দর্পণ পিন পোস্ট প্রতিযোগিতা ফলাফল




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

 

কবিতা হয়েছে কিসময়

সুব্রত হালদার


সানাইয়ের করুন রাগিণীর মত ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় গোধূলির শেষ অস্তরাগ ..

"মৃত্যুদূত" এর মত কিছু অদ্ভুত অন্ধকার এগিয়ে এসে সামনে দাঁড়ায় ..

আমি চোখ তুলে জানতে চাই "হয়েছে কি সময়?"

কিছু না বলে স্মিত হেসে জোনাকির ভিড় ঠেলে সে ভেসে যায় ..

হেমন্তের ধূসর কুয়াশায়..

রাস্তার মোড়ে মোড়ে জ্বলে ওঠে নিয়নের বাতি..

দূরে মন্দিরে বেজে ওঠে শঙ্খ, শুরু হয় সন্ধ্যারতি..

যারা যাবার গেছে চলে দূরে..

যারা ফেরার তারা আসে ফিরে। 

আমি আবারও চিৎকার করে জানতে চাই -"হয়েছে কি সময় ?"

আমার কথাই ফিরে ফিরে আসে, 

সন্ধ্যার বাতাস কেবল প্রতিধ্বনিময়।


পথ সে তো অন্তহীন..

জেনেছি যে দিন..

সেদিন থেকেই শুরু চলা ..

কখনো মেখেছি ধুলো কিশোরের খোলা পায়ে ..

কখনো কৃষানের পায়ের জলকাদা..

কখনো ছুঁয়েছি গঙ্গার তীর, কখনো কৃষ্ণা, গোদাবরী, নর্মদা..

কখনো ছুঁয়েছি গিরি ,কন্দর, সমুদ্রের ঢেউয়ের আবেশ ..

কখনো ঊষর মরু,কখনো বা মৌসুমী বৃষ্টির দেশ..


চলতে চলতে মাঝে মাঝে দেখি ফিরে ফিরে.. 

আমার মতই হাঁটছে "জীবন" অগণন মানুষের ভিড়ে.. 

গ্রামে ,শহরে ,নগরে বন্দরে..

শালিখের পায়ে পায়ে ..

কলমির বনের ভিতর ডাহুকের নীড়ে..

দেখেছি খোলা আকাশের নিচে মেখেছে চাঁদের জল জোছনার রাতে ...

বাজিয়েছে মাদল, মহুয়ার ঘোরে নিজেদের মহল্লাতে ..

তারপর প্রিয়তম নারী কিংবা পুরুষের হাত ধরে হেঁটে গেছে রাতের প্রান্তরে..

দিয়ে গেছে জীবনের মশাল সন্ততির হাতে..

নতুন প্রভাতে..


এইসব অগণন মানুষের ভিড়ে.. 

আমিও দেখেছি তারে .. 

নিকানো উঠোন শেষে মাটির দাওয়ায়..

আম জাম কাঁঠাল এর নিবিড় ছায়ায়..

লক্ষ্মী প্রতিমার মত মুখ. কোজাগরী চাঁদ হাসে শরীরের প্রতিটা কোনায়.  

ভাসাভাসা উজ্জ্বল চোখ দুটো জুড়ে ... 

স্বর্গীয় আলো খেলা করে..

হাত ধরে কাছে ডেকে দিয়েছিল মায়াবী কোল পেতে..

কোন এক নক্ষত্র ঝরা রাতে..

মাখিয়েছিল সোহাগের জল.. অবিরল...

তারপর গেছে ভেসে..

রাত পরীদের ডানায় ডানায় কুয়াশার দেশে..


কতটা পথ হাঁটা বাকি জানিনা.. 

দুচোখে তন্দ্রা নেমে আসে..

রাত পাখিদের বিবশ ডানায় জাগে ঘুম...

নাগরিক কোলাহল সাময়িক থেমে যায়, চারপাশ নীরব নিঝুম..

ইচ্ছে হয় শিশির হয়ে ঝরে পড়ি হেমন্তের প্রান্তর জোড়া সোনালী ধানের শীষে..

নিবিড় ঘাসের ঘ্রানে উদাসী বাতাসে... 


ভোর হয়ে আসে... 

পূবের আকাশ জুড়ে হেসে ওঠে নতুন সকাল ..

পল অনুপল জুড়ে ভেসে চলে মহাকাল..

জীবন ছুঁয়ে এগিয়ে চলে মহাজীবন - দুঃখ ভোলে,শোক ভোলে হয়ে ওঠে আনন্দময়..

আমি চিৎকার করে জানতে চাই- "হয়েছে কি সময়?" 

আমার কথাই ফিরে ফিরে আসে.. 

বাতাস কেবল প্রতিধ্বনিময়.. 

====================

ইমানদারি দর্দে

 সোনালী দাস সরকার 


দুঃখ এলে সজদা করি খতম করি না ভেবে অল্পেতে 

কিন্তু অন্তবিহীন পথে চলাই যে জীবন সে কথা ভুলি কি করে? 

আরে! আল্লার কৃপা ছাড়া পাতা টুকুও যে হেলেদুলে না 

প্রাকৃতিক সত্যের বিপক্ষে চালাবে জীবনের নিয়ম বুঝতে পারছি না?


বড্ড বেশি মহব্বত, মায়ার মোহনজালে আক্ষেপকে জড়াই

কর্ম করেই যে অতিবাহিত মানব জন্ম উদ্দেশ্যকে রাখি অজানাই।

মানুষ শুধু মাথা খুটে মরে আমার আমার করে জাগতিকে

ক্ষনিক সবুর করেনা ভালো ভাবনায় চিন্তায় নিজেকে জাগাতে।


"এটা ঠিক না ওটা ঠিক"এই করে হামেশাই অমিলে আর বিভ্রান্তি

আসলে ইমানদার নিজেতে কেউ নয় যেথা কোথায় আর শান্তি?


তবু চলতে হয় ঠিকানাবিহীন উদ্দেশ্য হারা রাজপথের খোঁজে 

অনন্তকাল শান্তি আর তৃপ্তির পথে মহব্বত অনাসৃষ্টি যেটাও বুঝে!


জন্ম মৃত্যুর মাঝের পথটুকু দাওয়াত দেয় ইবাদত করতে

মানুষ দৌড়ায় লালজ করে ইত্তেফাক নয় তাদের হিংসা এ

কে সামলায় এই দুনিয়ার ইজ্জাত, কাবুল করেনাই না ভুলের ফর্দে

বেমতলব অন্তবিহীন চলাকে চলতে দাও ইমানদারি থাকুক না হয় দর্দে!


===============

সবুজে হলুদে

মেখলা ঘোষদস্তিদার 


ফেরে নাতো আর ছেড়ে যায় ক্ষণ চলতি পথের বাঁকে 


অপূরণ কাজ বুকের গভীরে আফশোসে দিন আঁকে,


যাই কিছু চাই আপনার করে হাঁটতে হাঁটতে শেষে


সবুজে হলুদে মিশে একাকার ধূসর আলোকে ভেসে,


বারে বারে শুধু ভাবনার মোড়ে দুলে ওঠে মন প্রাণ


ঘুরে ফিরে দেখি ভেঙে খান খান বাতাসে বেসুরো তান,


তবু যেতে থাকি বিপদ পেরিয়ে একাকী আঁধার চরে


সাহসের সাথে প্রদীপ জ্বালাতে মানব জীবন পরে,


এইভাবে চলা যাপনের খেলা আকুল আশার নদে


ভেদাভেদ ভুলে ফুটিয়ে মুকুল যুগে যুগে প্রতি পদে।


===============

 আমার আমি

 ঝুমা মল্লিক


বুকের ভেতর পুড়ে যাচ্ছে ,

পুড়ে যাচ্ছে ,আগুন জ্বলছে ।

কিন্তু ,মন কিছু বলছে না ।

আগুন জ্বলছে,জ্বলছে আগুন

মেঘে,মেঘে দ্বন্দ্ব বাড়ছে ।

অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে ,

অথচ ,মন কিছু বলছে না ।


মনের মানুষ কোথায় আছে ?

মোমরঙা মন কিছু বলছেনা

তোমার চোখে চোখ রেখে,আর হারিয়ে যাচ্ছেনা ।

আর তোমায় ভালোবাসছে না ।


এত যে দ্বন্দ্ব মনের মধ্যে

কেউ জানেনা ,মন মানে না।

মনের মানুষ, কেন মন বোঝে না ?


তবুও যদি সময় হয়,

মনের মেঘ ,যদি সরে যায় ।

সুখের সাগরে মন ভেসে যায়,

দুঃখগুলো মিছে হয় ।

অভিযোগ পিছে যায় ।


অভিমান গুলো ,রাঙতা ধূলো

সব বাঁধা পেরিয়ে ,সব ভুলে, নীল আকাশ তলে

নতুন সুখের সংলাপ ।

আমার ,আমি সংরক্ষিত ।।


===============

 আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ। 

 নিবেদিতা দে ( জয়া) 


জন্মের উষাকাল থেকে আমৃত্যুকাল অগুনতি মানুষ হেঁটে চলেছে অন্তবিহীন পথে। কিসের টানে! এই খোঁজ আর পথ চলার নামই কী জীবন? 


অথচ রাতের তৃতীয় প্রহরে অন্ধকারের গর্ভে কখন আলোর বীজ নিঃশব্দে রোপিত হয়ে যায় মানুষ টেরই পেলো না কোনদিন! 


শিশুর কোমল হৃদয়, কিশোর কিশোরীর প্রাণের সরল উচ্ছ্বলতা,নারী-পুরুষ

শরীরের দোরে দোরে হাত পেতে ঘুরে ঘুরে পথ চলার নামই কি জীবন! 


কতো পথ! "যতো মত তত পথ!" পথের শেষ কোথায়? কি আছে ওই পথের শেষে! 

মাঠ পেরিয়ে শ্রাবণের ঘন কালো মেঘের মতো শালবন পেরোবো! 

তারপর? আরো অনেক বনানী, নদী,নালা, বিন্ধ্যপর্বত পেরিয়ে, সব পাহাড়,সব মাঠ পেরিয়ে যাবো! 

তারও পর যদি না পাও?


সব পথ ছেড়ে সহজ পথ বেছে নেবো। ভালোবাসার পথে হাঁটবো। 

ভালোবাসা পেলে অন্য পথে যাবো কেন? যদি হোঁচট খাও? নিরাশ্রয় হও! পাহাড়ের বুক থেকে গড়িয়ে পড়ো? 


তবে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকবো। দীর্ঘ পথ চলার পর, আরও একটু পথ চলতে বাকি আছে ভেবে ভৈরবী রাগের আরোহ থেকে অবরোহ, পকড়ে নেমে আসবো।একটা যতি চিহ্ন এঁকে দিয়ে,সুরের মূর্ছনায় ভেসে যাবো ভেসে যাবো!!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ