মহাবিদ্যার দেবী নীল সরস্বতী ~ মঙ্গল মিদ্যা (রিপল)




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

মহাবিদ্যার দেবী নীল সরস্বতী

মঙ্গল মিদ্যা (রিপল)


তারা তন্ত্রে বর্ণিত দেবী তাঁরার অষ্টরূপের একরূপ নীল সরস্বতী। দেবী নীল গাত্রবর্ণা ও নীল জ‍্যোতি প্রকাশিতা। মেরু প্রদেশের পশ্চিম কুলে ''চোল'' নামক হ্রদে দেবী সৃষ্ট। দেবী সৃষ্টি হয়ে ত্রিযুগ ব‍্যাপী জপ ক্রিয়ায় লিপ্ত হন। উর্দ্ধবন্ত থেকে তেজরাশি চোল ক্রুদ্ধে নিপতিত হয়ে নীল বর্ণ হ‌ইয়া ছিল বলে ''নীল সরস্বতী'' নামে খ্যাত। দেবী সাধনায় সফল সাধক বিদ‍্যা, বুদ্ধি এবং ব্রহ্মজ্ঞানের অধিকারী হন। এই দেবীর করুনাতেই জগৎ বিখ্যাত হয়েছিলেন কালজয়ী কবি কালিদাস (মতান্তর রয়েছে)। দেবী সাধকের জ্বিহায় অবস্থান করে সাধককে বাকসিদ্ধি প্রদান করেন। বর্তমানে দেবী বিদ‍্যার্থীদের মেধাবৃদ্ধিতে তন্ত্রক্ত উপায়ে আরাধিত হন। দেবী মহিমায় বিদ‍্যার্থীরা বিদ‍্যার্জনে সফলতা লাভ, স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি এবং জ্ঞান বৃদ্ধির সহায়ক হন।


বর্তমান পাক্ অধিকৃত কাশ্মীরের হরমুখ পর্বতের নীচে অতি সুন্দর ও সৌন্দর্যময় নীলম উপত্যকা রয়েছে। পাশ থেকে বয়ে গেছে পুরাণের বর্নিত এক নদী মধুমতী নদী। বর্তমান কাশ্মীরের মানুষরা তাকে নীলম নদী বা কিষেনগঙ্গা বলে ডাকে। নদীর তীরে অবস্থিত শারদা গ্রামে একটা হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব এখনো ভঙ্গভাবে বোঝা যায়। ১৮টি মহাশক্তি পীঠের অন্যতম শারদা পীঠ। কথিত আছে এখানে সতীর ডান হাত পড়েছিলো। 

  

         এই মন্দিরটিকে নিয়ে স্থানীয় মুসলিম বাসিন্দাদের মধ্যে ৩টি কাহিনি প্রচলিত আছে । 

১ম - এখানে একবার শুভ আর অশুভ শক্তির মধ্যে লড়াই হয়েছিলো। যুদ্ধে একসময় দেবী শারদা (নীল সরস্বতী) অশুভ শক্তির হাতে থাকা জ্ঞানের পাত্রটি কেড়ে নেয়। সেটি মাটির তলায় একটা ঘরে রেখে দেয় আর নিজে তার উপর মন্দিরে পরিণত হয়।


২য়টি হলো - একসময় পুরো পৃথিবী শাসন করতেন দুই বোন শারদা ও নারদা। নীলম উপত্যকার পাশে থাকা শর্দি ও নর্দি নামে দুটো তুষারশৃঙ্গে বাস করতো। একদিন নারদা দেখতে পেলেন তার দিদি শারদা দেহত্যাগ করেছেন এবং ২টো দৈত্য সেটা নিয়ে আকাশ পথে পালাচ্ছে। প্রচন্ড রাগে বোন নারদা উড়ে গিয়ে তাদের ধরে আর নির্দেশ দেন, দিদি শারদার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এখানে একটা মন্দির গড়ে দিতে। সেটিই এই শারদা মন্দির ।


৩য় কাহিনি - একসময় ওই উপত্যকায় এক দৈত্য বাস করতো। সে স্থানীয় এক রাজকন্যাকে ভালোবাসতো, আর তার ভালোবাসার প্রমাণ দিতে একরাতে একটা প্রাসাদ তৈরি করতে লাগলেন, কিন্তু ভোরের আজান শুরু হয়ে যেতে কাজটি অসমাপ্ত রয়ে যায়। প্রাসাদের ছাদটি তৈরি করতে পারেননি। সেটিই বর্তমানের শারদা মন্দির ছিলো।


           নীল সরস্বতী দেবী ও তার মন্দির নিয়ে সামান্য কিছু কথা রইলো।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ