পোস্ট বার দেখা হয়েছে
উত্তর জন্মে
মধুপর্ণা বসু
আমাদের কথা ছিল প্রত্যাশা ফেলে আসা
তারপর গভীর খনিজ ভালোবাসা তুলে আনবো ডুবুরির ছদ্মবেশে, শেষ নিঃশব্দ রাতের দেশে।
নাম পরিচয় জানবেনা কেউ, না ঘরের খোঁজ
যাযাবরী তুফান ঝড়ের মতো হঠাৎই হবো নিখোঁজ।
দিনের ক্ষয়রোগে ভুলে যাওয়া ছাপোষা অভ্যাস, ভুলে যায় বছর,
আমাদের ভুলে যাবে খবরের কাগজ, ধুলো পড়ে যাওয়া স্মৃতি নিকোবেনা কেউ,
তারপর চলে যাবে কতশত প্রাণহীন
তুষার যুগের ঢেউ।
নিস্তরঙ্গ অচল রাতে বহু আলোকবর্ষ পরে আমাদের ঘুমন্ত কুমারীর মতো ডেকে দেয় সোনার কাঠি ছুঁয়ে কোন এক রাজার পুত্র,
সে এক নতুন আকাশে মেঘেরা তখন
অবাক হয়ে থমকে দাঁড়াবে,
কয়েকটি ঘুমের যুগের পর দেখা হবে আবার
একই সন্ধিতে হাত ধরে এগিয়ে চলার
নতুন এক আরও উঁচু ভিন্নতর গ্রহে
জন্ম নেবার মুহূর্তে সুখী আরম্ভের আবহে।
====
অন্তর্দহন করো
বানী পাল
বিশ তো কেটে গেছে ,
হয়তো ধীরে ধীরে কেটে যাবে বিষক্রিয়াও
চেনা পৃথিবীকে আবার সাজাও নিজের মত করে
গরলমুক্ত সমাজে অমৃতসম হোক আগামীর পথ।
সবুজ হোক মস্তিষ্কের প্রতিটি স্নায়ুকোষ
এবার হিংস্র আত্মার অন্তর্দহন হোক...
একটিবার ভেবে দেখো তো
বিষের প্রতিক্রিয়া কি মিটবে এতো সহজেই?
নিভবে কি হিংসা,ক্রোধ ,বদলার আগুন?
মুছে যাবে কি লোভ লালসা ও যৌনতার নীল দাগ?
এবার নিয়ন্ত্রণ করতে শেখো ষড়-রিপুর চাহিদা,
সততার কালিতে লিখে দাও নবপ্রজন্মের ভবিতব্য।
কালবেলা কেটেছে স্বর্ণালী সূর্যের আবির্ভাবে
তবে কথা দাও ,আজ থেকে আর রক্ত ঝরবে না
নারী ধর্ষিতা হবে না- পুরুষ লাচার হবে না ,
পেটের দায়ে কেউ পতিতা হবে না ,হবে না গর্ভহত্যা।
শুরু থেকে আবার সৃষ্টি হোক রাজনীতিহীন পৃথিবীর
প্রতিটি অন্তরের অন্তর্দহন হোক কিংশুক রোদ্দুরে ।
আধুনিকতার ভিড়
শিখা পাল
যেখানে ওই নদীর বুকে, আকাশ এসে মেশে;
ঠিক সেখানে ছোট্ট একটা গ্রাম ।
সকাল বেলায় হাসনুহানায় শিশির মেশা ঘ্রাণ
গাঁয়ের বধুর কলস কাঁখে উজাড় করা প্রাণ।
গোধূলি যখন আকাশ কোণে জাফরানি রঙ আঁকে,
পল্লী বধুর সোনার অঙ্গে উছলে ওঠে ঢেউ,
দিনের শেষে ক্লান্ত কিষাণ যখন ফেরে ঘরে --
বধুর বুকে তুমুল বৃষ্টি, জানলোনা তো কেউ।
কল্কা পেড়ে শাড়ি খানি অঙ্গ জুড়ে হাসে --
আলতো পায়ে নূপুর ধ্বনি ছড়ায় যখন
অঘ্রাণের ওই শিশির ভেজা ঘাসে,
দোয়েলের ওই মিষ্টি সুর আজও কানে ভাসে।
পদ্মদিঘির অতল জলে, ভ্রমর কালো চুলে
আর ওঠেনা ঢেউ, সেথা বিষণ্ণতায় ভরা ;
শতাব্দী আজ প্রহর গোনে শুধুই দ্রোহের ছলে।
পুঞ্জিভূত মৃত্যুকণায় আকাশ আধো ঢাকা,
সেইখানে এক কিষাণ বধুর চন্দ্রমালা আঁকা।
বাজেনা আর হাতের কাঁকন রিনিঝিনি সুরে,
পর্ণকুটির মুছে গেছে ইমারতের ভিড়ে।
আর সেখানে যায় না দেখা বধূর মধুর নীড়,
সেখানে আজ সারি সারি অট্টালিকার ভিড়।।
===
প্রত্যয়ের একলা আকাশ
অমিয় মল্লিক
সে সময় রক্তের মধ্যে মিশে যেতো প্রগাঢ় একাকীত্ব!
ক্রমে নিচে নেমে পাখিরা হেঁটে যেতো বন্ধ ডানায়,
শরবিদ্ধ নগ্নতার যন্ত্রণা সয়ে সয়ে সংশয়ী স্বপ্নরা--
অনাবিল হেসে প্রার্থনা করতো ঈশ্বরের খোলা জানলায়।
###
ছায়ার মতো অভিমানী নদীতে
বয়ে যেতো শব্দের প্রতিধ্বনি,
দিশাহারা দিগন্তের নীল বিষন্নতায় নতজানু বাঁশি,
এখনো প্রতিক্ষামগ্ন এলোচুলের অন্ধকারে
নিতান্তই জন্মস্রোতের অশ্রদ্ধেয় সম্মানে।
#####
মুহূর্তরা ভাঙতে ভাঙতে
বসন্তের দুর্দিনে,
ক্ষয়াটে চাঁদ উপহার দেবে বলে---
সটান হাত বাড়িয়ে দিলো প্রাচীন পাঁচিলের মতো!
######
এভাবেই একটা গোটা জন্ম ও ভবিষ্যৎ
অস্তিত্বের অমোঘ এলোমেলো পথে প্রান্তরে
রেখে গেলো নৈঃশব্দের গভীর বিষাদ....
নক্ষত্রের করুণ আলোক দহনে
অনন্ত চলাচল তবু প্রত্যয়ের একলা আকাশ
===
চলে যেও
দেবজাত
নভনীল নক্ষত্রের চেয়েও
আরো দূরে চলে যাওয়া যায়!
শ্বেতবুদ্ধের পথ চেয়ে.....
কালের ওই দূ্র পাড়াগাঁয়!
সোনাচিড়িয়ার সরণিতে
চাঁদ নামে গতানুগতিক;
হৃদয়বহ্নি যদি জ্বলে....
স্বর্গেও থেমোনা পথিক!
রাত্রি নামছে দেখো ধীরে
এখনই তো যাবার সময়;
শুনশান সব চরাচরে....
আর,মেঘমলিনার কথা নয়!
0 মন্তব্যসমূহ