শারদ সংখ্যা ২০২০ || কবিতা || সুমিতা দাস




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


হায় রে মা,সৃষ্টি আজও প্রতারিত 
 সুমিতা দাস 

জীবনের আনন্দ নন্দনে হলো  দেবী পক্ষের সূচনা! 
শরতের আকাশ গাঙে ডানা
মেলেছে মেঘের পালটি ,
শিউলি বনের গন্ধ মেখে, শিশির ভেজা ঘাসের পরে, 
আলতা রাঙা চরণ ফেলে, 
মা যে আসছে! 
যেন এক অনন্য অনুভূতি,
শারদ প্রাতে তাই ধরণী সেজে উঠেছে পূণ্য মহোৎসবে, 
ঐ মা যে পূজিতা ,
সবার ভক্তির আসনে।
কিন্ত,
অসংখ্য দূর্গারা যখন আমাদের চারপাশে গুমরে কাঁদে ,
তাদের খবর আমরা রাখি কৈ?
ঝলমল আলোতে যখন আলোকিত শহর, 
আমার চারপাশের দূর্গারা তখন অসহায়তার হাত ধরে 
রাস্তায় রাস্তায়, 
কখনো বা বিকছে সস্তায়!

রাত জাগা কুমোর পাড়া যখন মাটির প্রতিমাকে সুসজ্জিত করে বস্র অলংকারে ,
আমাদের চারপাশের দূর্গাকে বিবস্র করে ছিঁড়ে খায় দুষ্টু শক্তিরা। 
ওরা বোঝেনা নারী যে মায়েরই অংশ ।

সাজানো মাকে যখন সিংহাসনে বসাই আনন্দে,
আমাদের চারপাশের দূর্গারা তখন এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায় খিদের জ্বালায়, 
কখনো বা পুরুষের বিষাক্ত নিঃশ্বাসে অপবিত্র করে নিজেকে। 
কোথায়, পারি না তো? ওদের পবিত্রতাকে রক্ষা করতে, 
ওদের খিদের জ্বালা মেটাতে।

যে দূর্গা দশভুজা রুপে অসুর নিধন করেছে,
আমাদের চারপাশের দূর্গারা রোজ ক্ষত বিক্ষত হয় সেই নখের আঁচরে, 
পারি কোথায়? ওদের ক্ষতের দাগ মেটাতে। 

উমা যখন তার সন্তানদের নিয়ে নেমে আসে ধরণীর বুকে, সবার উপরে রাখে আশীর্বাদের হাত।
তবুও দেখেছি, 
সন্তানের লাঞ্ছনায় বৃদ্ধাশ্রমের দ্বারে মায়ের আশ্রয়, 
জীবন কাটে অবহেলায়। 
কতটা পারিঐ লাঞ্ছিত মুখে হাসি ফোটাতে। 
যে নারীর গর্ভে এই জগৎ এই সৃষ্টি, 
তাকেই যে করছি বার বার প্রতারিত!!! 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ