সত্যজিৎ রায়ের সৃজনে রাজনীতি




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

সত্যজিৎ রায়ের সৃজনে রাজনীতি

রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক বিশেষ দেখা যেত না দীর্ঘকায় মানুষটির ৷ তবে তাঁর সৃজনে প্রচ্ছন্ন ভাবে দেখা গিয়েছে রাজনীতির ছায়া ৷

১৯৪২ সাল৷ চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ৷অমৃতবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত 'শেডস অফ গ্রে' বা 'বর্ণান্ধ' গল্পে উঠতে পারে রাজনৈতিক বিতর্ক ৷তখন কুড়ি পার হওয়া তরুণ সত্যজিৎ,তিনি লিখলেন—একালের তাবৎ প্রগতিশীল তরুণ বুদ্ধিজীবীর মত সেও বামপন্থী ৷

এর তিন দশক পরপিকু গল্পে, শিশুর চোখ দিয়ে দেখা বড়দের জটিল সমাজ ৷নকশাল আমল ৷ স্ট্রাইক ৷ বোমার আওয়াজ ৷ পুলিশের গুলি ৷ রাজনীতিতে হারিয়ে যাওয়া মেধাবী ছাত্রের জীবন ১৯৪৩সাল ৷কম্পানী লকআউট ৷ কর্মীছাঁটাই ৷সুনামের সাথে চাকরী করেও পটল বাবুর চাকরী চলে যায় ৷ 'পটলবাবু ফিল্মস্টার' গল্পে অর্থের অভাব ও মানসিক অস্থিরতার পিছনেও রাজনৈতি কারণ ৷

শঙ্কু কাহিনি তে যেমন আছে নাৎসিদের ইহুদি বিদ্বেষ তেমনি ফেলুদা গোয়েন্দা গল্পে জটায়ুর কাকা দুর্গামোহন গুলিতে উড়িয়ে ছিল সাহেবের থুতনি ৷

'নীল আতঙ্ক' গল্পে প্রকাশ পায় নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ৷নীলবিদ্রোহ ঐতিহাসিক ঘটনা হলেও রাজনৈতিক গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না ৷

'নায়ক' এ স্টার হওয়ার আগে অরিন্দম, বন্ধু বীরেশের সঙ্গে রাজনীতির মঞ্চে গিয়ে  বক্তৃতা না শুনে নাটকের সংলাপ মুখস্থ করত ৷

তেমনি,'প্রতিদ্বন্দ্বী' ছবির নায়ক সিদ্ধার্থ ৷যে ভাইয়ের জন্মদিনে চে গেভারা উপহার দিয়েছিল,সে বাম রাজনীতি ছেড়ে চাকরীর চেষ্টা করে ৷ 

গুপী গাইন বাঘা বাইন এবং হীরক রাজার দেশে ছবিতেও রাজনীতি উঁকি দিয়েছে রূপকথা, ভূত, হাসি, মজার আড়ালে ৷

একনায়কতন্ত্র আর ফ্যাসিবাদের পতন দেখা গিয়েছিল 'হীরক রাজার দেশে' ছবিতে ৷

হীরক রাজার দেশে ছবিতে উদয়ন পণ্ডিত বলেন—যুদ্ধ থামালে চলবে না ৷ বিপ্লবের কথা বলা মানুষ আশা করেন 'বিপ্লব দীর্ঘজীবী হবে' ৷

ভাঙা মূর্তির ওপর পা রেখে গুপী গাইলো 'কারেও যদিভূতে ধরে, মোদের যেন খবর করে ...৷

বিপ্লবের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরেও,সত্যজিৎ রায় বুঝেছিলেন ভূতে ধরার সম্ভবনা থেকে যায় ৷

_____

★তথ্যসূত্র সংগ্রহে অলিপা পাল

★ ছবি সংগৃহীত 

★ উপস্থাপন দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. খুব ভালো লাগলো, অনেক কিছু জানতে পারলাম। ছবি সহ লেখা টি হওয়ার জন্য আরো বেশি সুখপাঠ্য হয়েছে।

    উত্তরমুছুন