অহম ব্রহ্মাস্মি ~ ধর্মেন্দ্রর রাওয়াত




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

অহম ব্রহ্মাস্মি 

ধর্মেন্দ্রর রাওয়াত 


ব্রহ্মাণ্ড

সবসময়ই প্রতিনিয়ত প্রতি মুহূর্তেই এক্সপান্ডিং হচ্ছে ।

ব্রহ্মাণ্ড অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী। 

ব্রহ্মাণ্ড ছুটে চলেছে চতুর্দিকে।

ছুটে চলায় সৃষ্টি থেমে যাওয়ায় প্রলয়।

ব্রম্ভান্ডের-ই অংশ আমাদের এই সৌরমন্ডল আমাদের

এই পৃথিবী আমাদের  বসুন্ধরা । 

অ্যামিবা থেকে যাত্রা

শুরু করে আজকের এই উন্নত মানুষ, ব্রম্ভান্ডের অভিপ্রায়ের অর্থাৎ এক্সপান্ডিং হওয়ার সংক্ষিপ্ত সংস্করণ।

সমস্ত জীব জগতেকে যদি আমরা তার

সামগ্রিকতায় দেখি ।তবে আমরা দেখব এক অবিরাম বিস্তার। এক অবিরাম ছুটে চলা। দেখব- কেমন করে ছোট্ট একটা দুব্বো ঘাসও মাটি ফুঁড়ে আকাশ ছুঁতে চাইছে। যেন ব্রম্ভান্ডের অভিপ্রায় সেই দুব্বো  ঘাসের স্বপ্নে জাগরণে। যেন এক উৎসব ।

'বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দধারা'।


নিজের দিকে চোখ ফেরাতেই চমকে উঠি।


'যাহা আছে ব্রহ্মান্ডে তাহা আছে দেহভান্ডে'।


আমরা বুঝতে পারি আমরা ব্রহ্মান্ডের-ই অংশ ।তাই আমাদেরও স্বপ্নে জাগরনে ব্রম্ভান্ডের-ই অভিপ্রায় ।

তাই স্বাভাবিক ভাবেই ব্রম্ভান্ডের সমস্ত ইচ্ছা , অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্য দেহভান্ডেরও ইচ্ছা অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্য- বড় হওয়া, ছড়িয়ে পড়া, অসীম হয়ে যাওয়া ।ব্রম্ভান্ডের-ই অংশ আমরা তাই আমাদের ভেতরেও অদ্বৈতভাব আছে থাকবে ।


ব্রম্ভান্ডের ইচ্ছাই আমাদের ইচ্ছা ।


একটু নিজের দিকে তাকালে অথবা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যদি দিগ্বিদিকে ছুটে চলা

মানুষ দেখি। আর যদি ভাবি তাহলে দেখব -এই মানুষের ছুটে চালাও ব্রম্ভান্ডেরই (তাঁরই)  ইচ্ছায়। মানুষ তার ক্ষুদ্র সীমায় সাবস্টিটিউটকে (কর্ম) নিয়ে এক্সপেন্ড হতে চায়। যতক্ষণ না হয় ততক্ষণ শান্তি পায় না ।ব্রহ্মাণ্ড নিঃশ্বাস নিতে থাকে তার ঘাড়ের কাছে। মানুষ তার  (থুরি ব্রম্ভান্ডের)  স্বপ্নকে তার সন্তানের কাছে তার উত্তরসূরিদের কাছে গচ্ছিত রেখে যায় বংশপরম্পরায়। মানুষের এককভাবে অথবা সাংগঠনিকভাবে সেটা ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বা সামাজিক হোক না কেন,আছে সেই একই অভিপ্রায়-ছড়িয়ে পড়া বিস্তার হওয়া । 


সেই ছোটবেলায় বাজার থেকে কেনা বোম যখন খুব জোরে আওয়াজ করে  ফাটতো ।তখন কি আনন্দই না হতো আমাদের ।অবশ্যই আওয়াজ এর জন্য নয়। যতদূর আওয়াজ ছড়ালো ততদূর নিজের ছড়িয়ে পড়ার আনন্দে ।ততটাই বড় হয়ে যাওয়ার আনন্দে ।


আওয়াজ তো উপলক্ষ মাত্র 

লক্ষ্য ছড়িয়ে পড়ার। 


সমস্ত কর্মই উপলক্ষ

লক্ষ্য ছড়িয়ে পড়া, বিস্তার হওয়া অসীম হওয়া।


অস্তিত্বের অভিপ্রায়  অনুযায়ী মানুষ মনের মাধ্যমে নিজেকে এক্সপেন্ড করে ।ধর্মের গভীর জ্ঞানে মানুষের নিজের ভেতরের জগত ,অভিপ্রায়  ব্রম্ভান্ডের সঙ্গে, ব্রম্ভান্ডের অভিপ্রায়ের সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন 'একাকার' হয়ে আছে-এই উপলব্ধি ঘোষণা করে- 'অহম ব্রহ্মাস্মি' ।


সেই একই অভিপ্রায় যখন মানুষের অন্তর জগত থেকে উঠে এসে শুধু ধর্ম নয় বিজ্ঞানের হাত ধরে তখনও সেই একই ঘটনা ঘটে। ব্রম্ভান্ডের এক্সপান্ডিং এর অভিপ্রায়ের-ই আরেক রূপ।  মানুষের সুখ সুবিধার জন্য, মানুষের বিস্তারের জন্য সমস্ত ইন্দ্রিয় সমস্ত অঙ্গ  পতঙ্গের পদার্থগত এক্সপান্ডিং রূপ দেয বিজ্ঞান ।

এই যে মানুষের মহাকাশ গ্রহ-নক্ষত্রের প্রতি আকর্ষণ ,

জানার প্রতি আকর্ষণ ,

জ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ

 -এই যে ছুট, 

এই যে দৌড় -


জ্ঞানের জন্য নয় নিজেকে ছড়িয়ে দেবার জন্য। 


জ্ঞান তো উপলক্ষ মাত্র 

অনন্তে ছড়িয়ে যাওয়ায় লক্ষ্য।

সমস্ত কর্মই উপলক্ষ

অসীম হওয়ায় লক্ষ্য।


শেষ করছি এই বলে যে-


সমুদ্র আর সমুদ্রের ঢেউ একই সাথে বিচ্ছিন্ন ও        অবিচ্ছিন্ন

 এই বোধ-ই আনে

    উদ্দেশ্যে উৎসব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ