শারদ সংখ্যা ২০২০ || কবিতা || রাকেশ শর্মা




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

নৈবেদ্য
রাকেশ শর্মা

পূজার বাদ্যিতে আত্মগত সংলাপের অকালবোধন,
পরনিবাস নাকি স্বকীয় দ্বন্দ্বের স্ফুলিঙ্গে উৎসবমুখরতা সম্পৃক্ত;
বিসদৃশ চিন্তনের ডুব প্রদীপের বহ্নি শিখায়-
দুটো উন্মুক্ত কাদামাখা হাতের প্রবেশ..

"ও বাবু! আজ দুপুরের ভাত খাওয়াবি?"

চোখের মধ্যে মন্থর ক্ষীয়মান সৌরজগতের পট,
হাতের কালো ঘাটা পরা দাগে ধরিত্রীর স্থি গরিমা প্রস্ফুট;
ছেঁড়া ফ্রকের জোড়া তালি দেওয়া জামাটাই-
পুরানো এটোঁর ধবল ছায়া..

"ও বাবু কথা কশ না কেন?
খাওয়াবি হামারে ভাত?
রেস্টুরেন্টগুলো ছিল তকন থালা কুড়িয়ে পেডটা ভরতো রে..
একুন দেকি রাস্তায় মানুষ নাই,
দোকান বন্ধ! খিদে পায় খুব রে..
তুই ভদ্রলোক আছিস মুন বলছে-
কিরে একটু ভাত খাওয়াবি?"

আবেগের শঠতায় নিশ্চুপ দু'দণ্ড,
হঠাৎ ব্যাগ থেকে টিফিনের কৌটের সিমুই বের করে-
 
"খাবেন? খুব মিষ্টি! মা বানিয়ে দিয়েছে!"

"না! না! বাবু, উসব আমি খাবো না রে!
একটু ডাল, লঙ্কা, লবণ, আর ভাত দিবি না?"

"হ্যাঁ দেবো আসুন সাথে.."

শরতের তুলো ভেজা মেঘে বাতাসে পূজার গন্ধ,
মৃন্ময়ী মায়ের চিন্ময়ী রূপে আগমনী;
বৃষ্টিতে নবপত্রিকা স্নানের দেবীস্নান সম্পন্ন..

'ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা,
যা দেবী সর্বভূতেষু ক্ষুধারুপেণ সংস্থিতা..'

হোটেলে আলু মাখা, ডাল, লেবু, শাক, ভাত,
নৈবেদ্য সেজেছে অন্য পূজার উপাচার;
আধেয় ঐশ্বরিক অনুক্ত পূজা,
চিরায়ত প্রথার সদয় নব উত্তরসূরী আয়োজন।

মৃন্ময়ী বা চিন্ময়ী প্রকাশ প্রভেদ,
সাকার, নিরাকারের উন্মীলন উত্থিত আবেগে;
ঘন্টা ঢাকের শব্দ, আলোর রোশনাই, উত্তমর্ণ আয়োজন ব্যতি-
এক শিষ্টাচারভূত পরিপাটি নিবেদন..

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ