দর্পণ || সাপ্তাহিক পরিচালকীয় কলম || কবিতা কোলাজ




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

স্বপ্ন রঙ,,

  জয়তী


মানুষ বেড়াল দুপেয়ে চারপেয়ে -

তাদের ভেতরে আমি - আমার ভেতরে ওরা! 

সবকটি শিরা থেকে ধমনি এতবার ঘর বার করেছি! 


এখন মনেহয় ইট কাঠ ছবি দেওয়ালে হেঁটে বেড়াই -

ওদের ভেতরে হামাগুড়ি দিয়ে খুঁজতে থাকি স্পর্শ স্পন্দন -

ওরা কি এমনই স্থবির চিরদিন! ওরা কি সত্যিই সংবেদনহীন!


অথচ ওদের একটুও প্রাণহীন মনে হয়নি- মূর্তিগুলোর মধ্যে;

ওদের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে কতরকম ভাবে ছবি তুলেছি -

ওরা কেমন করে তাকিয়ে ছিলো! কতবার মুচকি হেসেছিলো?


আঙুল জানেনি চোখের কথা- সত্যিই ছবি এঁকেছিলো কেউ! 

গর্ভবতী সন্ধ্যার চোখ কেউ জানেই নি- কতকিছু নিয়ে ভরাট সে! 

শিল্পীর ঠোঁটে- মূর্তির শরীর খোদাইয়ের ধুসর মাটির চুম্বন-


কয়েকটা ধারণা নিয়ে কতদূরে ছুটে বেড়াই -

কবিতায় বাতি জ্বেলে বসে আছি মহাকাব্যের দলা দলা মাংসপিণ্ড গুছিয়ে-

ওরা কেউ কথা বলে না! ধূর্ত চোখে তাকিয়ে বসে থাকে-


অথচ অনেকক্ষণ তাকিয়ে আছি; গভীরের ডাকে- যে চোখ এখনো নিখোঁজ-

তার ভেতরে আমি পৃথিবীর আশ্চর্যতম ভাস্কর্যের সন্ধান করে চলেছি -

"রামকিঙ্কর বেইজ" কী নিবিড় প্রেমে তাকিয়ে আছেন এখনো -


এখনো সম্পূর্ণ হয়নি- এখনো শেষ হয়নি শেষ আঁচড়টা! 

স্বপ্নের রঙ পালিয়ে বেড়াচ্ছে মনের ঘরে বাইরে -

তাকে আঁকতেই কখন গেছে ফিরে চিহ্ন রাখেনি! 


(অসাধারণ প্রতিভাময় চিত্রী - ভাস্কর শিল্পী রামকিঙ্কর বেইজের জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য )


===

 আয়না 

তন্ময় রাণা


যদি কখনো আয়নার সামনে দাঁড়াওl  

না,না,....রঙ মেখে নয়, 

রঙের প্রলেপ ছাড়া,সব প্রসাধনী তুলে, যদি সেখানে দাঁড়াও,

দেখবে আয়না ঠিক চিনিয়ে দেবে আসল হারিয়ে ফেলা তোমায় l


তোমার সত্তা,তোমার ঘুমিয়ে থাকা বোধl

হয়তো কিছু'বা-  

অবশিষ্ট আজও,সুপ্ত হয়ে লেপ্টে আছে সেখানে,

যা বারেবারে ঢাকা পড়ে যায় চড়া প্রসাধনীর আড়ালে l 


মুখের বলি রেখার খাঁজে খাঁজে হয়তো দেখতে পাবে তখনও,

লেগে আছে তোমার অলীক স্বপ্নের 

তোড়ে ভেসে যাওয়া-

আমার বিবর্ণ ভালোবাসার,চূর্ণবিচূর্ণ 

কিছু অংশ বিশেষl 


হয়তো আবেগে তখন একটু ভিজে আসবে চোখ!

তুমি কি ফিরবে তখন?আছড়ে পড়বে কি আবার?

আমার বুকের মাঝে কোনো ঘূর্ণি ঝড়ের 

মতনl 

নাকি,আবার রঙের প্রলেপ লাগিয়ে ঢেকে নেবে নিজের মুখ তখন l


===

পেটের দায়ের যুদ্ধ

পিন্টু বেতাল


নাই কোন শোক, হয় যদি হোক, সশ্রম কারাদণ্ড;

ক্ষুধার জ্বালায় জুটবে তবুও দুবেলা দুমুঠো অন্ন।

উদাস পৃথিবী, হয় কিছুদিন, সইবে বিরহ ব্যথা;

পড়বে যখন, তার পেটে টান, নামবে পথে- তা দেখা।

ভরবে গারদ কানায় কানায়, প্রাণ জুড়াবে ক্ষুধার জ্বালায়,

আজ তবে ধিক্ অমানবিক- গৃহবন্দী মন্ত্র;

নাই কোন শোক, হয় যদি হোক, সশ্রম কারাদণ্ড।

                                                        ক্ষুধার জ্বালায়- জুটবে তবুও, দুবেলা দুমুঠো অন্ন।


ভয় যদি হয়, আজ নিশ্চয়, বন্ধ্যা পথ্য রীতিতে,

বেআক্কেলে, বিদঘুটে ঐ- বঞ্চিত আয় নীতিতে;

বলি, পেটের দায়ে কি চলে কাঁচি?

মোরা, দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক-

ঘাম ঝরিয়েই অল্প বাঁচি।

                                                          

আজ অসহায় রুদ্ধ ঘরে-

মরছি শুধুই তিলে তিলে, অনাহার ও অর্ধাহারে,

এর চেয়ে বেশি- ঢের ভালো হায়, সশ্রম কারাদণ্ড;

ক্ষুধার জ্বালায় জুটবে তবুও দুবেলা দুমুঠো অন্ন।


নাই কোন শোক, হয় যদি হোক, সংশোধনের যুদ্ধ।

কানায় কানায় ভরবো গারদ, গড়বো সমাজ সুষ্ঠ।।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ