পিরামিডের দেশে | ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী | ৩য় পর্ব | সোমা মুখার্জী




পোস্ট বার দেখা হয়েছে
ছবি সংগৃহীত 

___________________________________

  নীলনদের তীরে পিরামিডের দেশে  

                           পর্ব-৩

                     সোমা মুখার্জী ___________________________________

সতের'ই অক্টোবর দুহাজার আট ...

সেই সকালে বেরিয়ে প্রায় ২২৩ কিলোমিটার বাস জার্নি করে আমরা এসে পৌঁচেছি ভূমধ্যসাগরের ধারে আলেকজেন্দ্রিয়া । ইজিপ্টের অন্যতম বড় শহর এই বন্দর নগরী আলেকজেন্দ্রিয়া।ম্যাসিডনের রাজা আলেকজেন্ডার দি গ্রেট এর হাতে তৈরি এই শহর।

শহরের ইতিতাস তো অনেকই আছে আমি সেই  সমস্ত আলোচনায় যাব না .. শুধু আমার মনের মধ্যে যে ছবি টা ধরা পড়লো তাকেই আঁকতে চেষ্টা করি বরং।

কায়রো থেকে আসার সময় শহরের দুপাশের দৃশ্যপট বদল হয়ে চলেছে। মরুভূমির রুক্ষতা ছাড়িয়ে কখন যেন  কোমল প্রকৃতির ছোঁয়া লাগলো..

ভূমধ্যসাগরের ধারে একটি মনোরম শহরে পৌঁছলাম আমরা.. যার নাম আলেকজেন্দ্রিয়া..

আমাদের গাইড আমাদের হাতে সময় বেঁধে দিয়েছে...তার মধ্যেই আমাদের যা দেখাশোনা সব শেষ করতে হবে।   সন্ধ্যের মধ্যে ফিরে যেতে হবে..

কাল সকাল থেকেই আমাদের বহু আকাঙ্খিত নাইল ক্রুজ  শুরু হবে...

আমাদের সাথেই রয়েছে কলকাতা রোয়িং ক্লাব থেকে আসা একটিদল.. আমোদ প্রিয় হৈহুল্লোড়ে।

এদের সঙ্গে  সময়টা বেশ আনন্দেই কেটে যাচ্ছে।

আমরা যে দুজন মিলেই ইজিপ্ট পাড়ি দিয়েছি তা যেন মনেই হচ্ছে না।

ছবি সংগৃহীত 
সমুদ্র সৈকত বড়ই মনোরম। মন  যেন কোথায় হারিয়ে যায়। মাথার ওপর আদিগন্ত উজ্বল  নীল

 আকাশ আর নীচে নীল সমুদ্রের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। দেখলেই চোখ জুড়োয়..মনকে উদ্বেল করে তোলে।  সমুদ্রের জলে গা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন  স্থাপত্যের চিহ্ন "কাইত বে ক্যাসেল".. গ্রেকোরোমান স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন।

বাঁধভাঙা উত্তাল ঢেউ গুলি বার বার তার গায়ে গিয়ে আছড়ে পড়ছে। দূরে দূরে দেখা মাছ ধরা কয়েকটি নৌকো এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে।

ঠিক সমুদ্র সৈকতের উল্টোদিকের চওড়া রাস্তা পেরিয়ে সার বাঁধা বড় বড় ক্যাফে।  পুরোনো ইওরোপীয়ান স্টাইলে তৈরী বড় বড় বাড়ির একতলা জুড়ে।  এখনকার লোকাল লোক জনের খাবার দাবার স্টাইলে আদব কায়দায় খানিকটা  

গ্রিক রোমান স্টাইলের ছোঁয়া পাওয়া যায়।

ক্যাফে তে বসে নীল সমুদ্রের শোভা উপভোগ করতে করতে আমরা আমাদের লাঞ্চ সেরে নিলাম কফি সহযোগে । শরীর চমমনে হয়ে উঠলো।

হাতে সময় খুব কম ,বেশি কিছু দেখা হলো না...

ছবি সংগৃহীত 
ফেরার পথে দেখে নিলাম  "ক্যাটাকম্ব" মাটির নীচে নির্মিত কবর স্থান । সিঁড়ি দিয়ে ধাপে ধাপে নেমে যত হয়। প্রাচীন  রোমান স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত।

ছবি সংগৃহীত 
পাথরের খোদাই করা অনেক সুন্দর শিল্প নিদর্শন দেখতে পাওয়া গেল  এর অভ্যন্তরে । আছে অনেক অনেক মিশরীয় সভ্যতার প্রতীক দেওয়ালের গায়ে খোদিত। দেখা হল রেড গ্রানাইটে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভ পম্পেই পিলার... এবার ফেরার পালা কায়রোর পথে...

মনের মধ্যে সঞ্চয় করে নিয়ে চল্লাম কিছু অপূর্ব স্মৃতি.. ইতিহাসের পাতা থেকে , যা জীবনকে  সমৃদ্ধ করবে। অজানা কে জানবার নেশা মানুষের চিরদিনের..একে সাথে নিয়েই এই জীবনের পথ চলা.....


                                       (চলবে)

প্রথম পর্ব পড়ুন ....

দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন ....


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

4 মন্তব্যসমূহ