পোস্ট বার দেখা হয়েছে
শুনি সৃষ্টির আহ্বান
বুলুরাজ
ভুলে গেছে মন রোমান্টিকতা -
মরে গেছে এবুকের,ভালবাসার অন্তর,
হৃদয় গুলিস্তানে রক্তজবারা-
বন্যার কাদা জলে,পচে গলে একাকার।
যত দূর দৃষ্টি যায় -
শুধুই চোখে ভাসে প্রকৃতির বিষন্নতা,
বাহারি ভূষণ ছেড়ে-
সদ্য বিধবা আজ, ধরিত্রী মাতা।
রঙিন স্বপ্ন ছিল যে নয়নে-
হয়ে গেছে তা আজ,একদম ফিকে,
গৃহহীন মানুষেরা শূন্য দু'হাত-
প্রশস্ত করে আছে আকাশের দিকে।
রেহাই পায়নি- প্রাণের উপাসনালয়,
সব গেছে তলিয়ে,আগ্রাসী বন্যায়,
মুয়াজ্জীনের আহ্বান ভাসেনি আকাশে,
জ্বলেনি সন্ধ্যা প্রদীপ,বাজেনি শঙ্খধ্বনি,
পাড়ার মন্দিরে,গৃহস্থের আঙিনায়।
বিধ্বংসী মরণ ঢলে-
ধুয়ে মুছে গেছে সব,
যা ছিল সঞ্চিত, কৃষকের গোলাঘরে।
হারায়েছে শিশু মন-
আনন্দ উচ্ছ্বাস,
অসহায়ত্বের আকুতি ক্রন্দন স্বরে।
নিজের অস্তিত্ব,স্বরূপে ফিরে পেতে-
হন্য হয়ে খুঁজি ভবিষ্যতে "বর্তমান",
"জাগো,উঠে দাঁড়াও,এটাই জীবন তোমার"
অন্তরে শুনি ক্ষীণ,সৃষ্টির আহ্বান।
===
অনস্তিত্ব
মেখলা ঘোষদস্তিদার
কোনো ফিল্ম বা রঙ্গ মঞ্চ নয়,,,
স্লট মেপে প্লট সাজানো ছিলো অলক্ষ্যে
জীবনের পরতে পরতে,
অস্তিত্বহীন গভীরে,,,,,
অথচ প্রকাশ্য অনুরাগে,
উড়ো হাওয়ার বুনো শিরশিরানি,,,,
বিদ্যুতের মতো বয়ে যেতো,,,,
জোড়া ওমের উষ্ণ সন্ধিক্ষণে,
যেটুকু নজরে আসতো না,,,
তা হলো পাকানো অভিসন্ধি,
কোমল স্পর্শে, সোহাগী আঁচড়ে
ছোঁয়াচ রাত,,,,
ললনার ছলনা,,
নেশা থেকে পেশা,,
লোভ থেকে ক্ষোভ,
বিচ্ছুরিত আভায় ঝুপ করে,,,,
ঘনীভুত হতো আঁধার,
আলোর ঔদ্ধত্যে, অহং - এর দাপটে
ক্লাইম্যাক্সে ঝলসানো আকাশ,,,,
নিঝুম দ্বীপে নিভন্ত প্রদীপ,
চিতার উড়ে আসা ছাই,,,
ছড়িয়ে পড়তে গীতায়,,,,
লাল কাপড়ের অস্তিত্বের ভাঁজে ভাঁজে
শুধু অনস্তিত্বের সত্য স্বরূপে।
সম্পর্ক
উজান শুভ্র
চুপি চুপি প্রেয়সীর চোখে ফাঁকি নয়
রঙ তুলি দিয়ে এঁকে দাও বন্ধনের বনানী।
ঐ দ্যাখো গাছেরা নিশ্বাস নেয়
বর্ণময় বৃষ্টি ঝরায় উপত্যকায়।
নদীর থেকে কাজল এনে পরিয়ে দাও তার চোখে
সে দুঃখহীন গান শোনাবে তোমায়।
সূর্যোদয়ের নরম হাওয়ায় যেদিনটি তুমি পেলে
রক্তবর্ণ সমস্ত বিষাদময় তানপুরার সুর
একপাশে রেখে বলে দাও--
আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসী।
সম্পর্ক আসলে একটি গভীর বিশ্বাস...
====
ঝড় যখন বিষাক্ত
পিন্টু বেতাল
শুনশান ফাঁকা বাইপাস-
গভীর বিষণ্ণতা মেখে ছুটে চলা রাজপথ-
স্মৃতি বিজড়িত ধূলোর আস্তরণে কিছু চেনা স্পর্শ;
এখানেই…..
হ্যাঁ, এখানেই কোনো এক ব্যস্ত দুপুরে-
উত্তাল ঝড় আছড়ে পড়েছিল হৃদয়ের দূর্বার সাগরে।
এরপর... সেই ঝড় ওই মসৃণ রাজপথের গতিতে,
ছুটে গেছে জীবনের অনেকটা সময়!
মনে পড়ে, নীলাঞ্জনা?
হয়তো সেটা তোমারই আভিজাত্যের কান মলে!
তবুও কি তাতে, আমার পকেটমানি বাঁচানো
বাদুড়ঝোলা বাসের- সস্তা টিকিটটার, কোনো দাম ছিল না?
আসলে বোধহয়,
বামুন হয়ে চাঁদে হাত বাড়িয়েছিলাম!
তাই জোছনাটা হঠাৎই মেঘের ফাঁকে হারিয়ে,
আকাশ থেকে নেমে এসেছিল,
নীলাভ বিষের জ্বালাটা!
যেটা, আজও হৃদয়ের কোনো এক কোণায়,
চাঁদের কলঙ্কের মতোই চিরস্থায়ী হয়ে রয়ে গেছে!
কালিমাগুলো আজও ভেসে বেড়ায়,
স্মৃতি বিজড়িত ধূলোর গন্ধে-
তিলোত্তমা কলকাতার আকাশে বাতাসে,
রেসকোর্স থেকে ধর্মতলামেট্রো, গড়ের মাঠ হয়ে-
ভিক্টোরিয়ার একান্ত নিরিবিলি ঘাসে।
আজ ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে
বিষাক্ত সময়ের সাথে যুদ্ধের আবহেই,
আরো একবার এসে দাঁড়িয়েছি-
বুকের মাঝে লালিত পালিত হওয়া
বিষবৃক্ষটার উৎসের শিকড়ে,
শুনশান ফাঁকা বাইপাসে।
আর নীলাঞ্জনা, তুমি?
কোনো এক নিষ্ঠুর কর্মফলের মায়ায়,
বধূনির্যাতনের শিকার হয়ে, জীবন থেকে পালিয়ে গিয়ে-
ঠিক আজকের দিনেই পৌঁছে গেলে ওই দূর আকাশে!
স্মৃতিচিহ্ন রেখে গেলে, দুটি নীল আঁখির
মালাচন্দন সুসজ্জিত এক অচেনা প্রতিকৃতি;
ও আরো একটা অকথ্য যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া
বিষাক্ত নীলাভ শরীরের বিদীর্ণ ব্যাথার ঝড়….
আমার মলীন হৃদয়ের ক্যানভাসে!
এখানেই, এই শুনশান ফাঁকা বাইপাসে।।
1 মন্তব্যসমূহ
খুব ভালো প্রতিটা লেখা
উত্তরমুছুনঅভিনন্দন