শারদ সংখ্যা ২০২০ || গল্প || অলিপা পাল




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


ফাণ্ডিতে সুদর্শণ
অলিপা পাল


 নূতন জিনিস সাজানো আর বাতিল জিনিস ফেলে দেওয়া ৷সকাল থেকে এই চলছে পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই শৈলেনের ৷
মনে মনে যতই বিরক্ত হোক না কেন, মুখে হাসি ফুটিয়ে যথা সম্ভব নিজেকে সঁপে দিয়েছে এই মহান কাজে ৷ অন্যথায় অশান্তির ঝড় আপাত শান্ত নিরীহ দাম্পত্য জীবনকে বিঘ্নিত করতে পারে ৷

কত কিছু যে বেরোল সদ্য শ্রাদ্ধ শান্তি হয়ে যাওয়া আশি বছরের বৃদ্ধ কাকাবাবু রবিশঙ্কর মুখার্জীর ঘর থেকে ৷দেখতে দেখতে বর্জ্যের সমাহার সামনের বারান্দা ভরে গেল ৷
 পুরনো লোহার সিন্দুক মেঝেতে ফিক্সট করা ৷ অনেক রকমের চাবি ঘুরিয়ে,ঘড়ি'র কাঁটার বিপরীতে সিন্দুকের দরজার চাকা ঘুরিয়ে, অনেক পরিশ্রমের পর খোলা গেল ৷ ভিতরে দুটো ধাতুর বাক্স ৷ একটাতে কিছু গয়না,কানাডার ব্যবসা সম্পত্তির দলিল ও অন্য বাক্সে'র ভেতরে আর একটা বাক্স,সবুজ পাথরের ওপর মিনে করা ৷ সস্ত্রীক অনেক চেষ্টা করেও খুলতে না পেরে ফোন করল  প্রত্নতাত্ত্বিক বন্ধু নিখিলেশকে,সে সব কিছু নিয়ে যেতে বলল তার অফিসে ৷ নিখিলেশের সাথে কথা বলার সময়ই বারবার একটা ফোন আসছিলো শৈলেনের ফোনে ৷সেই নম্বোর ! কাকাবাবু মারা যাওয়া পর থেকেই শৈলেনের মোবাইলে একটা নম্বর থেকে সারাদিনে বেশকয়েক বার ফোন আসছে ৷ কোন কথা বলছে না একটু পরে কেটে যাচ্ছে ৷ 
কাকাবাবু বিদেশে পড়াশুনো করে কানাডাবাসী,সেখানেই স্থানীয় মেয়েকে বিয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সুখের দাম্পত্য ৷ বছর ত্রিশ আগে হঠাৎ কাকীমা ও ছেলে নিখোঁজ হয়ে যায় ৷ সেই সময়, কানাডাতে থানা পুলিশ প্রশাসন কাগজে বিজ্ঞাপন তোলপাড় করেছিলো কাকা ৷কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি ৷ 

 রাস্তা'র উল্টোদিকে প্রত্নতাত্ত্বিক অফিস ৷সিগনাল সবুজ থাকা সত্ত্বেও আচমকা গাড়িটা এসে পড়বে বুঝতে পারেনি শৈলেন ৷তখনি একজন ধরে এক হ্যাঁচকাটান ৷দুজনেই পড়েছে ফুটপাতের ওপর ৷লোকজন ছুটে আসার আগেই গাড়ি দ্রুতগতিতে চলে গেল ৷ চালকের আসনের ব্যক্তি জানালার কাঁচে মুখ এনে যেন থুতু দিলো !কে ও! খুব চেনা মনে হল
শৈলেনের ৷গায়ের ধূলো ঝেড়ে উঠতে গিয়ে বুঝতে পারল বাম হাঁটুর কাছে প্যান্ট ভেজা সম্ভবত কেটে গেছে ৷ফুট পাতে পড়ে না গেলে আরও মারাত্মক বিপদের ইঙ্গিত অবচেতন মনেই ভেসে উঠল শৈলেনের ৷ হঠাৎ পাশ থেকে চেনা কণ্ঠস্বর !বলল লেগেছে !মাথা তুলে তাকাতেই সামনে একটা হাত বাড়ানো ! বলল উঠে আয় ৷ মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে সেই পরম বন্ধু প্রায় তিন বছর আগে দেখা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিখিলেশ রায় ৷ তাকে দুঁদে গোয়েন্দা বললেও ভুল হবে না ৷ নায়োকচিত ছাপহীন ছোট খাটো চেহারার টাক মাথা ৷শৈলেনের চোখে সে ফেলুদা ! তার অসীম জ্ঞানের ভাণ্ডারে পৃথিবী হাতের মুঠোয় ৷

ফেলুদা'র প্রত্নতাত্ত্বিক সহকর্মীদের সাথে কনফারেন্স রুমে বসলো 
শৈলেন ৷ টেবিলের ওপর রাখলো এক ফুট দৈর্ঘ্য ও তার থেকে একটু কম প্রস্থের ভারি সবুজ পাথরের বাক্সটি ৷ সঙ্গে সঙ্গে একজন প্রত্নতাত্ত্বিক স্বগতোক্তি'র মত বলে উঠল এতো জেড পান্না ৷ফেলুদার কথায় বোঝাগেলো দুর্লভ পাথর,বিশ্বের সবচেয়ে ভালো জেড পাথর পাওয়া যায় মায়ানমারে ৷এছাড়াও স্কটল্যাণ্ড, চীন,ভারত, আমেরিকা ও রাশিয়া'র অভ্র খনিতে পাওয়া যায় এই স্টোন ৷ জেড পাথর একটি পাললিক শিলা ৷ প্রকৃতিতে নেফ্রাইট ও জাডেইট নামের দুটি খনিজ দিয়ে তৈরী ৷ ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে চলছে জেড পাথরের বাক্সের প্রত্নতাত্ত্বিক খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ ৷ সব কথা শৈলেনের বোধগম্য হল না ৷
ছোটবেলায়  অরণ্যদেবের কমিক্সে দুর্বার আকর্ষণ ছিল বালুকাবেলায় জেড পাথরের প্রাসাদ ৷এই জেড পাথরের স্থাপত্য নিয়ে ঠাকুরদা বাবা ও কাকাবাবু আলোচনা করত ৷এই পাথরের প্রতি তাদের যে একটা আকর্ষণ ছিলো তা বুঝতে অসবিধা হত না শৈলেনের ৷ কিন্তু উনিশ কুড়ি বছরের শৈলেনের জীবন আমুল বদলে গেলো ৷কানাডা থেকে ফেরার পথে প্লেন দুর্ঘটনায় বাবা ঠাকুরদার মৃত্যু,অসুস্থ বাকশক্তিহীন প্যারালাইস্ট কাকা দেশে ফিরে আসেন ৷শুরু হল শৈলেনের সংগ্রামী বেকারত্বের জীবন চাকরির খোঁজ ৷বিকট শব্দে চমকে উঠল শৈলেন ৷টেবিলের উপর আচমকা এক প্রত্নতাত্ত্বিকের হাত থেকে পড়ে গেল পাথরের বাক্স এবং সঙ্গে সঙ্গে ঢাকনা খুলে গড়িয়ে গেল একটা চাকা ৷ টেবিলের ওপর চাকতিটা ঘুরতে ঘুরতে স্থির হলো ৷ বিস্ময়ে সবাই তাকিয়ে আছে চাকার দিকে ৷ অনেকটা সুদর্শণ চক্র ! সাথে পুরোনো লাল হয়ে যাওয়া কাগজ ধরণের কাপড়,তাতে কিছু লেখা ৷ ফেলুদার কথায় বোঝাগেল ফরাসি ভাষায় লেখা ৷শুরু হল লেখার মানে উদ্ধারের কাজ ৷
এক প্রত্নতাত্ত্বিক চাকতিটি পর্যবেক্ষণের পর বললেন অষ্টধাতুতে তৈরি ৷তিনি এও বললেন ফান্ডি উপসাগরে  Bird Sanctuary নিয়ে লেখা ম্যাগাজিনে এমন চক্রের ছবি দেখেছিলো ! খোঁজ শুরু হল সেই ম্যাগাজিনের ৷রাডোইন কলেজের পক্ষী গবেষক ৷ বিশেষত সাভানা চড়ুই নিয়ে গবেষণা ক্যানাডিয়ান ফান্ডি উপসাগরের দ্বীপে ৷ জঙ্গলে তিনি বহুদিন গবেষণা করেন ৷ সেখানে জঙ্গলে চাপাপড়া এক স্থাপত্যের উল্লেখ আছে ৷ স্থাপত্যের গায়ে ভাস্কর্যের সাথে এই চক্রের মিল
 আছে ৷ এমনকি স্থাপত্যটিও এমনি সবুজ রঙের পাথরের ৷ প্রাথমিক অনুমানে উনি উল্লেখ করেছেন আজ যেখান আমেরিকা মহাদেশ একসময় সেখানেই ছিলো প্রাচীন মায়া সভ্যতা ৷ আজও সেখানে মাটির নিচে জঙ্গলের মাঝে পড়ে আছে বসতির চিহ্ন ৷ মেক্সিকোর জঙ্গলের মত স্থাপত্য হয়তো এখানেও পাওয়া যাবে ৷ সেই স্থাপত্যের গর্ভগৃহে পাওয়া গিয়েছিলো জেড পাথরের কুঠার মূর্তি ও কিছু মূল্যবান সম্পদ ,যা আনুমানিক ১০০০-৮০০ খৃষ্ট পূর্বাব্দের ৷তিনি আশাবাদী,চল্লিশের দশকে রেডিও কার্বন ডেটিং প্রযুক্তির সাহায্যে আমুল বদলে গিয়েছিলো প্রত্ন গবেষণার ধ্যানধারণা ৷অবশ্যই তা এক ধরণের বিপ্লব ৷আর এখনকার প্রত্নতাত্ত্বিকদের হাতে আধুনিক প্রযুক্তির লাইডার বা লাইট ডিটেকটিং রেঞ্জিং যেন দ্বিতীয় বিপ্লব ৷আগে অনেক সময় প্রত্ন গবেষণার জন্য নিসর্গ প্রকৃতিকে ধ্বংস করে ফেলা হত ৷গভীর জঙ্গল বা পাহাড়ের প্রতিকূল অবস্থানে অনুসন্ধানের আর কোন উপায় থাকতো না ৷লাইডারের সাহায্যে অবগুণ্ঠিত ইতিহাস সম্পূর্ণ হাজির হচ্ছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের সামনে ৷ মেক্সিকোর মন্দির আঁতিপাতি করে অনুসন্ধানের জন্য সেখানকার বনভূমির কোন ক্ষতি হয়নি ৷
প্রায় এক মাস পরে মাঝরাতে ফোনের রিংএ শৈলেনের ঘুম ভেঙে যায় ৷ রিসিভ করতেই ফেলুদার অট্ট হাসি ৷
শৈলেন কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ফেলুদা বলল প্রায় সমস্ত কাজ গুটিয়ে এনেছি ,সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি, শুধু যাওয়ার অপেক্ষা ৷ হতবাক শৈলেন অস্পষ্ট স্বরে বলল কোথায়! ফেলুদা উচ্চ কণ্ঠে উত্তেজিত হয়ে বলল ,বে অফ ফান্ডি ! সাথে এও বলল ফরাসি ভাষায় লেখা লাইন গুলোর বাংলা অনুবাদ শৈলেনের ফোনে পাঠিয়ে দিয়েছে ৷এয়ারপোর্টে দেখা হচ্ছে বলে প্রানবন্ত ফেলুদা ফোন কেটে দিল ৷
শৈলেন কিছুই বুঝল না ৷সারা রাত আর ঘুম এলো না ৷ অনুবাদের লাইন গুলো মনের মধ্যে তোলপাড় করছে শৈলেনের ৷নির্দিষ্ট দিনে দিল্লি এয়ারপোর্টে  শৈলেনের সাথে দেখা হল ফেলুদা সহ আরও দুজন প্রত্নতাত্ত্বিক সহকর্মী রাকেশ ও মিঃ শর্মা ৷ যথা সময় ফ্লাইট উড়লো গন্তব্য যখন নোভাস্কোটিয়া ৷

 নোভাস্কোটিয়ার হ্যালিফেক্স এয়ারপোর্ট থেকে বাইরে এসে ফেলুদাদের সাথে দেখা হয়ে গেল প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগে কর্মরত মিঃ কাপুর,তাদের জন্যই অপেক্ষা করছিলো ৷ মিঃকাপুর ও ফেলুদার মধ্যে গাড়িতে যেতে যেতেই কথা হতে থাকলো ইংরাজী ফরাসি হিন্দি ভাষা মিশিয়ে ৷ ওদের কথায় বোঝাগেল  প্রশাসন থেকে অনুমতি সহ থাকার গাইড টেন্ট কুক সমস্ত ব্যবস্থা পাকা ৷
 ড্রাইভার সর্দারজি গাড়ি থেকেই শৈলেনকে দেখাতে থাকলো বিভিন্ন জায়গা ৷নোভাস্কোটিয়া কানাডার আটলান্টিক উপকূলবর্তী চারটি প্রদেশের মধ্যে অন্যতম ৷ঝকঝকে রোদে নীল সবুজ মেশানো সাগর এক স্বপ্নের অনুভূতি ৷এক জায়গায় গাড়ি দাঁড়ালো দুপুরের খাওয়ার জন্য ৷ স্থানীয় খাবার Rappie-pie ( গরম মাংস বা সামুদ্রিক প্রাণীর গরম ঝোলের উপর পেঁয়াজ ও গ্রেটেড আলু) এবং Hodge-Podge ( বিন গাজর আলু মটরশুটি সাথে ক্রিম মিক্স) ৷ তৃপ্তি করে খাওয়া হল না শৈলেনের ৷যতই হোক নূতন খাবার ৷ বাঙালির ভাত না হলে দুপুর জমে না ৷
ফেলুদা বুঝতেপেরে বলল ভয় নেই ! টেন্টে বাঙালি রাঁধবে ৷

দুপুরে খাওয়ার পর থেকেই ফেলুদা গম্ভীর;কপালে ভাঁজ,গভীর মনসংযোগ ৷রাকেশ,মিঃশর্মা, মিঃকাপুর সকলে ভীষণ শান্ত ৷ যেন প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছে না ৷ সর্দারজি বার বার লুকিং গ্লাসে পিছনের রাস্তা দেখছে,শৈলেনের কোন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না ৷রাস্তার দুধারের অপরূপ শোভা,অজানাকে জানা আর অচেনাকে চেনার কৌতূহল বিস্ময় ভরা চোখে প্রকৃতির রূপের মুগ্ধতা মধ্যবয়সী শৈলেনকেও শিশুসুলভ করে দিয়েছে ৷
সর্দারজি পিছনের রাস্তার দিকে দেখতে বলল ৷ ফেলুদা উত্তরে বলল এয়ারপোর্ট থেকে ফলো করছে ৷ শৈলেন বাদে বাকি তিন জনও খেয়ে গাড়িতে ওঠার পর থেকেই লক্ষ্য করেছে একটা নীল গাড়ি ওদের গাড়ির পিছনে পিছনে থাকছে ৷ এই সময় বার বার শৈলেনের ফোনে সেই নম্বর থেকে ফোন আসছে ৷ ফেলুদা শৈলেনের ফোন নিজের কাছে 
রাখলো ৷ পাহাড়ের টানেলের আগে নীল গাড়ি দ্রুত ছুটে এলো ওদের গাড়ির গা ঘেঁষে ৷এমন ভাবে গেল ওদের গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে গেল ৷
সর্দারজি পাঞ্জাবি ভাষায় কিছু বলতে বলতে গাড়ি থামিয়ে নামতে যাবে, এমন সময় নীল গাড়ি সজোরে ব্রেক কষে দাঁড়ালো ওদের গাড়ির সামনে ৷
নীল গাড়ি থেকে দুজন ষণ্ডামার্কা লোক নেমে এলো হাতে পিস্তল ৷ একজন সর্দারজির দিকে পিস্তল তাক করে স্থানীয় ভাষায় খুব উত্তেজিত হয়ে কিছু বলল ৷ অন্যজনের পিস্তলের নিশানা মিঃকাপুরের 
কপালে ৷ কি বড়দা ! গুপ্তধন আনতে যাচ্ছ? শৈলেন চমকে উঠলো ৷ এতক্ষণ রূদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি চোখ বন্ধ করে ছিলো ৷ অস্পষ্ট স্বরে শৈলেন বলল কে!শৈলেনের সিটের পাশে জানালায় দাঁড়িয়ে,হাতে পিস্তল ৷এ তো সেই লোকটা! চিনতে ভুল হলনা শৈলেনের গাড়ি দিয়ে ধাক্বা দিতে চেয়ে ছিলো ৷ বিস্ময়ে বাকরূদ্ধ শৈলেন ৷ এতো কাকাবাবুর ছেলে,তার ভাই !স্বগতোক্তির মত শৈলেন বলল বাসুদেব! উত্তেজিত বাসুদেব বলল বাবা'র সিন্দুকে যা যা পেয়েছিস দিয়ে দে আমাকে, সব আমার ৷ফেলুদা শৈলেনের ফোন থেকে সেই নম্বরে ফোন করতেই বাসুদেবের ফোন বেজে উঠল ৷ ফেলুদা তৎক্ষণাৎ বলল সমস্ত জাতীয় সম্পত্তি ৷প্রত্নতাত্ত্বিক হেপাজতে থাকবে ৷ বাসুদেব গাড়ি'র দরজা খুলতে যাবে সাইডে বসা ফেলুদা গাড়ির দরজা আচমকা খুলতেই বাসুদেব এর হাত থেকে পিস্তল ছিটকে পড়লো রাস্তায় ৷ মিঃ কাপুরও করিতকর্মা ;যে লোকটা তার দিকে পিস্তল ধরে রেখেছিল,সে বাসুদেবের দিকে তাকাতেই মিঃ কাপুর তার ঘাড়ে দিলো এক ঘুষি ৷ লোকটা রাস্তায় পড়ে ছটফট করতে থাকলো ৷ ততক্ষণে ফেলুদা রাকেশ মিঃ শর্মা গাড়ি থেকে নেমে পড়েছে ৷ফেলুদা নেমে পিস্তলটা পা দিয়ে ঠেলে গাড়ির নিচে চালান করে দিতেই বাসুদেব শৈলেনকে আক্রমণ করতে যাবে তার আগেই রাকেশ,বাসুদেবের ঘাড়ে লাগালো এক প্যাঁচ, বাসুদেব ঘাড় ধরে বসে পড়লো ৷ততক্ষণে সর্দারজিকে  পিস্তল দিয়ে তাক করা লোকটা, মিঃশর্মা'র অতর্কিত আক্রমণে ধরাশায়ী ৷ দুপুরে খাওয়ার টেবিলে বসেই ফেলুদা গাড়ির নম্বর দিয়ে পুলিশকে জানিয়ে রেখেছিলো যে একটা নীল গাড়ি তাদের অনুসরণ করছে ৷কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে তিনজনকে গ্রেপ্তার করল ৷পুলিশের থেকে জানা গেল বাসুদেব বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সাথে যুক্ত ৷ চোরাশিকার থেকে ড্রাগ পাচার ৷
পুলিশ অনেকদিনধরেই বাসুদেব এর খোঁজে ছিলো ৷ফেলুদাদের সাথে পুলিশের যা কথা হল তাতে বোঝা গেলো নোভাস্কোটিয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসাধ্য সাধনের জন্য ফেলুদাদের পুরস্কৃত করা হবে ৷
পাহাড়ের প্রতি পদে পদে অপার 
সৌন্দর্য ৷ সে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে যদি থাকে সমুদ্র আর আকাশের সমস্ত লাল রং যেন সমুদ্রের বুকে ডানা মেলেছে অস্তগামী সূর্য ৷ একদিকে আটলান্টিক বিশাল জলরাশি আর অন্যদিকে সবুজ পর্বত মালায় রাস্তার প্রতিটা বাঁক যেন শিল্পীর তুলির ছোঁয়া ৷পাহাড়ের গা ছুঁয়ে আঁকাবাঁকা উঁচুনিচু রাস্তায় নিচের গাড়ি গুলো দেখতে খেলনার মত ৷দীর্ঘ পথে পেয়েছে,বসন্তে কানাডার সুগার বুশে উৎসব, পাওয়া যায় সুস্বাদু ম্যাপেল সিরাপ ৷ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি ছুটে চলেছে সাগর কে পিছনে ফেলে  সর্পিল পথে বিয়ার নদীর তীরে ৷ সেখানেই কটেজে ফেলুদাদের রাত্রি যাপন ৷পরের দিন  ভোর হওয়ার আগে ফেরি,গন্তব্য রহস্যে ঘেরা উড দ্বীপ ৷

আটলান্টিকের বুকে টাকার ফাঁদ পেতে আজও জেগে উড এর মত এমন কিছু রহস্যে ঘেরা দ্বীপ ৷ দুশো বছরেরও বেশি সময় ধরে রহস্য লুকিয়ে আছে এরকমই অনেক দ্বীপে ৷
হয়নি রহস্যের সমাধান,মেলেনি গুপ্তধন ৷এই সম্পদের ফাঁদে পড়ে প্রাণ হারিয়েছে একাধিক মানুষ ৷প্রতিনিয়ত থাকে জলদস্যুর আক্রমণ ৷ উইলিয়াম কিড একজন জলদস্যু তার পর্যাপ্ত ধনসম্পদ আছে কোনো দ্বীপে, যার এখন সন্ধান মেলেনি ৷শোনায়ায় ভারত মহাসাগর থেকে ফেরার পথে তাকে মেরে ফেলা হয় ৷ Marie Antoinetle .যিনি ফ্রান্সের শেষ রাণী তারও গয়না লুকানো আছে এমনি কোন দ্বীপে ৷ আরও অবাক হওয়ার মত কথা ফেলুদা বলে চলে—শেষ হিমবাহ যুগের প্যালিও ইণ্ডিয়ান সভ্যতার সময় থেকে উত্তর আমেরিকার রেড ইণ্ডিয়ান সাইবেরিয়া ও মঙ্গোলিয়া থেকে এসেছিল ৷এদের শরীরে আছে ভিন্ন ডিএনএ ৷ তাদের রয়েছে এশীয় ঐতিহ্য ৷ কানাডার বেশ কিছু গুহা প্রাচীন প্যালিও ইণ্ডিয়ান প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ৷ শুনতে শুনতে মনের মধ্যে চাপা উত্তেজনায় চোখের পাতা এক হলনা কারোর ৷ পরের দিন পাখি ডাকার আগে ফেলুদারা এগিয়ে চললো ওদের অভিযানে ৷

আকাশের সাথে মিশে যাওয়া সবুজনীল ফান্ডি উপসাগর ৷সাদা বালির বিস্তর প্রান্তর আর পাথরের ওপর আঁছড়ে পড়া নীল জলরাশির মেন সাগর ৷ভোরের আলোয় গভীর জলে ভেসে বেড়ানো মাছের খেলায়
জেলেদের চলছে হেরিং মাছ ধরা ৷ ফেলুদা বলল বে অফ ফান্ডিতে দেখা যায় বিশ্বের বৃহত্তম জোয়ার ৷জোয়ারে জল ফুলে ওঠে ১৫-১৬মিটার কখনো আরও বেশি,আবার ভাটাতে ততটাই নেমে যায় ৷ 
ফেরি চালক বলল উড দ্বীপে নির্দিষ্ট সময়ের থেকে পৌছাতে দেরি হবে ৷ কারণ যা,তাতে রোমাঞ্চ ও দুঃখ মেশানো ৷ওদের যাওয়ার পথেই ফান্ডি উপসাগরের গ্র্যান্ড মানান দ্বীপের কাছে বিরল প্রজাতির মৃত ডান তিমি দেখা গেছে ৷ দেহ জুড়ে বিশাল আঘাত ৷প্রাণীটি দুর্ঘটনাবশত ফান্ডি উপসাগরে জাহজের সাথে ধাক্বা 
লাগে ৷ স্টোর কিপার তার তোলা ছবি গুলো দেখালো ৷ডলফিনের দেহের পাশে সাঁতার কাটছিলো তার বাচ্চা ৷ ডান তিমির বাচ্চাগুলি সাধারনত এক বছর তার মায়ের সাথে থাকে ৷ এই বাচ্চাটির বয়স তখন চার মাস ৷
 
সমুদ্রপৃষ্ঠের তলায় বসবাস করা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্রাণীরা কেমন আছে, কী ভাবে আছে। দিনকে দিন দূষণ, বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা, রোগের প্রাদুর্ভাব,ক্ষতিকারক অ্যালগেল ফুল, অতিরিক্ত মাছ ধরা,জাহাজের দূষিত পদার্থ, কমছে লবণের পরিমাণ। হ্রাস পাচ্ছে সামুদ্রিক খাদ্য উৎপাদন ৷ এই শতাব্দী হবে বন্য সামুদ্রিক খাবারের শেষ শতাব্দী ৷এই পরিস্থিতিতে ওই প্রাণীরা কতটা বাঁচতে পারবে !৫০বছরের মধ্যে বন্য সামুদ্রিক প্রজাতি শেষ হয়ে 
যাবে ৷
রেখা সীমা রেখা ফেলে ওদের জাহাজ চলেছে নীল সমুদ্রে,জনমানবহীন এ জল সীমায় উপলব্ধি করা এ পৃথিবী কত সুন্দর, কত করুণ,কত নিদারুণ ৷

সেন্ট জন নদী ও বে অফ ফান্ডির মোহনাকে ডান দিকে ফেলে,
ফেলুদারা এগিয়ে চলেছে গ্র্যান্ড ম্যানন,চে দ্বীপ,হোয়াইট হেড দ্বীপ এর মধ্যদিয়ে মেন সাগরের কাছে উড 
দ্বীপে ৷বারো ঘন্টার শ্রমসাধ্য যাত্রার পর আরও এক ঘন্টা লবস্টার নৌকায় গন্তব্য ৷
লাল আভায় আকাশ ছড়িয়ে !গোধূলী সূর্য ডুবে যাচ্ছে অতলান্তিকে—
দূরে আরও দূরে যত দূর চোখ যায় —
লাল—আরও লাল—যেন লাল আগুন ! ওক ম্যাপেল গাছের দ্বীপ, উড দ্বীপ ! কে যেন আবির ছড়িয়ে দিল.....সত্যি যেন আবির ছড়ানো ৷ গাছগুলো যেন হলি খেলায় মেতেছে ৷
পাতায় পাতায় সোনার রঙ ৷ লালা কমলা হলুদ পার্পল গাঢ় খয়েরি ৷ পাতারা তাদের রঙের খেলায় বাহারে মাতয়ারা ৷মাঝে মাঝে উজ্জ্বল সবুজের উপস্থিতি আলো আধারির খেলা ৷ অরণ্য জুড়ে লালচে পাতাবাহারি যেন লাল গালিচা ৷ পায়ের নিচে শুকনো পাতার কচকচ শব্দ ৷ আলো থাকতেই তাবু টাঙিয়ে কোথাও হল্ট করার কথা বলেছিলো মিঃকাপুর কিন্তু গাইড সম্মতি দিলো না। যতটা পথ আলো থাকা অবস্থায় যাওয়া যায়।ট্রেকিং শুরু হলো। বড়ো ম্যাপেল গাছে চিহ্ন দিতে দিতে দুজন গাইড কুক ও ফেলুদারা ছয় জন প্রায় এক ঘন্টা চলার পর পাহাড় বেয়ে ওঠা শুরু করলো । টর্চ জ্বালিয়ে ওরা পথ খুঁজে নিয়ে এগোতে থাকলো লতা পাতা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ৷গাছের ডাল ধরে ধরে আর কিছু জায়গায় উঠতে হলো নিজেরা পথ বানিয়ে নিয়ে। রাতের অন্ধকারে এমন ট্রেকিং কিছুটা ভয়ংকর হলেও থ্রিলিং।হিংস্র প্রাণীর আক্রমণ আর থম থমে  রহস্যময় ভৌতিক পরিবেশের ভেতর দিয়ে ওরা বন্য প্রাণী'র মত এগিয়ে যেতে থাকলো ৷ রাকেশ ও মিঃ শর্মা নিরস্ত্র অবস্থায় জঙ্গলে চলে যাওয়াতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ ৷ দুজনের এক মত সেখানে গিয়ে বন্দুকের ট্রিগার টানার চাইতে ক্যামেরার শাটার ডান করা বেশি পছন্দের । হিংস্র প্রাণী
সম্মোহনে দুজনেই দক্ষ ট্র্যাকার ।এভাবে প্রায় দু'ঘন্টা যাওয়ার পর জঙ্গল পাতলা হয়ে যেতে থাকলো ৷ পাহাড়ের মাথায় পাথুরে ভূমি ৷চাঁদের আলোয় ধুয়ে যাচ্ছে চারিদিক ৷ ডান দিকে ঝর্ণার কুলকুল বয়ে চলা ৷ সেন্ট জন নাদী ও ফান্ডি সাগরের মোহনার মত হুবুহু মোহনা এখানেও ,ওরা যে পাহাড়ে দাঁড়িয়ে আছে তার পদদেশে ও মেন সাগরের সংযোগ স্থলে ৷ ফেলুদা দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ইউরেকা বলে চিৎকার করতেই পাহাড় সাগর বাতাসে প্রতিধ্বনি হতে 
থাকলো ৷

গরম গরম ভাত আর মুরগী মাংসের ঝোল,খাওয়া দাওয়ার পর সবাই মিলে টেন্টে বসে শুরু হল পরের দিনের অভিযানের প্রস্তুতি ৷ ফেলুদা বলল রহস্য সমাধানের আসল অস্ত্র শৈলেনের বাড়ির জেড পাথরের বাক্সের ফরাসী ভাষায় লেখা কত গুলো লাইন টুকরো কাপড়ে ৷
পংক্তি—
'ক্ষয়ে যাওয়া পাথর যার, শিরাতে লোনা জল,চন্দ্র সূর্যের খেলায়
জীবাশ্ম দ্বীপের দানবী স্তম্ভ সেথায়
আগুন অটবী বালুকাবেলায়,ঈশন হরিৎ স্ফটিক যেথায়,করতলে অমৃত সুধা-বাসুদেব ঝুলন দোলায় ' 

ফেলুদা লাইন গুলোর ব্যখ্যা করলো—
( পাললিক শিলার ভূমিরূপ —'ক্ষয়ে যাওয়া পাথর' ৷ পৃথিবীর বৃহত্তম জোয়ার —চন্দ্র সূর্যের খেলা,ভাঙা পাহাড় স্তম্ভ ও দানবের মত ,জোয়ারে ঢেকে যায় তাই শিরা লোনা জল এবং জীবাশ্ম দেখায়ায় ৷
'আগুন অটবী'—ম্যাপেল বন ৷ 'ঈশান' —সমুদ্রের উত্তর পূর্ব কোণ ৷ 'হরিৎ স্ফটিক'—সবুজ পাথর ৷ বাকি —??? )

ভোর হতেই শুরু হল পর্যবেক্ষণ ৷ ওরা যে পথে দিয়ে পাহাড়ে উঠেছে তার আরও পশ্চিমে পাহাড়ের উপর থেকে লেজার রশ্মিতে ধরা পড়ল ঘন গাছের পাতা দিয়ে ঢাকা নিচের অংশের ধারণা ৷ ফেলুদা শৈলেনকে বুঝিয়ে বলল লাইডার প্রযুক্তির মাধ্যমে যে লেজার রশ্মি নিচে ফেলা হয় তা কোন অবজেক্ট বা বস্তু পেলে সেখান থেকে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে এবং সোজা ভূমিতে গিয়ে আঘাত করে রশ্মি ৷ফলে ভূমিতে বিভিন্ন উঁচুনিচু ভার সাম্যহীন জায়গা দেখা যায় ৷ 
আবেগে শৈলেন ফেলুদাকে জড়িয়ে ধরে বলল আর তোর মত বিচক্ষণ প্রত্নতাত্তিকের অভিজ্ঞ চোখ সেই জায়গা যাচাই করে নেয় ৷
প্রায় এক সপ্তাহ খোঁজার পর পাহাড়ের ঢালে অদ্ভূত আকৃতির  ম্যাপেল গাছের বেশ কিছুটা নিচে সুরক্ষিত জেড পাথরের ভগ্ন স্থাপত্য ৷
যা দিনে দু'বার পূর্ণজোয়ারের জলে ঢেকে থাকে ৷ফেলুদার অভিজ্ঞ চোখে হয়তোবা রহস্যময় এক সভ্যতা, হতে পারে মায়া সভ্যতার অংশ ৷ বিশাল সবুজ পাথরের মন্দির বুদ্ধমূর্তি অন্যান্য অনেক স্থাপনা ফেলুদাদের এক রহস্যের জালে জড়িয়ে দেয় ৷ ওদের মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে পংক্তির শেষের লাইন গুলো ৷ শেষে লাইন যেন কিছুতেই মিলছে 
না ৷
 সবুজ রঙের স্ফটিক বুদ্ধমূর্তি হাতে রয়েছে পাত্র। ধ্যানমগ্ন অবস্থায় রয়েছেন ভগবান বুদ্ধ। ফেলুদা বলল এই মূর্তি মূল্য প্রায় দশলাখ ডলার ৷
ফেলুদার নির্দেশে সর্দারজি ও রাকেশ মূতি ধরে নাড়ানোর চেষ্টা করল ৷ অনেকক্ষণ ধরে কসরত করার পরও হল না ৷ফেলুদা বার বার শেষ লাইন বলতে থাকলো আর জেড পাথরের বাক্সের সুদর্শণ কে তর্জনিতে ঘোরাতে থাকলো ৷ শৈলেন মূতি স্পর্শ করে বলল বুদ্ধের হাতে পায়েসের বাটি সুজাতা দিয়েছিলো ৷ শুনেই চমকে উঠলো ফেলুদা,বলল এই তো !        'করতলে অমৃত সুধা' —
আবারও খটকা বাকি লাইনের শেষ অংশ!
ভাবতে ভাবতে কখন যেন আনমনে বুদ্ধের হাতের পাত্রের ওপর রেখে দিয়ে ছিলো চক্র ৷ হঠাৎ বিকট আওয়াজ ৷ যেন মন্দির ভেঙে যাওয়ার উপক্রম ৷ মূর্তি'র পিছনের পাথরের দেওয়াল প্রচণ্ড কাঁপছে ৷ সবাই বিস্ময়ে সেই দিকে তাকিয়ে ৷মিঃকাপুর বলল ভূমিকম্প !মিঃশর্মা ফেলুদাকে চিৎকার করে ডেকে মূর্তির দিকে নির্দেশ করল ৷ সুদর্শণ চক্র বাটির ওপর প্রচণ্ড বেগে ঘুরছে আর একটু একটু করে পাথরের দেওয়াল উন্মুক্ত হচ্ছে ৷ ভেতরে নামার সিঁড়ি চোখে পড়লো ৷
টর্চ জ্বালিয়ে সন্তপর্ণে নিচে নামতে থাকলো ওরা ৷ বদ্ধ স্যাঁতসেঁতে কুঠুরিতে মাকড়সার জাল সরিয়ে একটু করে এগোতে হচ্ছে ৷ কিছুদূর যেতেই বড় পাথরের ওপর সূদর্শণ 
চক্র ৷ যেটা ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরছে ৷ মিঃ কাপুর বলল পথ তো বন্ধ উপায় ; আর কোন রাস্তা না পেয়ে সকলে পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে দু'হাতে চাকা ঠেলতে থাকলো ৷ কিছুক্ষণ পর চক্র থেমে যেতে খুলে গেল পাথরের দরজা ৷ তাকাতেই যেন চোখ ঝলসে যাবে !ঐশ্বর্যের প্রাচুর্য !অলঙ্কার প্রাচীন মূদ্রা ছাড়াও পর্যাপ্ত জেড পাথরের তৈজসপাত্র ৷ ভেতরে  সোনালী ধাতুর কৃষ্ণ মূর্তি ৷ তার দ্যূতি ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে ৷
ফেলুদার স্বগতোক্তি ! পংক্তির শেষ অংশ—দোলায় বাসুদেব !

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. আহা অসাধারণ প্লটে গল্পটা বাঁধা। তবে আরো একটু বাঁধনের দরকার ছিল বলে মনে হয়। তবে এই গল্পটাই কিন্তু উপন্যাস হতে পারতো। কিছু পাথর রিলেটেড তথ্য খুব সুন্দর ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ভালো লেগেছে গল্পটা।

    উত্তরমুছুন