শারদ সংখ্যা ২০২০ || নিবন্ধ || শম্পা মনিমা




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


কবিতা ভাবনার প্রস্তাব
শম্পা মনিমা

মনের জানালা ধরে কবিতা কে ধারণ করা খুব সহজ নয়,কবিতা সংজ্ঞাহীন কালের ধারণ,উপমা রূপ, রহস্য মিলিয়ে প্রেম - প্রকৃতি, অবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করেন কবি নিজস্ব শৈলীতে।

কতো গল্পের কথা ,ভাসমান জীবন নিয়ে ওঠাপড়া করে ,আসে , যায় – স্থায়ী রেখাপাত ফেলে বাড়ন্ত মগজে, অনাবিল আকাঙ্ক্ষা জমে, উসকে দিয়ে রাখি মনের তৃষ্ণায় , বৃষ্টির পথ চেয়ে । 

স্বপ্ন ও সাধ ফিরে আসে ,খুঁজে পাওয়া যায় কখনো কখনো।
বাইরে বৃষ্টির বিপুল পদচিহ্ন সদলবলে ঝাপাঝাপি করছে, কতকিছু ধুয়ে যাচ্ছে ,কতকিছু ফোয়ারা হয়ে সৌখিন ভাসে মাধুরী ছড়াচ্ছে..
সাড়াশব্দ নেই নিশ্বাসের.. গাঢ়ো আহ্বান বাতাসে
জলের আহ্লাদে ভাসতে ইচ্ছে করছে...
এভাবেই চলতে থাকে কবিতা –
কাছে ভেসে এলো একটা খুশি।
পরিচিত গন্ডি ছাড়িয়ে নিজেকে পাই যখন তখন তার প্রাপ্তির মাপকাঠি হয় অনেক মধুর, আশ্চর্যজনক সুক্ষ্ম অনুভুতির।এযেন এক যন্ত্রণা, এই নেশা বয়ে চলে, বয়ে চলবে রক্তস্রোতে।

স্বদেশ– চেনা নগরী, মজা পুকুর, পায়ে আসা বিশ্বাস – সবই প্রকাশ পায় চিন্তা-চেতনা, সময়ের-ধারন , প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, নিজস্ব দর্শন আর কবির শৈল্পিকতা।
মুঠো খুলে এসে দাঁড়িয়ে আলো, দিয়ে যায়
অক্ষরের গভীর সরোবর।
"do not love half lover"

অর্ধ পাওয়ায় বাঁচাতে শেখা গুঁড়োগুঁড়ো সন্ধ্যায়- নীলসব জড়োসড়ো ছেঁড়া খাতায়
মাঝ রাতে বালিশের দুরত্বে আহ্লাদ লুকালো এতোসুখে– এভাবে আমাদের চর্চার অভ‍্যাস–

অর্ধ সাজানো গোছানো বাড়ানো হাত সরেছে
তবুও মনঘরে ভাঙছে মুহুর্ত তাকে পাবে বলে
গলে হিমালয় ,মুহুর্তে চেটেপুটে খায় সময়টাকে
মনের মাঝে একশ বছর আলো জ্বেলে দেখে তাকে সম্মতি চায়না ছেড়ে যাওয়ার।
অর্ধ পথ জানেনা ঝড়ের নতুন নাম এতটুকু যাপনে শুধু কুড়িয়ে রাখে গিলেছিলো শব্দের যে গান,সেটাই কবিতা।

সবটুকু শেষ হয় মাটির অন্তরে, তবুও স্বপ্ন–
স্বপ্নআঁখি অশ্রুধোয়া থাকে অসমাপ্ত সমুদ্রসৈকতে সপ্তর্ষিমন্ডল সদা জাগ্রত হয়ে দেখে অসমাপ্ত পথ।

ভালোবাসা সম্বল করে কিছু লেখা ,এটাই হয়তো অবলম্বন, ব‍্যাক্তিগত ধারণা নিয়ে কখনোই মীমাংসায় উপনীত হতে পারিনা, তাই সুখেদুখে,তাপেআনন্দে এই কবিতার কাছে আত্মসমর্পণ করি, এখানেই আমাদের মুগ্ধতা, এখানেই আমাদের তৃপ্তি, এখানেই অপার স্বপ্নজীবন-

এমনই কিছু শব্দ ধ্বনি বিন্দু বিন্দু জমা করে নিবিড় চিত্র লিখি –জরুরী আলাপ
একটা ব‍্যাক্তিগত কাব‍্যগ্রন্থের সঙ্গে দেখা হয়নি
এমন বিমুখ করেছে দেখা দিতে চায়না কখনোই!

অসুখ বেদনায় ঘুম নিভিয়ে ডাহুকীর কাতর স্বরে গায়ে হাত রেখে জানতে চেয়েছি নিঃসঙ্গ তোমাকে তুমিতো উচ্ছ্বাস এড়িয়ে মৌনতা দেখিয়েছো তাই গভীর আহ্বানে সাড়া দাওনি 
তবুও আমি তো তোমাকে দেখতেই চেয়েছি
স্বপ্ন বোঝাই ডিঙি চড়ে নগ্ন গোধূলি মেখে
তোমার শব্দ তরঙ্গে উত্তাল আবেশ প্রেমে
কুড়িয়ে রাখবো ভেবেছি তুখোড় স্বপ্নবীজ
কাব‍্য ,তোমাকে নিয়ে সংলাপ সঙ্গম হলোনা
জানতে চাইলে বলতে পারবো না তোমার কথা
সূর্যোদয় সূর্যাস্ত তোমাতেই দেখেছি
উপহারে তোমার দুরত্বের মুহুর্ত পেয়েছি।

এক প‍্যালেট রঙ মেঘের জলে গুলে গেছে ভালোবাসার সঙ্গে সারাদিন শুধু ঝরেছে আমাকে ছুঁয়ে বুঝতে পারলো না সে কি রঙ খুঁজছে।

অন্তর্মুখী গদ‍্যে তোমাকে ,ওগো কবিতা - তোমাকে চর্চা করেন মানুষ তার নিজস্ব গল্পে, রবিঠাকুরের কথায় " রূপের মধ্যে অরূপ খোঁজা " আর আবর্তনের সময়রেখা ধরে সেই সংলাপ পাই রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর সুরে " কবিতা বিষয়টি চরম রহস্যময় " ধারন করে কালের মননচিন্তা।

ঠিক কবে দেখা হয়েছিল, আজ আর মনে পড়ে না।শুধু তার সঙ্গে দেখা করবো এটাই মনে থাকে
তার কথাবার্তা তার সাহিত্য চর্চা, 
তাকে পড়ে দেখি নিভৃত আত্মজীবনী
দীর্ঘ সময় ধরে একান্ত ভালোবাসা গদ‍্য 
ভালোলাগা সম্পর্কে জানা
এটাই রূপক বাস্তবতা ,হাতে গোনা কতগুলো গভীর অনুভূতি ছাড়া - আর কিছু নেই আমার।
বেশ হাঁটি মনছোঁয়া গল্পের মধ্যে দিয়ে
অনুবাদ করি তোমার তৈরি ঘুমপাড়ানি শব্দযাদু, মুলত, অলৌকিক নয় শুধু বিশ্বাস –
এই যে আমি রোজ ঘুরচ্ছি অজানা শব্দের পর্যটনে
সেটা তোমার অন্দরমহলের মুগ্ধতা
মিলে যেতে চাই বঙ্গোপসাগর হয়ে তোমার মুখবন্ধে
নতজানু হয়েছি আস্ত বাগিচার স্নিগ্ধ ভালোবাসায়
এখানে কোনো যানবাহন নেই 
পশ্চিম হয়ে পুবে যাবার;
তবুও অর্কিডে ভরা পাহাড় নিয়ে শাপলার জলে মুক্তির মনোজীবনের অপেক্ষা - অত‍্যন্ত প্রিয় আমাদের।
চোখের সামনে তুলে ধরে কেমন আছি আমি,তুমি
পাঠ করো, সত্তার জীবনবোধ কতটা তুমিময়।

আত্মার সাথে অনুভবের সাথে শৈলীর সাথে একান্ত সত্যি বিষয়বস্তু কবির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবেশন করেন।
দুলেদুলে অন্ধকার নেমে এলেই আমার জ্বরগ্রস্ত শরীরটা একটা পুরোনো ডাক বাক্সে জমা রেখে ভাবি ,পিওনটা এসে খোঁজের চিঠিটা ফেলে যাবে–
আজ.. কাল..এভাবেই কেটেছে কটাদিন....
একদল রূপকথা সরিয়ে, কাঁচের জানালায় বৃষ্টির চোখে চোখ রেখে দেখি... 
পাতায় পাতায় ঢেকে আছে তোমার আমার কাটাকুটি খেলার রাস্তাটা, খুঁজে পেয়েছে চৌকঘরে নতুন কিস্তিমাতিয়ে জিতে যাওয়া রাজারানির গল্প–

রূপকথার গল্পগুলো খুব মনে পড়ছে, তারপর রাজা আর রানী মনের সুখে রাজত্ব করতে লাগলো......

শেষটা কোন বয়ামে রেখেছে কে জানে

তবে রোজ যেন রোদের আলো পড়ুক সেভাবে মেলে রাখা, এখানে...
জ্বরটা এখানে কমে – রোদের তাপে
অতল সময়ে প্রতিটি মৃত্যুর মুখে জন্মের আগল দেয় বোধের ভালোবাসা ,শিশুর মুখের মতো কোমলতা নিয়ে দিয়ে যায় দুরত্বের পোড়ো হাওয়া সরিয়ে,স্পর্শ করে ,হঠাৎ করে পাথরের ঠোকাঠুকি লেগে আলো জেগে ওঠে সাথে 
চোখছোঁয়াচুম্বন দিই ,এই আলোকবৃত্তে ঈশ্বরের খোঁজ পাই – পরম কবিতার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ