পোস্ট বার দেখা হয়েছে
প্রশ্ন
ড. রাখীবৃতা বিশ্বাস
বছর ঘুরে শরৎ আসে,
শিউলি ফুলের গন্ধে।
আলোর মায়ায় শহর হাসে,
উৎসবেরই ছন্দে।
আকাশ জুড়ে মেঘের কায়া,
পেঁজা তুলোর মতো...
মেঘ ভাঙা ঐ রোদের ছায়ায়,
জুড়ায় জ্বালা যত।
শরৎ মানেই ঘরে ফেরা,
সাজো সাজো রব!
ফিরবে উমা বাপের ভিটায়,
আনন্দে মগন।
ঠাকুরদালান, পুজো মন্ডপ,
আলোর রোশনাই।
মৃন্ময়ীর আজ অকাল বোধন,
বাজলো যে সানাই ...
জনস্রোতে শহর ভাসে,
রাতের আঙিনায়।
আগমনীর ভক্তিরসে,
প্লাবিত হৃদয়।
মাতৃ পুজার অভিনয়ে,
মত্ত এই সমাজ!
ষষ্ঠী থেকে সন্ধিপুজায়,
মগ্ন সকাল সাঁঝ ...
সবাই এখন মানুষ শুধু,
মায়েরই সন্তান ...
যেন পুরুষ নারীর নেই কোনো ভেদ,
এক আত্মা এক প্রাণ!
অথচ সারা বছর অনেক প্রভেদ,
নিয়ম নীতি স্পষ্ট।
আপোষ যদি না করে,
সেই উমাই যে হয় 'নষ্ট' !
মহামায়ার পায়ের তলায়,
একটা মহিষাসুর।
আর এই সমাজ জুড়ে ঘুরে বেড়ায়,
মুখোশ পড়া কত অসুর!
জনপদে ভরে গেছে,
শ্বাপদ যত ভন্ড ...
শারদীয়া আজ অন্য রকম,
বড্ড আষ্টে গন্ধ !
ভ্রষ্টাচারী এই সমাজে,
নারী আজও লুন্ঠিত।
সংসারের জোয়াল টেনেও,
দশভুজাই কলঙ্কিত।
যে সমাজ প্রণত হয়,
তোমার সামনে, করজোরে।
সেই হাতেতেই এই সমাজে,
উমার দেহ পোড়ে, অকাল মৃত্যু ঘোরে!
কত উমা হারিয়ে যায়,
কালের গহ্বরে।
লাশকাটা ঘর, সেই গল্প বলে,
শিশির ভেজা ভোরে ...
এক শহরেই রাতের মায়ায়,
বিপরীত চালচিত্র।
মৃন্ময়ী মা পূজিত হন,
আর চিন্ময়ী অপবিত্র!
মাটির উমার সমাদরে,
জগৎ মাতে রঙ্গে।
রক্ত মাংসের উমার কেবল,
জ্বালাই জোটে সঙ্গে।
লক্ষ টাকায় দেবী উমা,
সমাদৃত হয়।
আর মানুষ উমার শরীর,
বিকোয় তিনশটি টাকায় ...!
আটচালাতে মাতৃরূপে,
দেবী হন পুজিতা ...
তবু ছাড় পায়না ছোট্ট উমা,
সে ও হয় ধর্ষিতা!
নারী আজও শুধুই শরীর,
এখনো বীরের ভোগ্যা।
স্বয়ংসিদ্ধা হওয়ার পরেও,
পাত্রী সে তিতিক্ষার !
নারী না কি ব্যভিচারী,
এই সমাজের বোঝা!
মাঝে মাঝে তাই মনে হয়,
মিথ্যে মা তোর পুজা!
বড় বৃথা এই সমাজে,
নারীর স্থান খোঁজা ...
ছায়া, কায়ার তফাৎ বলেই,
জোটে আঘাত, ক্ষত, সাজা।
সব উমাতেই তোমার অংশ,
সত্যি যদি রবে ...
এমন ধারা বৈপরীত্য
বল্ মা কেন তবে?
2 মন্তব্যসমূহ
Asadharan👌👌👏👏
উত্তরমুছুনবাস্তবের গূঢ় তত্ত্ব। অসাধারণ। ❤
উত্তরমুছুন