পোস্ট বার দেখা হয়েছে
ফেরা
রাজর্ষি দত্ত
সেই কোন মহাপ্লাবনের দিনে
থৈথৈ জল চারদিকে, ভেসে গেছে সব চরাচর
বাড়ি গুলো জেগে আছে পাখীর বিবর -------
সেই স্রোতে কাগজের নাও ভাসিয়েছি ,
সে আমার শৈশব --- স্বপ্ন নিয়ে চলে গেলো
সে আর কখনো ফেরেনি -------------
আমার কৈশোর দিয়েছি এক প্রজাপতিকে
দুদিন রূপ- রস ঘোর লাগা নিয়ে ,
তার ডানায় দিয়েছি আলতো চাপ ,
তার ডানাটাই ঝরে গেল , সে আর কখনো
উড়তে পারেনি, আমি ক্রমে ভেসে চলি ,
আমার কৈশোর তাকে দিয়ে প্রব্রজ্যা নিয়েছি ,
সেখানে আমি আর কখনো ফিরিনি !
সাগরিকা আমার হাতে হাত রেখেছিল
বলেছিল এক সাথে সবুজ অন্ধকারে
আকাশের অচেনা এক নক্ষত্র চেনাবে,
তার চোখেই সেই তারা আমি প্রত্যক্ষ করি
আমি তাকে বোঝাতে পারিনি ,
অভিমানীনি এখন তারাদের দলে,
সে আমার যৌবন নিয়ে গেল চলে ।
তারপর দাদু ঠাকুমাও চলে গেল
না ফেরার দেশে , আমি ভাবি --- আসাটা কি
আমাদের হাতে ছিল কি কখনো?
যাওটা কি আমাদের অধিকার কখনো হবে না!
জানি আমাদের চলে যেতে হবে -----
তবু বেঁচে থাকি স্কন্ধে বহন করে
নিজের মৃতদেহ , মৃতের সাথে সহবাস,
তবু পাষাণের অহল্যা প্রতিক্ষা ,
তুমি যদি এসে একবার ছুঁয়ে দাও !
আমি অমর হয়ে যাবো -----------
তোমার মায়াবী চোখে ও কীসের উদ্ভাস ?
====
আমার ঈশ্বরী ও আমি
সুব্রত হালদার
একটু ছায়া চেয়েছিলাম তোর কাছে।
তুই পেতে দিলি মায়াময় কোল।
মুছিয়ে দিলি কপালজোড়া স্বেদবিন্দু,
ওষ্ঠে ,চিবুকে এঁকে দিলি থরে-বিথরে তোর সোহাগী ওষ্ঠের উচ্ছল আদরের আলপনা।
চারপাশে ভাসিয়ে দিলি হিম-হিম নরম স্নিগ্ধতার আবেশ।
অনেক যত্নে মাথার উপর মেলে দিলি রূপসী আঁচলের রঙ্গিন সামিয়ানা।
সে ছায়া ক্রমশ মহীরুহ হয়ে ছুঁয়ে দিল আমার একলা আকাশ,
ছুঁয়ে দিল আমার উদাসী দিগন্ত,
ছুঁয়ে দিল আমার খেয়ালী মনের আনাচ-কানাচ।
আজ চেতনে - অবচেতনে প্রতিমুহুর্তে জড়িয়ে থাকিস তুই।
তোর স্পর্শটুকু লেগে থাকে যেখানেই আমি ছুঁই।
আজ তোর নামে পথচলি,
তোর নামে গেয়ে উঠি বৈতালিক গান,
তোর নামে করি মাধুকরি।
অন্তর জুড়ে জেগে থাকে তোর স্বর্গীয় আলো...আমার ঈশ্বরী।।
অন্যপৃথিবী
চন্দ্রনাথ অধিকারী
এবার গান্ডীব তুলে নাও হাতে সুতনিকা
বিদ্ধ করো সেইখানে যেখানে যে কোন রক্তক্ষরণ মৃয়মান!
বুকের বাম পাশের কালো তিল ; তোমার ভীষণ প্রিয়--
সব শুষে নেবে
আমি বিচ্ছেদ চাই, তর্জনী তে অঙ্গুরী পড়াব বলে --
তীরের ডগায় রেখে দেবো বাসুকী'র বিষ!
পৃথিবী টাল খেলে খাবে- ক্ষণিক সময় ; হয়ত
সব ঢেউ সঙ্গম ছুঁতে পারে না,
পাথর হয় বেলাভূমিতে ; ক্ষত নিরাময়ে ঘঁষে.... ঘঁষে.. ফেনা!
আবার জন্ম নেবো অন্যপৃথিবী তে ; যেখানে শিশু একশালিখ
শিশুই 'অপায়া' নয়।
উদ্দালক আমি, নিজ তর্জনী কেটেছি কবেই-
পিঠে বাঁধা তূণ পরাজয়ের গ্লানিতে ম্লান!
ধূসর গোধূলি চুরি করেছে সব তীর!
হেমন্তের নিস্তেজ রোদে আমায় সোহাগ করবে বলে- !
====
ভালোবাসার দিন
ঝুমা মল্লিক
ধরো আজ।
হু আজ,তোমায় গোলাপ দিলাম না।
যদি তোমার জন্য একমুঠো পলাশ রাখি।
তোমার দুঃখগুলো পলাশের রঙ দিয়ে মুছে দিতে চাই।
তুমি কি বুঝবে ?তুমি কি খুজবে কারণ?
ধরো আজ।
হু আজ ,তোমার সাথে আমার তুমুল ঝগড়া।
তুমি কি করবে?রাগ করে চলে যাবে?
নাকি সময়ে আসবে ফিরে ,বলবে শুধু তোমায় ভালোবাসি।
ধরো আজ,
হু আজ,তুমি নতুন গল্প বাঁধবে,নতুন কোন গল্প।
আমি যদি সবকিছু উল্টেপাল্টে দি।
তুমি কি ভালোবেসে আমায় নতুন নামে ডাকবে?
ধরো আজ,
তোমার বুকের কোলে আমি আমার নাম লিখেছি।
তুমি কি মুছে দেবে?নাকি রোজ যত্নে সাজাবে সেই নাম।
ধরো আজ,
তোমার প্রয়োজনের কিছুই আমি সাজাতে পারলাম না।
তবুও কি আমি তোমার প্রিয়জন?তোমার হৃদয় জুড়ে আমি আছি?
ধরো আজ,
তোমায় শুধু এক রঙ দিলাম।
তবুও কি তুমি আমায় রামধনু রঙ দিতে পারো?
এক পৃথিবী ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি তুমি নাই বা দিতে পারো।
তবুও আমি ভালোবাসার কবিতা লিখতে পারি।
====
জানবে সেদিন
ঋতা মৈত্র মুখার্জী
তোমার রঙ যে আমায় ছুঁয়ে যায়
হৃদয় ক্ষতের রঙ যে তোমার গায়ে
ধুইয়ে দেব এমন সাধ্য ক ই
আমিও যে সেই বিষন্নতার ছায়ে।
কতো রঙীন প্রজাপতির ভীড়
উড়ছে ওরা এ ফুলে ঐ ফুলে
ইচ্ছে করে চ্ছুট্টে আমি যাই
বন্ধ কপাট এক টানেতে খুলে
হয়তো তুমি আমার মতই ভাবো
হয়তো তুমি অন্য কারুর হাত
হয়তো যেদিন সত্যিই সময় পাবে
হয়তো সেদিন আমার ঘরে রাত।
আকাশ চুঁইয়ে একটু আলো যদি
জোনাকিদের ভালোবাসার আলো
মনের ঘরে আঁধার ঘনায় যদি
জানবে সত্যিই বেসেছিলাম ভালো।
1 মন্তব্যসমূহ
উত্তরমুছুনপ্রতিটা লেখা অনবদ্য প্রকাশ