দর্পণ || কবিতাগুচ্ছ || সুকুমার রুজ




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

স্বপনকথা 

প্রেমে বিভোর হৃদয় নাচে তোর শরীরের আনাচ কানাচ
অন্ধ হৃদয় জানেই না তো কোনটা হিরক কোনটা যে কাচ

যথাযথ পড়লে আঘাত স্তূপীকৃত স্বপ্ন জাগে
সিন্দুকেরই বন্ধ তালা খুলতে খানিক সময় লাগে

সংকেতেও পূর্বজন্ম জন্মভুলের অমরতা
ব্যাধের ও-মুখ ঢেকে নিতে স্মিত মুখোস বুদ্ধকথা

আলো দিয়ে মেঘ পেতে চায় এমন কিছু স্বপনকথা
ছিটকে ওঠে কলঙ্কজল পরজীবী স্বর্ণলতায়।
        ***
মায়াগান

পৌষের বালিশে কত শীতলতা জমে...

নীল জলবিভাজিকা দল পাল্টায় 
বেগুনি-হলুদ স্বপ্নেরা কামগন্ধি হয়ে 
সবুজ ক্যানভাসে আমি-তুমি খেলে

ঠিক তখন মোহহীন আকাশ
ঢেলে দেয় অজস্র মায়ার মোহর

তিলফুলে মৌমাছি হাসি ছড়ায়...

বেহুলা তখন নেতিধোপানির 
ঘাট পেরিয়ে ভেসে চলে
পাপখেকো দেবতার অঙ্গনে।

তার নৃত্যকলা হয়তো খুশি করবে
প্রতারক দেবতাকে।

      ***
নির্ধারণ

মাছরাঙা উড়ে এসে বলে গেল কানে কানে
আমি নাকি নির্দয় শিকারি
আমি নাকি দয়াময়, বলে গেল গানে গানে 
পথচলা খঞ্জ ও ভিখারী

আসলেতে আমি কী যে শিকার না শিকারী যে
পারি না তো ঠিকঠাক বুঝতে
হাওয়া বাজে কথা হয়ে এ জীবন যাবে বয়ে 
ঠিকভুল ধারণাটা খুঁজতে।

পান্ডুলিপি

তারপর হোমানলে ঘৃতাহুতি
পর্যাপ্ত সাদাপায়রা নিমেষেই বদলে যায়
পাহাড়ি ঈগলে
পাল্টায় পরিসংখ্যান পাল্টায় লাশের ঠিকানা

চোখের কার্নিসে জমে ফোঁটা ফোঁটা ভয়
ঠোঁট থেকে চুঁয়ে পড়ে আক্ষেপকণা
নাভিমূলে বাসা বাঁধে ঘোর উপদ্রব
বাহুমূলে রমণগন্ধ

এভাবেই চু কিতকিত ইতিহাস
সাম্য বজায় রেখে পিছু হাঁটে
শিলাগর্ভে শস্যদানা প্রার্থনা হয়ে ফোটে
দুর্বোধ্য পান্ডুলিপিতে। 

     ***
পসরা

মহাকাল পসরা নিয়ে গৃহস্থের দ্বারে
স্তূপীকৃত দুঃখমাঝে ফল্গুধারা সুখ
নিলাম জীবন ছ’রিপু যা নেবে তা ছ’রিপু
নিরালম্ব অনন্ত হাঁক পাড়ে

থরেথরে সজ্জিত সূক্ষ্ম অনুভব
প্রেম আছে মায়া আছে আছে মানবতা
বুঝে কিংবা না বুঝে রঙচঙে লোভে
কাম ক্রোধ লোভ আর মদ মোহ দ্বেষে

তাই বুঝি পৃথিবীর আজ গহীন অসুখ
নিরাময় আছে কিনা সন্ধানে থাকা
যতিচিহ্ণ পড়ে যায় কখন কে জানে
মহাকাল হাঁক পাড়ে পসরা সাজিয়ে।
             ***

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ