শারদ সংখ্যা ২০২০ || কবিতা || হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


তোমার ঢাকনাহীন কৌটোর গল্পরা
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

তোমাকে বুঝেছি
হয়তো বা তোমাকে বুঝিনি
কিন্তু তোমাকে বোঝার মধ্যে দিয়ে
আমি নিজেকে কী বোঝাব ?
তোমাকে না বোঝার মধ্যে দিয়েই বা
আমি নিজেকে কী বোঝাব ?
যেখানেই দেখা হোক
আমি ঠিক তোমাকে চিনতে পারবো
তোমাকে ঠিক কতটা চিনতে পারছি
অথবা আদৌ তোমাকে চিনতে পারছি কি না
তা নিয়ে কোনো মাথা ঘামাব না
তুমি তো আমার মাথা কোনোদিন ঘামাও নি
তুমি সেই সারিতেই কোনোদিন পরতে না
তোমার মায়ের খবর জানাব
তোমাদের ছাই হয়ে যাওয়া বাড়ির
অনেকটা ছাই আমি কৌটোয় ভরে রেখেছি
তুমি চাইলে সেই কৌটোর গল্পও
আমি তোমাকে শোনাতে পারি
শুনেছি তোমার আলমারিতে অনেক কৌটো
একটারও ঢাকনা নেই 
অনেক গল্প সেই কৌটোয় রাখা
যদিও একটা গল্পও তোমার নয়
তোমার কোনো গল্পই নেই
আমি তো জানি তুমি এক একটা গল্পকে 
নিজের হাতে খুন করেছ
গল্প রাখতে হয়
গল্প নিজের হাতে ভাত জল দিয়ে
একটু একটু করে বাঁচিয়ে রাখতে হয়
গল্প তো ধুলোয় মাখা পথ
শীতের সকাল খিড়কি পুকুরের জলে
ভেসে থাকা সর
সুনীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা
ডিসেম্বরের বিকেলে উড়তে থাকা একলা ঘুড়ি
গল্প তো জন্মভূমি
মাটির দুয়ারে বসে মায়ের ডাক
সন্ধ্যের শাঁখ, কাঁসর ঘন্টা
সেই কোন ছেলেবয়সে
একবার সিঁড়ি থেকে পড়ে যাই
গল্পরা আমায় বাঁচিয়েছিল
হাত ধরে তুলে 
মাটিতে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল
অন্যের গল্প তোমার কৌটোয় 
তোমার আলমারিতে তাদের গল্পের সারি
তুমি কোথায় থাকবে?
তোমার জন্য কোন আকাশ?
তুমি কোন ধুলোর পথে হেঁটে যাবে?
আমি তোমাকে মায়ের গল্প বলি
তোমার ভাই একরাতে আস্ত একটা গল্প হয়ে গেছে
তুমি গল্পগুলো ছুঁতে পারো না
গল্পগুলো তোমার সামনে দিয়ে উড়ে যায়
একটা গল্প চড়ুই
একটা গল্প ভোরের আকাশের শুকতারা
একটা গল্প হঠাৎই খোয়াইয়ের দিকে বেঁকে গিয়ে
বাউল হয়ে গেল
নিথর কৌটোগুলোর ভেতর থেকে 
তুমি মুখ বাড়িয়ে গল্প দেখো ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ


  1. অসামান্য প্রকাশ

    বলিষ্ঠ কলম

    শুভ শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা

    উত্তরমুছুন