শারদ সংখ্যা ২০২০ || গল্প || বহ্নিশিখা




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


"টেনশন"
বহ্নিশিখা

এই!! তুমি বিয়ে করছো না কেনো?
হঠাৎ কোত্থেকে এসে উগ্রচন্ডীর মতো বললো আবির। 
তুমি জানো তোমার জন্য কত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে? কাউকে দেখে একটা করে ফেলতে পারো না?

ভাইপো আবিরের মুখে এসব শুনে হতবাক রিমি! মাথা যেন কেটে পড়ছে মাটিতে।  কি বলবে,বুঝতে না পেরে  বললো,

 --কি বলছো এসব? কোথা থেকে কাকে বিয়ে করে ফেলবো?

- জানিনা। তোমার জন্য সমস্যাগুলো আর সহ্য করতে পারছি না। তোমার জন্য বাবা টেনশন করে,অসুস্থ হয়।


কিছু দিন হলো রিমির দাদা আলাদা থাকে।
রিমি থাকে বাবা মা'র সাথে। একমাত্র রিমিই বিয়ের বাকি। আট ভাইবোনের মধ্যে। 
কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না,সেটা কি রিমির দোষ? দলা পাকানো কষ্ট গিলে রিমি রেগে বললো,

-তোমার বাবা টেনশন করে কেনো? আমিতো তোমাদের কাছে থাকি না। তোমার বাবাকে বলে দিয়ো আমার জন্য টেনশন করার কোন প্রয়োজন নেই। বিয়ে হলে হবে না হলে নাই। তোমাদের এখানে যাবো না। আমিই ঠিক করে নেবো। কি করব।

গট গট করে চলে গেলো আবির। ড্রইং রুমের জানলা দিয়ে দেখা যায় গলির মাথা অব্দি। ওর হাঁটা পথে চেয়ে থ মেরে বসে রইলো রিমি। চোখের  কোণ ঝাপ্সা হয়ে আসছে বার বার। 
ঠিক সময়ে বিয়ে হলে ওর মতোই একটা ছেলে থাকতো। আবার সে ভাবে, তাহলে হয়তো  ওর মতোই আচরণ করতো? আজ যেমন আবির করলো  তার পিশির সাথে? 

মা এসে জিজ্ঞেস করলো,কিরে কে এসেছিলো? কার সাথে কথা বললি?

মা হাঁটলে পায়ে শব্দ হয় না তাই চমকে গেলো  রিমি। চোখের জল লুকোতে বাতাসে এলোমেলো  পেপারের পৃষ্টাগুলো ঠিক করতে করতে বললো আবির এসেছিল। মা বলে,,

-চলে গেলো? আমাকে ডাকলি না? একটু দেখতাম। কেন এসেছিলো? 

-এমনিই। এদিক দিয়ে যাচ্ছিলো তাই এসেছে।
-কিছু খাইয়ে দিলি না? চলে গেলো।
-বলেছিলাম তো। সে বললো কোথায় যেনো যাবে,তাই তাড়াতাড়ি চলে গেলো।

মিথ্যে বলতে বাধ্য হলো রিমি। নয়তো মা কষ্ট পাবে।  এনিয়ে আরো কথা হবে। আরো কষ্ট বাড়বে। মা বলতে থাকে,,,

ছেলেটা এলো,ঠাকুমাকে না দেখেই চলে গেলো!! বলতে বলতে ঠাকুর ঘরে পা বাড়ায়। বড় নাতি। আহা,প্রিয় নাতি। কোলে কোলে কোল ছেড়েছে। বড় হয়েছে। 

হয়তো অনেক বেশিই বড় হয়ে গেছে!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ