........?
তিয়াসা— কোন অধিকারে
করবো.....?
যাকে শুধুই নীরবে বয়ে
যেতে হবে,
মৈনাক— কোন অধিকার নেই ..
তিয়াসা— ছিল.... কিন্তু কেড়ে
নিয়েছেন অনেক আগেই ৷
মৈনাক— আপনি,আপনি
করছো কেন......?
তোমার মুখে আপনি শুনতে এই পাহাড়ের বুকে খুব কষ্ট হয় ৷
তিয়াসা— তুমি বললে আপন মনে হয়৷মনে হয় খুব কাছে গায়ে গায়ে লেগে আছি ৷আর তুই বললে ঘৃনা চলে আসে আমার মনে ৷এতটাই ভালোবেসেছি যে ঘৃনার কোনো স্থান নেই সেখানে ৷
মৈনাক— আর আপনি ......?
তিয়াসা— বৃহৎ আকার পাহাড়ের সম্মান করে ৷৷
মৈনাক— নাকি বলো তাচ্ছিল্য.?
তিয়াসা— পাহাড় আপনি হাসালেন ,আমি সাধারন নদী সে ক্ষমতা কি অামার আছে ?
তাচ্ছিল্য তো আপনি করেছিলেন নিজের গা থেকে ছুঁড়ে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন ৷
মৈনাক— তুমি কি একাই আমাকে ভালো বেসেছো ,
আর আমি বাসিনি ......?
তিয়াসা— যদি ভালো বেসেই থাকতেন,তাহলে ওই বুকে অন্যের স্থান হতো না,ভালোবাসলে কখনই অামাকে ভাসিয়ে যেতেন না,একে ভালোবাসা বলে না ,ভালোবাসাকে অপমান নাই বা করলেন ৷৷
মৈনাক— জানো আমি সব বলতে চাই ,নিষ্ঠুর বাস্তবতা ছিল সেদিন ৷
তিয়াসা— চুপ করুন...বাস্তবতার মাত্র অজুহাত ছিল আপনার ৷আর বাস্তবতার দোহাই দিয়ে ঝর্ণার ছলা কলায় নিজেকে করেছিলেন মত্ত ৷
মৈনাক— আসলে আমি সেদিন .....
তিয়াসা— বোঝানোর দরকারটা কি ৷আমার সারা শরীরে বয়ে চলেছে যত ময়লা আর্বজনা বাজে পঁচা গন্ধ ৷যত আমাকে ঘাঁটবেন বাজে পঁচা দুর্গন্ধ তত বের হবে ৷
মৈনাক— আমাকে কি ক্ষমা করে দেওয়া যায় না .......
তিয়াসা— যখন সারাদিন দাড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে যাবেন,তখন আমি আপনার বুকের মধ্যে শান্ত নদী বয়ে গিয়ে সব ক্লান্তি দূর করবো৷
প্রতিদিন রাতে চাঁদের আলো আমার বুকে এসে টলটল করবে৷ আমার মাথা আপনার বুকে রেখে পার করবো প্রতিটি রাত৷আমার প্রতিটি দিন শুরু হবে আপনার ছোঁয়ায়, আর প্রতিটি রাত শেষ হবে আপনার আদরে ৷
আপনার ওপর শুধু আমার অধিকার ,শুধু আমার ......
সেই অধিকার আপনি অন্য কাউকে দিয়েছেন আমাকে বঞ্চিত করে ৷শেষ অবধি পাশেই যখন থাকবেন না,তবে স্বপ্ন কেন দেখালেন ...?
মৈনাক— অনুরোধ করছি আর কষ্ট দিও না নিজেকে ......
তিয়াসা— বাহ্ অসাধারন.....
ভালোই তো অামাকে অথৈই সমুদ্রে ভাসিয়ে দিয়ে বলছেন আর কষ্ট পেও না ৷
মৈনাক— আমি স্বীকার করছি যে ভুল করেছি৷ আমাকে ক্ষমা করো ৷অনুশোচনার রৌদ্র প্রখরে রোজ পুড়ে যাচ্ছি
তিয়াসা— পুড়তেই যখন পারবেন না আমাকে কেন ভাসালেন৷
তবে আমাকে ভাসিয়ে দিয়ে জীবনের বয়ে চলা ,গতির ধারার মানে শিখিয়েছেন ৷আমি জানি আমাকে থামতে নেই ,কেবলই বয়ে যেতে হবে, আমি যে নদী........
মৈনাক— তুমি কি তোমার চলার পথে অন্য কাউকে আর ভালোবেসেছো ......?
তিয়াসা— না তো .......তবেএক দক্ষিনা চঞ্চল তার জীবনে পুরোটাই আমাকে মিশিয়ে ফেলেছে ৷ সে আমাকে এতোটাই ভালোবাসে আপনার প্রতি আমার ভালোবাসাকেও হার মানায় ৷ তাকে ভালোবাসা তো দূরের কথা ,ততটা বেশি ভালো ব্যাবহারও করি না তার সাথে ৷ কিন্তু সবটা জানার পরও ছেড়ে যায় না আমাকে ৷
কষ্ট পেয়ে কান্নাটাকে লুকিয়ে রেখে আমাকে হাসায় ,মুক্ত আকাশে দোলায় ,আমার সাথে সাথে ভেসে বেড়ায় ৷ মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় সব ভুলে আপন করে নি চঞ্চল দক্ষিনা বাতাসকে ৷কিন্তু তখনই আপনার পৈশাচিক মুখটা ভেসে ওঠে৷ মনে পড়ে যায় বিশ্বাস ঘাতককে৷
তবুও সে বলে আমার খেয়াল রাখার জন্য সারা জীবন অামার জলউচ্ছাসে বাতাস হয়েই ভেসে বেড়াবে ৷
মৈনাক— মেনে নাও তাকে .....?
আমি জানি হয়তো একদিন আমাতেই মিলন হবে তোমার ৷জানি কিছু ক্ষনের বিরহের জ্বালায় জ্বলেছো তুমি ৷এই প্রতারণার আগুনে জ্বলবে সারা জীবন তোমার হৃদয় ৷ আর জ্বলবে সেই প্রিয়সী ঝর্ণা মেয়েটি ও
যে অসম্ভব ভালোবাসো ,পারবে না তুমি আমাকে ছেড়ে থাকতে ৷
এসো কাছে প্রিয় গায়ে মাখি তোমায় ৷
তিয়াসা— ভয় হয় যদি আবারও ভেঙে দাও মন .....
0 মন্তব্যসমূহ