পোস্ট বার দেখা হয়েছে
রোমাঞ্চিত অবগাহনে
মেনকা বিশ্বাস
অসীম নক্ষত্রলোকে রোমাঞ্চিত অবগাহনে
ভরে নেবো সারা সত্তা আমার
নীল জলে ডুব দিয়ে
অবাধ আনন্দ নেবো লুটে ।
হাওয়ায় হাওয়ায় ঢেউ তুলে পাতায়
স্বর্ণ সাধ বাতাস আসবে বয়ে
তাপ- ক্লান্তি ধুয়ে মুছে জুড়াবে যন্ত্রনা।
প্রথাহীন আন্দোলিত স্পর্শটুকু
স্বপ্ন রহস্যময় ভালোবাসায়
নরম আলোয় দেবে পেতে সান্ত্বনা ।
সহস্র বিক্ষোভ ঢেউ কোথা যাবে দূরে
নীল জলে ডুব দিয়ে মন যাবে ভরে
ঘনায়মান অন্ধকার সন্দেহের ছায়া ফেলবে না আর উষ্ণ হয়ে মনের গভীরে গিয়ে ।
অটল বিশ্বাসে জানালার ফাঁকে
অতল গভীর চোখ মেলে দেখবো দ্বিধাদ্বন্দ্বহীন আজন্ম পরিচিত সুন্দর বিশ্বটাকে।
মুগ্ধ চাঁদ বিস্ময়ে জেগে রবে শিয়রে
মনের অতল তলে রাত্রি বলবে কথা
জ্যোৎস্না অক্ষরে।
====
মৃত্যুর কোনো জাত হয় না
কাজল দাস
দেহের মাংস উপরে নিয়েই হোক উৎসব
হাতের পেশি শিথিল করে মশাল জ্বালাও
মৃত্যুর কোনো জাত হয় না, - আত্ম প্রসব
জয়'পতাকা বুকের ওপর দাও গেঁথে দাও
ফিরে যাব আজ যুদ্ধ শেষে নিজের দেশে
পা পড়ে থাক জুতোর ফিতের অন্ধকারে
বুক নিয়ে যাও যেথায় পারো- নিরুদ্দেশে
টুকরো শরীর রক্ত মেখেই ফিরুক ঘরে
আমার শরীর থাক পড়ে থাক দেশান্তরে
আমার আকাশ মুঠোয় বাঁধা শক্ত হাতে
ভুলেও যেন হাত রেখো না চোখের পরে
চোখ দুটো থাক প্রিয়ার জন্য অপেক্ষাতে
==
পরবাসী রাত
মধুপর্ণা বসু
ঘুম আসেনা চোখের পাতায়,
নিঃশব্দে ছায়ারা উপপল্লব কাঁপিয়ে দেয়।
অভ্যাসে জাগা বারোয়ারী রাতে খঞ্জনী বাজিয়ে দেশোয়ালি গান গাইছে বিহারি চৌকিদার,
রাতের ব্যক্তিগত ভাষা তার জানা নেই.....
সাদা বিছানার চাদরে ফিকে ফুলপাতা,
কবেই ভুলে গেছে, এলোমেলো বিক্ষিপ্ত জলের আলপনা,
রাতের নীল আলো, হলুদ, সবুজ, হতে হতে একদিন ধুলো পড়ে কালো, চালসে পড়া প্রৌঢ়তায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।
নিয়মমাফিক টিকটক ঘড়িতে বার্ধক্য বাস করে,
মাঝে মাঝে ভাবতে ইচ্ছে করে, কেন এই অসময়ে পরবাস?
শরীরের থেকেও জরাগ্রস্থ মনে কিছু উত্তর খুঁজে পাওয়া বাতুলতা।
=====
অপেক্ষা
সনৎ মন্ডল
ভুল !
যেন এক পাখির নখ...
আঁচড়ে আঁচড়ে কেটে দিচ্ছে গোটা জীবন !
সময় ,
কখন যেন মুহূর্ত হয়ে গেলো..
ফাটল ধরলো প্রাচীরে ...
প্রাচীর যেনো সম্পর্ক কাঁটাতার !
জীবন,
কিছু মাটি , দু ' ফোঁটা জল , একটা বীজ !
এই মাত্র একটা গাছের জন্ম হলো...
আমি,
এই মুহূর্তে ফুল ফোটার অপেক্ষায় আছি...
=====
কবে আসবে চেনা সেই মুখরিত দিন
ফাতেমা খাতুন মুক্তা
বহু আকাঙ্ক্ষিত কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত
জীবন চলার পথে হয়ে উঠে বেঁচে থাকার পরম পাথেয়,
একবার নয় দুবার নয় বহুবার,
সাগরের তীর ঘেঁষে নীল জলে হাত ধরে দুজনে হেঁটেছি রোমাঞ্চিত আবেশে ,
কত উঁচু উঁচু পাহাড়ী আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে
দার্জিলিংয়ে পাহাড়ের ঢালে চা বাগান দেখেছি ঘুরেফিরে ,
পাখির মতো ডানা মেলে আকাশে উড়ার স্বাদও মিলে যায় দুমাসের মধ্যেই,
যখন প্রথম বিমানে চড়ে নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলাম -------
ঘুরে ঘুরে নেপালের দর্শনীয় স্থান দেখা শেষে
নাগরকোটের হেলিপ্যাড হয়ে হিমালয়ের এভারেস্ট দেখেছি দুচোখ ভরে,
দিনগুলি আমাদের কতইনা মধুর ছিল!
দেশের ভিতরেও বেড়িয়েছি অগণিত বার সিলেট,রাজশাহী, কুমিল্লার ময়নামতি, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা,
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত,
পদ্মা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট আরও কত কি!
এসব দর্শনীয় স্থান দর্শন কি শুধুই জ্ঞানার্জন
শুধুমাত্র কি চোখের তৃপ্তি সাধন,
মনের প্রতি কোণে রোমাঞ্চকর ফানুস উড়িয়ে তারুণ্যময় প্রেমে দুজনার ভেসে যাওয়া,
আহা!
কি মনোরম মনোরঞ্জন সেই স্মৃতিময় মধুক্ষণ ।
সেসব আজ শুধুই স্মৃতি,
কোনো একদিন রাণী ভবানীর রাজপ্রাসাদে কয়েকমিনিটের জন্য নিজেকে রাণী ভবানী ভেবে আত্মহারা হয়েছি,
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আগরতলা,
ওখান থেকে সাঁই সাঁই করে বিমানে কলকাতা,
বেশতো ছিল মুহূর্তগুলো।
আবার কয়েকমাসের মধ্যেই কলকাতার বোলপুরে, শান্তিনিকেতন দেখে মনের আঁশ না মেটায়
পরদিনই জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে,
চোখের পর্দায় মনের আয়নায় যখন দেখলাম তুমি রবীন্দ্রনাথের বেশে নতুন বৌঠানের আঁচল ধরে ছুটে বেড়াচ্ছো ------
সারাক্ষণ বৌঠান বৌঠান করছো --------
তখন যেমন হাসি পাচ্ছিল তেমনি একটু একটু ঈর্ষান্বিত হচ্ছিলাম,
কোথায় যে দিনগুলো হারিয়ে গেলো?
চলার পথ আচমকাই কেন যে অমসৃণ হলো ?
কেমন করে থমকে গেছে জীবনের সব আয়োজন?
কিছুই করার নেই,
কিছুই বলার নেই,
কোনো সান্ত্বনা নেই,
বেঁচে থাকাটাই এখন সবচেয়ে বড় কথা।
নৈঃশব্দ্যের ঝড় এসে নিঃশব্দেই সব সাধ আহ্লাদ ভেঙেচুরে খানখান করে দিচ্ছে,
কবে পরিত্রাণ পাবো কিছুই জানিনা,
কবে আবার জীবন স্বাভাবিক হবে কেউ কি বলতে পারবে?
কবে আবার আগের মতো মানুষ স্বস্তিতে ছুটবে ঘরের বাইরে রোজকার মত নব নব কর্মোদ্যমে?
মানুষ কি আবারও আগের মতো ছুটবে আনন্দ বিনোদনে?
কবে ------, কবে আসবে আবার চেনা সেই মুখরিত দিন?
আর কতগুলো দিন পর অদৃশ্য এই মৃত্যু পরোয়ানা বানচাল হবে?
আর কতদিন পর শান্তিতে ঘুমাবো এই ভেবে যে
আমি মৃত্যুর তালিকার আওতামুক্ত?
আর কতদিন পর বাবা মায়ের কোলে মুখ গুঁজতে পারবো দ্বিধাহীন চিত্তে একেবারেই নির্ভয়ে?
আর কতদিন পর নিজ সন্তানকে পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে আদর দিতে পারব কে জানে?
কেউ কি বলতে পারবে?
আর কতদিন পর
ফিরে পাবো সেই কোলাহল মুখরিত
অতি পরিচিত চেনা সেই জনপদ?
2 মন্তব্যসমূহ
উত্তরমুছুনপ্রত্যেক সেরা লেখনী কে
আন্তরিক ধন্যবাদ প্রীতি ও শুভেচ্ছা
সকল বিজয়ী কবি বন্ধুদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা 🌹🌹
উত্তরমুছুন