আলোচনা | দলছুট পাখি




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


বিজ্ঞানের যেখানে শেষ ঈশ্বরের সেখান থেকেই শুরু
দলছুট পাখি


কে এই ঈশ্বর?

শুনেছি, কখনো কখনো সাকারে ধরা দেন পুণ্যাত্মার সামনে আশীর্বানী নিয়ে। আবার কখনো পাপীর সামনে উপস্থিত হন অভিশাপ নিয়ে।
ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে পুণ্যাত্মা ফুলে ফেঁপে ওঠেন আর পাপী শোকে তাপে শুকিয়ে আমসত্ত্ব হয়ে যান!

আমি যে কোন দলে সেটা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি!
কেননা ছবিতে বা মূর্তিতে দেখা ঈশ্বর আমার সামনে সশরীরে উপস্থিত হননি আজও।

আগেই ক্ষমা চাইছি ঈশ্বর বিশ্বাসী সাধুজনের কাছে।
আজকের আলোচনা কারো ধর্মে আঘাত করার জন্য নয়। শুধুমাত্র নিজের কিছু বিশ্বাসকে সকলের সামনে মেলে ধরার জন্য।

সাধারণ ভাবে বেশির ভাগ মানুষ প্রতিদিন মরে। প্রতিমুহূর্তে মরে। প্রাণে মরা নয়। ভয়ে মরা। 
যে কোনো সমস্যায় ভয় পায়, বিপদে ভয় পায়, খারাপ সময়ে ভয় পায়। আর তখনই ঈশ্বরের শরণাপন্ন হয়ে করজোড়ে প্রার্থনা করে 'এবারের মতো বিপদের হাত থেকে রক্ষা করো ঠাকুর'।

ছবিতে, মূর্তিতে দেখা ঈশ্বরের প্রতিনিধি হয়ে আবার কিছু মানুষ ঈশ্বর হয়ে ওঠেন। কিছু ম্যাজিকের সাহায্যে ভক্তের ভগবান হয়ে ওঠেন। বিপদের সময় বেশির ভাগ মানুষের হৃদয় দুর্বল হয়ে যায়। আর হৃদয় দুর্বল হলেই মস্তিস্ক বিচার বিবেচনার কাজ বন্ধ করে দেয়। ঠিক সেই মুহূর্তেই আধ্যাত্মিক ভাবনার উদয় হয় মানব শরীরে।

মানব শরীর...
সেটা কি জিনিস?
রক্ত, মাংস, কোষ, শিরা, উপশিরা দ্বারা গঠিত একটা জটিল যন্ত্র। যতটা জটিল এই মানব দেহ ঠিক ততটাই জটিল এই মস্তিষ্কের গঠন। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় যা কিনা বিভিন্ন সফ্টওয়্যারের সমাবেশ। আর শরীর একটা হার্ডওয়্যার।  সফ্টওয়্যার প্রোগ্রামিং যেভাবে সাজানো হবে হার্ডওয়্যারও তেমনি ভাবেই কাজ করবে।

তাহলে ঈশ্বর?
তিনি হলেন বিশ্বাস।
অবশ্যই আছেন তিনি। আমাদের নিজেদের মধ্যেই। "বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।"

প্রশ্ন আসতেই পারে, তাহলে এই শরীর কে তৈরি করেছেন? এই ব্রহ্মান্ড কে, কিভাবে তৈরি করেছেন?
বিজ্ঞান বলবে- অনু, পরমাণু। আর একটু এগিয়ে কোয়ান্টাম ফিজিক্স বলবে জিরো গ্রাউন্ড।
তাহলে আবার প্রশ্ন- জিরো গ্রাউন্ডের পর কি আছে? 

আছে, কিছু তো আছেই। সেটা হলো আমার আপনার বিশ্বাস। পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে শক্তি, শক্তির রূপান্তর ঘটে পদার্থে। 
তাহলে কোথায় ঈশ্বর? কোথায় আপনি, আমি?

সবই মিলে মিশে একাকার। 

যাকে চোখে দেখতে পাই না, যাকে ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করতে পারি না, তাকেই তো বিশ্বাস করতে হয়। আর যা কিছু চোখের সামনে দৃশ্যমান, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য তাকে আলাদা করে বিশ্বাস করতে হয় না। কারণ তার অস্তিত্ব বর্তমান। যেমন আপনি, আমি। আমাদের অস্তিত্ব প্রমাণের প্রয়োজন নেই একে অপরের কাছে। কিন্তু ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে বা করাতে আমরা যুক্তি তর্কের সম্মুখীন হই বারবার। 

আর আমাদের অন্তরের এই বিশ্বাসকে যদি দৃঢ় করতে পারি তবে আমি আপনি প্রত্যেকেই ঈশ্বর। তাই বলে নিজেকে ঈশ্বর প্রমান করতে গিয়ে বিজ্ঞানের হাত ধরে যদি তৈরি করি সুপার পাওয়ার? মুশকিল ঘটে তখনই। নিজেদের ধ্বংসের পথ নিজেরাই সুগম করে তুলি। 

বিশ্বাস আনে চেতনা। চেতনার উন্মেষ ঘটিয়ে আধ্যাত্মিক স্তব্ধতার শব্দ "ওউম" উপলব্ধি করতে পারি। জিরো গ্রাউন্ডের ভর ভার মাপার জন্য বিজ্ঞানের সুপার ইন্সট্রুমেন্ট তৈরিতে লেগে পরতে পারি। ইনফিনিটি লেভেলে পৌঁছতে নিজেদের সফ্টওয়্যার প্রোগ্রামিংকে বারবার পরিবর্তন করতে পারি।

তাহলে কে ধরা দিলো শেষ পর্যন্ত?
আধ্যাত্মিকতা না বিজ্ঞান?

ধরা দিলাম- আপনি আর আমি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ