পোস্ট বার দেখা হয়েছে
রূপান্তরিত
অজয় কুমার দত্ত
অবহেলা মেখে একটুকরো প্রস্তর
পড়ে ছিল পথেরই একপাশে
আঘাত পেত পথিক চলার সময়
তাতে পাষাণের কিই বা যায় আসে!
সে ছিল এক দরিদ্র ভাস্কর
পাথর কেটে বানায় বিভিন্ন মূর্তি
জাতি বর্ণে বড়োই অপাঙক্তেয়
অর্থ ভাবন কেড়ে নিয়েছে সুপ্তি।
পাথরটি ছিল মাঝারি আকারের
কৃষ্ণকালো রঙটি ধূলোয় ঢাকা
বাড়ি নিয়ে গিয়ে জল ঢেলে ধোয়াতেই
অসিতবর্ণ নিমেষে দিল দেখা।
তুলে নেয় হাতে বাটালি হাতুড়ি
ছেনির আঘাতে শিল্প অঙ্ক মেনে
পাথরের গায়ে ফুটে ওঠে ভাস্কর্য
তৃপ্তির হাসি শিল্পী অবচেতনে।
তিলে তিলে তার একাগ্র প্রচেষ্টায়
অটল পাথর রূপ নিল দেববিগ্রহে
এক পুরোহিত মুগ্ধ হয়ে দেখলো
কিনে নিয়ে তাকে প্রতিষ্ঠা করে গৃহে।
পূজা অর্চনে ফুল চন্দন সিঁদুরে
গণেশ মূর্তি সজ্জিত দেবালয়
একদিন সেই শিল্পী পূজা দিতে
গৃহমন্দিরে ঢুকলো ত্রস্ত পায়।
দেখেই তাকে পুরোহিত বলে উঠলো-
বাইরে দাঁড়াও ঢুকবে না এইখানে!
দেবদেউলের পূত পবিত্র পরিবেশ
অশুচি হবে তোমার পদার্পণে।
যার হাতে এই বিগ্রহেরই সৃষ্টি
পূজা নিবেদনে নেই তার অধিকার
ম্লানমুখে সেই ভাস্কর ফিরে যায়
স্বীয় সৃষ্টির দেখা মিললো না তার।
0 মন্তব্যসমূহ