পোস্ট বার দেখা হয়েছে
সবুজ বাঁচান জীবন বাঁচান
উষ্ণায়নের দাপটে ঝলসানো পৃথিবীতে তীব্র জলসংকট।
সবুজের অভাবে শ্রাবণেও ধরেছে কৃপণতা
তবুও আকাশ যেটুকু দেয় পুরোটা জোটেনা
মাটির ভাগ্যে বাধা দেয় কংক্রিটের নগর সভ্যতা!
পাতাল আজ বিপরীত মুখী তবুও জলের অপচয় অবিচ্ছিন্ন গতিতে................... গতিময়!
বেলাগাম সবুজ নিধন, অতিরিক্ত কংক্রিট নির্মাণ ও
অবৈধ ভরাটের কবলে ডোবা পুকুর-জলাশয়
বাস্তুতন্ত্রের হুমকি।
বাস্তুতন্ত্র শৃঙ্খলা হারালে সমগ্ৰ জীবজগতের জন্য
অশনিসংকেত!
অস্তিত্বের লড়াইয়ে অকালে
স্তব্ধ হবে প্রানের স্পন্দন?
তাই প্রকৃতি সজাগ হয়ে চাই সমবেত স্লোগান-
"সবুজ বাঁচান!.. জল বাঁচান!.. জীবন বাঁচান!!"
====
মনোজ ভৌমিক
বদলাবি কবে রঙ
এক চিলতে সিঁদুর দিয়ে সীমন্ত রাঙালি আজ!
কনের সাজে সাজলি তুই ভাঙলি কুমারী সাজ!!
ভালোবাসার লাল রঙেতে আগামী জীবন কথা,
পুতুল পুতুল খেলা বুঝি আজ সাঙ্গ হবে হেথা!
রিক্ত হলো বাবার বুক শূন্যতায় মা'র ঘর!
এখন আপন করতে হবে নতুন করে পর!!
কেন রে মেয়ে? তুইই কেন?উড়বি পাখির মত?
এ গাছ ও গাছ ফিরে ফিরে হবি বৃদ্ধাশ্রমে হত!!
তোষামোদে ঐ জীবনটাকে এবার মুছেই ফেল,
দুর্গা থাক বুকের ভেতর সময়ের সাথে খেল।
পদবীর ঐ সংশয়টা মিটিয়ে নেওয়া ভালো,
"পরের ধন" শব্দটা আজ ভাবনায় বড় কালো।
বদলে দে না সমাজটাকে বদলা পুরানো ঢঙ!
শঙ্খ বলয় শৃঙ্খল তোর বদলাবি কবে রঙ!!
গার্গী-মৈত্রেয়ী-খনারা করেছিল এদেশে সংগ্রাম,
অতি সহজে দেয়নি ওরা স্বীকৃতি ও সম্মান।
দিকে দিকে সোচ্চার হচ্ছে আজকের নারী জাতি,
বদলে যাবে সকল কিছু বদলাবে কী ঐ রীতি!!
এক চিলতে সিঁদুর দিয়ে আর কতদিন বল!
নিজের সাথে নিজেই তুই করতে থাকবি ছল!!
===
রঙ্গনা পাল
মেঘদূত দরজায়
নিদাঘের অবসানে,
মেঘ ভাসে আসমানে
আষাঢ়ের পহেলায়;
কবি কথা নয় মিছে
মেঘ ধায় পিছে পিছে
বিরহের অলকায়।
কালো মেঘ ছায় নভে,
আশা জাগে এই ভবে
বারিধারা নামে সেই!
সতেজতা গাছে, ফুলে
বান ডাকে নদী কূলে।
ময়ূরের কলাপেই!
ঝর ঝর ঝিরঝির
পাতা কাঁপে তিরতির
সকলেই খুশি বেশ;
আনমনে ভিজে সারা,
আজ মন দিশাহারা
দহনের হবে শেষ।
দাদুরিরা নব জলে
গান গায় ছলে দলে
বরষার আগমনে;
মেঘ দূত দরজায়
মন শুধু তাকে চায়
বিরহের নিরসনে..
সাবিত্রী জানা ষন্নিগ্রহী
আমি আর নেই
আমি এসেছিলাম--ওদের হাত ধরে।
ওরা ভেবেছিল--আমি অনেক আয়ু পাবো।
ওরা জানতো না--আমি খুব বেশীদিন নেই।
তাই আমায় মূর্খের মতো বড় করেছিল।
চলে গেল আর একটা ৫ই জুন-
সেই ১৯৭২ সাল থেকে আসছে-যাচ্ছে।
আসুক-যাক্-তাতে কার কি?
আজ তো ৫ই জুন নয়।
ওরা বলছিল--
চলো একটু হাওয়া খেয়ে আসি--
ঐ রাস্তাটায়-যে রাস্তাটা দিয়ে গেলে-
মনের সুখে ফুল ছিঁড়তে পারবো।
পেয়ারা ফুল-জারুল ফুল-
অমলতাস-খুব সুন্দর।
কেউ বললো-
মৌমাছিগুলো মধু খায় যে,
--ওরা ঠিক খুঁজে নেবে অন্য কিছু।
বকগুলো উড়ে বেড়ায়-
একটি ঢিল ছুঁড়বো--ঠিক গায়ে লাগবে।
এক উল্লাস হাসি-
আজ সন্ধ্যায়-উনুনে পুড়িয়ে--
একটু সেবন-সাথে একটু রঙীন তরল।
কত বক উড়ে উড়ে চলে-
আকাশপানে,
একটি নাই বা থাকলো।
দামি গাড়ি চড়ে কেউ এলো--
চারাগুলোতে কত কীট কিলবিল করে-
কীটগুলো মারতে একটু ঔষধ দরকার।
গাড়ির ধার শোধ করতে হবে-চারাগুলো এক্সপোর্ট করে।
দলবেঁধে ওরা-
সাথে হুকওয়ালা গাড়ি-
ওদের ভাষা-
দূর্ তোর্ পরিবেশ-বড় বড় বাবুরা সব আসে-
হুকুম দিয়ে যায়-এই গাছগুলো কাটতে হবে--
রাস্তা হবে চওড়া।
হবে একটি বেদী--আগামী মাসে মিটিং আছে।
৫ই জুন--সবাইকে জড় করতে হবে।
পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে।
গাছ লাগানোর মিটিং--সব্বাইকে আসতে বলিস।
আমি একটি জারুল গাছ-
আমার সারা গায়ে কেবল ফুল।
হাজার হাজার মৌমাছির গুঞ্জন শুনতে পাই।
ফিতে দিয়ে মাপ করেছে।
শেকড়সহ তুলে দিতে হবে।
আমাকে একফুট জায়গা দেওয়া যাবে না।
অথচ-মানুষ পাড়ার রাস্তাটা খোঁড়া যাবে না।
ওরা মানুষ-বেআইনি কিছু জায়গা নিয়েছে-
আর তো কিছু নয়।
মানুষের জন্য বেআইনি জায়গা আছে--
গাছেদের নিজ অধিকার নেই--মাত্র একফুট জায়গা-
নীরবে চেয়েছিলাম-
বেঁচে থাকার জন্য--
দেয়নি-ওদের হিসেব মিলবে না।
হিসেব দিতে হবে-- রাজকোষ থেকে টাকা আসবে।
আমাদের-গাছেদের টাকা নেই-নেই রাজকোষ।
জীবন দিয়ে জন্মানোর ঋণ শোধ হবে।
দ্বন্দ্ব চলুক-
মানবিকতার ব্যর্থতা আর বাঁচার অধিকার-
যোগ দিক্-উন্নয়ন-উপার্জন
না ওরা কারুর কথা ভাবে না।
না প্রজাপতি-না বক-না মৌমাছি-
আমি তো কোন ছার।
মাত্র একফুট জায়গা পেলে-
আমি বেঁচে যেতাম।
আমি এক জারুল-
-ফুলভর্তি আমার শরীর-
উৎপাদিত হলাম--
যন্ত্র দিয়ে লুটিয়ে দিলে মাটিতে--
শুধু বারবার বললাম-
আমি আর নেই।
বক-প্রজাপতি-মথ-ওরা সবাই আশ্রয় পাবে-
কেবল আমি থাকবো না-
মাত্র একফুট জায়গার অভাব আমার জন্য।
আমি ফুলফোটা এক জারুল--
আমি আর নেই।
====
কবি সুব্রত মিত্র
প্রতিরুদ্ধ সমূহ
ব্যস্ত শহর থেমে গেছে আজ
স্তব্ধ জরুরী দরকার; গেছে থেমে সকল কাজ,
ডুবছে ঘটিবাটি; নেই কোন রুজিরুটি
অনাহারী প্রভাতে পরাজয় মানবতার।
রাস্তাজুড়ে রাক্ষসের ছড়াছড়ি
নিরীহ মানুষদের রাক্ষসেরা করে ধরাধরি,
এখানে অন্যায় সমাদরে পায় আশ্রয়
গভীর বেদনার বিন্দুমাত্র নেই বিচার--
অনাহারী নাগরিকের পেট কেটে প্রভাবশালীর দল করে সাশ্রয়।
থানা; পুলিশ; প্রশাসন;-
সব শালারাই করে ঘুষ গ্রহণ,
আমার এই আর্তনাদ তাহাদের ঠাট্টার সমান
চলে ফেরে অহরহ কত মন্ত্রী মস্তান
তাদেরকে কেউ করেনা প্রশ্ন; করেনা অপমান।
ধ্বংস দিয়েই শুরু হয় দিন;
ধ্বংসলীলায় যায় সারাদিন;
আমি যেন এক আস্ত আপত্তির দেওয়াল এই অন্যায় সমাজে
লালসার রক্ত লাল বর্ণে থাকে ওরা স্বর্গে।
উদ্ভট আওয়াজ যখন উঠে আসে কলমে
জানি আমি হব স্বৈরাচার, এই সমাজে; এই জনমে,
নপুংসক চিত্তের পিত্তে থাকে যদি এতোটুকু মানবতা
ক্ষমতার ঝান্ডা দাও ছুড়ে ফেলে, ধরো তুলে হৃদ্রতা।
1 মন্তব্যসমূহ
ভীষণ ভালো লাগলো প্রতিটি লেখা 💚
উত্তরমুছুন