পোস্ট বার দেখা হয়েছে
ফিরে ফিরে আসি
জানিনা কি তোমার এই অভিমান
না কি রাগ ? যতবার এসেছি কাছে
দূরে সরে গেছো । সেদিন সামনে আমাকে দেখে
তৃতীয় গানটি না গেয়েই মঞ্চ ছেড়ে নেমে গেলে।
দূর থেকে তোমার খুশি দেখি , কত হাসো
মেতে থাক বন্ধুদের মাঝে। আর আমাকে দেখে
নিস্তব্ধ হয়ে যাও , ঝর্ণা থেকে শান্ত এক নদীর মত।
আজকাল আর কষ্ট হয় না বিশেষ
নিয়েছি মেনে , তবুও পারিনা রুখতে নিজেকে
বারবার ফিরে আসি তোমার অবহেলা পেতে।
জানি একদিন কোনো জোনাকি সন্ধ্যায়
বৃষ্টি শেষে যখন পাতায় জলের শব্দ টিপ টিপ
চোখ বন্ধ করে ভাববে , এত লোকের ভিড়ে কেন
একজন ফিরে ফিরে আসে , কি আছে তোমাতে ?
সুর গীতবিতান , বলবে তোমার কানে কানে
এ যে ভালবাসা , রজনীগন্ধা , তুমি বুঝবি আর কবে ?
=====
প্রেমিকা
একটি প্রেম ভীষণ প্রয়োজন
যে ভাববে , শর্তহীন ভালবাসবে
কখনও একরাশ অভিমানে বলবে ,
“ যাও , আমাকে নিয়ে আর ভাবতে হবে না । ”
চাই একজন প্রেমিকা
যে হবে সত্যিকারের সাথী
নয় রম্ভা
নয় উর্বশী
নয় অহল্যা
নয় কোন শকুন্তলা
খুব সাধারণ একজন , যে চোখ দেখে বুঝে যায়
বলে , “ এত ভাব কেন ? আমি তো আছি । ”
বুকে রাখে মাথা অপার বিশ্বাসের
আর মনের সমস্ত কষ্টগুলো ধীরে ধীরে
দূরে চলে যায়।
====
এপার বাংলা ওপার বাংলা
একদিন সবুজ ক্ষেতের বুক চিরে একটি নদী হল
সেদিন থেকে দুটি পার , এপার ওপার , একই রকম
কলাগাছ , পাটক্ষেত, ধানের আঁটি,বাজার কৃষ্ণচূড়া
ওপারে পীরের দরগাহ, এপারে জন্মাষ্টমীর মেলা
একই সঙ্গে পৌষ পার্বণ , নববর্ষ, লালন উৎসব
নদীর জলে অনেক খেয়া , ভাটিয়ালি হেমন্ত বাতাসে।
তবু দুর্যোগ ঘনিভূত হয়, আকাশ ছেয়ে যায় কাল মেঘে
ভিটে ছেড়ে মানুষ আসে এপারে,পরাশ্রয়ে , কাঁদে
ভাগ্যের পরিহাসে, নিঃস্ব বিনা অপরাধে। চোখে ভাসে
পুকুর পাড়,আম বাগান ,গরু বাছুর, গোলার ধান ,তুলসীতলা
ওরা পরিশ্রম করে, ঘাম ঝরায় ,অস্তিত্বের প্রয়োজনে
ওরা ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়,ঘন্টচচ্চড়ি কলার থোর খায়
সন্ধ্যায় বসে পল্লীগীতি গায় , নিজের মত বাংলা বলে
ওরা বাঙ্গাল, ওরা এপারের মানুষের সঙ্গে মিশে যায়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ। “জয় বাংলা” গর্জে ওঠে বজ্র নিনাদে
হাতে তুলে নেয় অস্ত্র -লাঙ্গল পুস্তক ছেড়ে,চায় স্বদেশ
ঝরে রক্ত রাম রহিমের, কালো মাটিতে, ঐক্যবদ্ধ স্বপ্ন
সূর্যউজ্জ্বল “ সোনারবাংলা ” ,লাল সবুজ পতাকায়
স্বাধীন দেশমাতৃকা , বাংলা মা , দুঃখিনী মা - - - ।
ব্যস্ত খেয়া খুশিতে এপার ওপার, যায় দলে দলে
দেখে ভিটে পূর্বপুরুষের,সোনার তরী , বুড়ি গঙ্গা
কক্সবাজারের সমুদ্রকূল, মন্দির ঢাকেশ্বরী। এপারের
কবিতা সভায় ওপারের কবি,শহীদ মিনারে এপারের শ্রদ্ধালু
হঠাৎ থেমে যায় পূজোর ঘন্টা,চতুর্দিকে দুর্বৃত্ত উন্মাদ
কালো জ্যোৎস্নায় ঢাকে পদ্মা ব্রহ্মপুত্র। কান্না ভেসে আসে
নদীর এপারে। রক্তাক্ত বিশ্বাস সময়ের সন্ধিক্ষণে
এপারে বিস্ময় , আবার একই কাহিনী ? হতভাগ্য
মানুষেরা ছেড়ে আপন ভিটে নিঃসম্বল আসবে এপারে ?
সেলিমের ফোন আসে দেবেনের কাছে, “ লজ্জিত আমরা
হারাস না বিশ্বাস বন্ধু , ঝড় থেমে যাবে। কেউ যাবে না
আগলে রাখব সমস্ত ভাইদের জড়িয়ে বুকের সাথে। ”
একদিন সবুজ ক্ষেতের বুক চিরে একটি নদী হল
সেদিন থেকে দুটি পার , এপার ওপার , একই রকম ।
=====
কি যে চায় এই মন
ইতিহাস বলে
একটু খুশির খোঁজে কত মোহর পড়েছে
বাঈজির সঙ্গীত মূর্ছনায় । অস্থির মন তাকিয়েছে পাহাড়ে
সাগরে বনবীথিকায় । পরিযায়ী পাখি মেলেছে ডানা
আকাশে — শান্ত বিল ,জল,ক্ষেতের সবুজ মোহনায়।
কি যে হয় এই হৃদয়ে ! অজানা চিরকাল ।
তবুও অসীম তৃষ্ণা নিবন্তর,পেতে চায় স্পর্শ অনুভব
গড়ে তোলে সম্রাট তাজমহল, স্মৃতির শুদ্ধ সৌধে।
বাবুইপাখির মতই
বাঁধে ঘর সবাই । তবুও বিচ্ছিন্ন ,নিতান্তই একা, পরিজন ভিড়ে
নিয়মের বন্ধন ভেঙে কাছে টেনে নেয় রঙিন গোলাপ
ভালবাসা !এক বিন্দু ভালবাসা, খেয়া হয়ে ভাসে ক্ষীণ নদীমাঝে
চাঁদের আলোয় সোনালি , ভাটিয়ালি, নৈঃশব্দ্যে দাদরা।
কি যে চায় এই হৃদয় ! কেউ পারেনি দিতে উত্তর
প্রাসাদের কোণে নির্জনে চোখের জল মোছে পার্বতী
কাটে প্রহর , কাটে ঋতু , মেঘেদের রঙ দীর্ঘ আকাশে।
====
কবিতা কিছুক্ষণ
অনেকদিন পরে দেখা
চোখে সেই সাগরের সীমাহীন মায়া
নানা কথা শেষে এল প্রসঙ্গ কবিতার
তুমি উঠলে মেতে বাসন্তী খুশিতে
বললে রবীন্দ্রনাথ , সোনার তরী
মুখর হল ঋষির স্পর্শে , প্রেমের
তাজমহল , রক্তকরবীর নেপথ্য দীপ্ত উচ্চারণ।
এল জীবনানন্দ , হঠাৎ ছেয়ে গেল
সবুজ দ্বীপ , খালবিল , নদী , হিজলের ছবি
শালিকের ডানায় শস্যের আকুতি
বুনো হাঁস , স্বপ্নের হাত চাঁদ চম্পা
দিগন্ত ছুঁয়ে শুধু অপরূপ বাংলা ।
বলতে রুদ্র মোঃ শহীদুল্লাহর কবিতা
ভিজে এল চোখ তোমার । একটি জীবন
কেটেছে একা ,শূণ্য হাতে , অনেক অবহেলা
অক্ষর সিক্ত অদেখা লালরক্তে । তাই কি
ওকে চলে যেতে হল সব ছেড়ে এমন অসময়ে ?
সুনীল এসে বদলে দিল যৌবনের স্পর্ধা
নিজেকে দেখে মধ্যরাতে দর্পণে । ভাসে
ভুবন ডাঙার মেঘলা আকাশ , কাঁচের চুড়ি
ভাঙার শব্দ , নীরার অসুখে দুঃখী সারা শহর
সুনীলই পারে ব্যর্থ প্রেমে করতে অহংকার
নির্দ্বিধায় ভরা সভাঘরে , ব্যতিক্রমী অনায়াসে।
কিছুক্ষণ রইলে চুপচাপ , তাকালে রেস্তোরাঁর
বাইরে কাঁচের জানালায়। বললাম ,
“ আর একটা কফি দিতে বলি ? ” বললে ,
“ না , এবার যেতে হবে। তোমার জন্য চিন্তা হয়। ”
তাকিয়ে রইলাম , তুমি চলে গেলে
আবার কবে আসবে নীলাঞ্জনা ?
0 মন্তব্যসমূহ