শারদ সংখ্যা ২০২০ || কবিতা || সুব্রত মিত্র




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

মনের খাতায় শরৎ যাপন
সুব্রত মিত্র

আকাশটা নেমে গেছে আকাশের গায়ে
রবিঠাকুরের মতো বড় বড় মাথা আঁকা দূর সীমানায়
মেঘেদের দাড়ি আর চুলে
রূপসী আকাশ সেজে ওঠে ফুলে ফুলে

বর্ষা হয় কখনো ভুল করে এই বাংলার শরতের মাঠ 'পরে
মেঘগুলো ঘোড়া হয়ে যায় উড়ে
ভেসে যায় বাতাসকে সাথী করে সাথে লয়ে

ঐ মেঘে লেখা দেখো শারদীয়ার গান
এই অতিমারিতে হয়না উৎসব হয়না কলতান
তবু হেঁটে যাই মোরা স্বপ্নের কল্পনায়
নিঃস্বতা হেরে যাবে আমাদের এই শুভ উদ্দীপনায়

সবুজ গাছের মাথায় উলঙ্গ বাতাস ছোটে
নিজ শৈশব আপন অভ্যাস নিবে পরবাস প্রকৃতি হতে
মেঘেমেঘে দুর্গা দেখা;আসলে দুর্গা রইলো একা
আমার মূর্তি ভুবন মাঝে;মেঘের নিচে দুর্গা আঁকা

পূর্ণ গমন মেঘের চরণ;আজকে আমার হৃদয় হরণ
মেঘের বালিশ এই মেঘালয়ে;অর্থবহুল আবহ যাপন
হঠাৎ বারিষ নিম্নগামী জলধারায় ভিজছে ভূমি
তৃণ গুলো ভিজছে কেন;ফুলের সহিত নিয়ে আমি

আস্তরণের স্বল্প বাণী গুপ্ত মনে রইবে জানি
নিদ্র চিত্তে প্রাণের পিত্তে দীর্ঘ যাপন আপন মানি
এই শরতের রুপোলি জলে সমুদ্রের জল নীল জোছনায়
অপার মুগ্ধ জীবন শুদ্ধ স্বর্গযাপন সিক্ততায়।

নীল পাখিটার নীল জামাতে সূর্যি মামার অভিমান
কোমল বিকেল হাসছে অঢেল সান্ধ্যকালীন মুক্ত স্নান
ম্লান তটে ঐ আলোর মালা বইছে সেথা সুরের ছটা
তোমার আমিতে আমির মিলন;মনের মিলন হয় এমনই ঘটা।

মেঘের খেলায় মাতব সবে
লিখবো সবে আকাশের গান
স্বরলিপির সেই সুরেতে ভুলবো আজই সব অভিমান,
সকল ব্যাথা আকাশ জানে;আকাশ বোঝে মর্ম সকল
বিশ্ব ভরে আকাশের তরে শক্ত মানব হয়গো তরল

আবেগ পুষে থাকবো বেঁচে;পুষব এরূপ দেহের প্রাণ
মন ভাবনা ভুল যাতনা পাবেনা এই অন্তরের স্থান
গহীন জলের গহীন মনে তালাশ হয় তাহার সনে
সেই পাগলের খোঁজেই আজ মুক্ত বিশ্ব গগন তলে।

রবির দেশে রামমধনুর বেশে;উড়ছে যে মেঘ দেশে দেশে
লিখছি চিঠি পুরোনো কথায় সেই বার্তায় বন্ধুর দেশে
বন্ধু তুমি এই শরতে ঠিকানা জেনো এই শর্তে
ভাবনা মেখে আমায় দেখে স্বপ্ন লিখো সেই মুহূর্তে

বারো মাসের ঋতুর মাঝে শরতের খোঁজে আসি কেবল
এই মিলনের বিরহ দেখেও তাহার সাথেই আমার শিকল
দীর্ঘ কালের দীর্ঘ মায়ায় শরৎ আজও ডাকছে আমায়
আমার মাঝেও সকল প্রহর এখনো আমি খুঁজছি তোমায়

এখনো পাগল বলছে লোকে তোমার শোকে
সর্বহারার দলেই আমার হয়েছে আজি আত্মজ্ঞাপন
সেই সুবাদেই এই শরতে দংশে এমন এই বিবেকে
শরৎ সাক্ষ লিপ্ত দীপ্ত রইলো সুপ্ত
সংশোধনের ভুল মার্জনায়
বিশ্লেষণের খাতায় আমি বড় সংক্ষিপ্ত।

অবিচল চলমানের বিচক্ষনে নির্দ্বিধায় লিখে ফেলা কাব্যকথা
অমার্জিত ত্রুটির মালায় উঁকি দেয় অলক্ষের ব্যাথা
পুজোর ছুটিতে হবে মন বিনিময় পুনরায়
ভুলগুলো ভুলে যাবো লিখে দিলাম শরতের এই ঠিকানায়

ওগো রবি ঠাকুর তোমার চরণে সপি মোর ঠিঠিখানি
প্রেমিক হয় ক্ষুদ্র,প্রেমিক হয় দরিদ্র,
তোমারই হস্তে নির্মিত এই তরীখানি
ডুববে তাহার অন্ধ তরী;নিভবে দেখো আস্ফালনের ব্যার্থ ধ্বনি
ওগো রবিঠাকুর মর্তে এসে এই শরতে হাতটি মোর ধরবে জানি

এই আকুতি সর্বকালীন যত্নে আমি রাখছি মলিন
শীর্ষে আমার চিত্ত বিনাশ স্মৃতিতে প্রলেপ দিই প্রতিদিন
সকল কথার নকশিকাঁথায় মিশ্র হাওয়ার দীর্ঘশ্বাস
পুনরায় ফিরি আমিতে আমি;আমি তেমনই আছি এই বারোমাস

অসমাপ্ততার গহীন পাহাড়ে দুর্লভ প্রাপ্তি আমি খুঁজি যাঁহারে
অভ্যন্তরীন মনোমালিন্যতায় বাধ্য করমর্দন
এই সত্য বলিইবা কাহারে
চির স্মরণের শেষে তবুও স্মরণ হয় নিষ্পন্নতার সাক্ষাৎকারে
পরিমার্জনার সুফল প্রত্যাশা আসুক ক্রমান্বয়ে এই জীবনের 'পরে

হতে চেয়েছি চৈতন্য হয়ে ক্ষুদ্র;হয়ে নগন্য
এহেতু অকালের ধূমকেতু
উৎসর্গের মাপকাঠিকে নিষ্ক্রিয়তা করেছে প্রামাণ্য
অপরিহার্য মাধুর্যের ব্যক্ততা হলো উপহাস
শুভকামনারা আজ স্বর্গীয় উপাধিতে করে উপবাস

অস্পৃশ্য দেবতারা ঘুরে যায়;পৃথিবী করে ভ্রমণ মননের চিত্তে
বিনিদ্র উচ্ছাসের নিমজ্জিত সুরের মূর্ছনায়
এ দেহে কাল হতে কালান্তে
বলে দাও পৃথিবী বলে দাও কুসুম নিগম
অধ্যায়ের অর্ধতলে এই মনোবল
অসাহসের প্রতিক্রিয়ায় দেখে পথ দুর্গম

খেলাঘর হতে খেলা ভেঙে গেছে কবে
এই বুঝি ভগ্ন হৃদয় ডুবছে তবে
মরা স্রোতের সাথে ভাসমান খড়কুটো
এরকম আর নেই দুটো ভবে
অনন্তকাল তবে তলিয়েই বেঁচে রবে সাধনার বিজয় মুকুট
তবু অঘটন ঘটে জীবনের সহজ নীড়ে রয়না প্রকাশ্যে অটুট।

আগমনের তুমুল বাজি গড়তে রাজি দুর্বিনার
পূর্বাচলের নামতা লেখা অবাধ্য সেই প্রাচীনতার
পুরাণ কথায় গহীন ব্যাথায় লিখছি তোমার নামটি দেখো
মাখা ভাতেও মেঘের কামড় শরৎ মেঘেও তাকে শেখো। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ