সাপ্তাহিক সেরা - কাজল দাস




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

ফেরারী প্রেম
কাজল দাস

কয়েক শতক পর-
আজ সতেরো টা দিন,
দুজনে এক সাথে এক ঘরে।
এতো কাছ থেকে বহু দিন তোমায় দেখা হয়নি,
হঠাৎ করেই একটা বাড়ি আর দুটো দরজা,
কখনো যে নিজের ইচ্ছায় একটা ঘর হয়ে উঠতে পারে,
তা আমার জানা ছিল না।
এতো দিন দূরত্ব টা যেন একসাথে একঘরে-
এক বিছানায় নিজের অস্তিত্ব খুঁজে মরছিল,
আজ নিস্তব্ধতার বিশাদ অন্ধকার দরজায়
কেউ যেন হাতুড়ির ঘা মারলো।
চমকে উঠলাম,-         ’তুমি'
ছোট্ট শব্দটার ভেতর বেঁচে উঠলো-
এক প্রচন্ড সাগরের উত্তাল,
বেজে উঠল স্পন্দিত সেতারের ঝংকার,
যেন বহু শতাব্দীর ঘুম নিমেষে ভেঙে গেল-
এক ধাক্কায়।
-“তুমি চা খাবে?”
না- আজ আর আমার কোনো আপত্তি নেই,
তুমি এসেছো!
সমস্ত পৃথিবীটা যেন আজ কিছুক্ষণের জন্য থমকে দাঁড়ালো।
চারিদিক নিস্তব্ধ, কোথাও একটা পাখি নেই,
কলের জলে শব্দ নেই-
পাখা ঘোরার ইচ্ছে নেই-
খবরের কাগজ থেকে একটা একটা করে-
অক্ষর গুলো মহাশূন্যের দিকে ছুটে চলেছে।
জলন্ত আগুনের শরীরে-
কয়েক ফোঁটা তৃষ্ণার মত কিছু অনুভূতি,
সেই চেনা গন্ধ, সেই অচেনা অভ্যেসে-
জেগে ওঠা আমার ইচ্ছেরা আজ আবার তোমার চৌকাঠে,
তোমার দরজায়।

তোমাকে খুঁজে পেতে আজ মৃত্যু ভয়ই যথেষ্ট,
কিন্তু যে মৃত্যু ভয় ফিরিয়ে দিল তোমাকে-
তাকে ছেড়ে যেতে আজ খুব ভয় হয় যে।
খুব স্বার্থপর আমি, জানি-
কারণ- এই দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও নিজের কথাই ভাবছি
কিন্তু আমি তো আর একা নই,
আজ-
অজানা পাখির ঠোঁটেও লেগে আছে উৎসব,
প্রজাপতির রঙিন ডানায় উচ্ছল যৌবন,
মৌমাছির কথায় জীবন্ত স্বরলিপি,
আর আমি তো সাধারণ একটা প্রেমিক।
ঘরের আনাচে কানাচে, গলির মোড়ে,
তপ্ত দুপুরে রোদে ভিজে যাকে ছুঁতে চেয়েছি।
যার ফেরার পথে আমার ভালবাসা-
অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে থেকেছে বহুদিন,
তাকে ফিরে পেতে একটু না হয়-
স্বার্থপরই হলাম,  -ক্ষতি কি!
প্রেমের জন্য স্বার্থপর হতে বেশ লাগে,
তাই দুজনের বাকি জীবনটা না হয় লকডাউনই থাক,
আমরণ ছুঁয়ে থাক মৃত্যু ভয়।
সেই ফাঁকে জেনে নেব কার কাপে
ক চামচ চিনি প্রয়োজন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ