পোস্ট বার দেখা হয়েছে
মাতৃহৃদয়
গভীর রাতে কবিতার খাতা থেকে বেরিয়ে আসে একটা মানুষ....
লোভ,লালসা, বাসনার আগুনে ছারখার একটা অগ্নিশিখা....আর কিছুই নয়,
অনুভূতি গুলো ভোঁতা হয়ে যাওয়া শূন্য দৃষ্টিতে
আশ্রয় খোঁজে,
মাথার ভেতরের জঙ ধরা কারসাজির মেশিনে ক্লান্তি....
একটা আস্ত মন শুধু সে আর কিছু নয় যেন...
ছলকে উঠা লাভার উদ্গিরণ ঝরে পড়ে চোখ বেয়ে......।।
ছারখার করে ফেলতে গিয়ে যেন থমকে দাঁড়ায়,
তার মাতৃ জঠর আরো একবার দমিয়ে দেয় তাকে...
মনে করিয়ে দেয়...সে মা..প্রকৃতির মতোই সর্বংসহা
কুঁকড়ে যায় যেন সে প্রসব যন্ত্রণায়.......
কেঁদে কঁকিয়ে উঠে.....মাথা গুঁজে হাঁটুতে.....
ভাবে সে......আর যা কিছুই হই সব কিছুই সবার বাদে।।
আদিতেই আমি মা....অন্ত যে হয় না মায়ের!!!
মা যে অনন্ত বারিধারার মতো শান্তিদায়িনী,
বন্যার বারিধারার মতো উচ্ছাস ভাসিয়ে নিয়ে যায়,
কাঠফাঁটা মাটির মতো বুকে মায়ের মন....
সিক্ত হয়ে যায় পরম মমতায়।।
===
আপোষের খেলা
আপোষ করছিলাম সেদিন জীবনের সাথে...
বুঝতে শিখেছিলাম যেদিন একটা হেঁচকা টানে ফেলবে মৃত্যুর হাতে।
আপোষ করেছিলাম সেদিন আপনেদের সাথে...
বুঝেছিলাম ওরা ছেড়ে গেলে...একাকিত্বের বিষাদ কিনব বিকিকিনির হাটে।।
আপোষ করেছিলাম এক অমারাতে বাস্তবের সাথে
শ্রান্ত বিধ্বস্ত আমি...অস্ত্র ছেড়েছিলাম দ্বিধা দ্বন্দ্বের সাম্রাজ্যে।
আপোষ করেছিলাম অলীক কল্পনার সাথে...
বুঝেছিলাম যেদিন বাস্তবতার রৌদ্রতাপে সবাই কল্পনার ছায়া খোঁজে।।
আপোষ করে কান্না হাসির সাথে আড়ালে...
কান্না ডুব দেয় চোখের সাগরে, ঠোঁটের চিরকুটে হাসি করে দস্তখত।
আপোষ করে ইচ্ছেরা সংস্কারের জটিল বাঁধনে...
হোঁচট খায় প্রজাপতি মন, পরিস্থিতির কাছে দেয় দাসখত।।
আপোষ করে না হয়তো সত্যেরা মিথ্যের সাথে...
তবু মিথ্যে কেন টুঁটি চেপে ধরে সত্যের,বলি হয় কতো প্রাণ।
এমনি চলতে থাকে বিকিকিনির খেলা...
জীবনের উপন্যাসে ক্লাইমেক্সে কখন চলে আসে বিদায়ের ফরমান।
=====
মাটির প্রতিমা
মেয়েটি হাতড়ে ফেরে কি জানি কি মায়াজাল
মেয়েটি খুড়তে থাকে শক্ত পাথুরে মাটির পরত...
অবাক হয় সে হৃদয়ের পলিমাটির কি পড়েছে আকাল!!!
সে খুঁজে পাঁচটা আঙুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে..ডেকে যেন বলে
কঙ্কালের ভেতরের মানুষটাকে দেখো...
হার,মাংস শিরা উপশিরার জটপাকানো শরীরে দেখবে আর কত!!!
খোঁজে সে হন্ন্যে হয়ে সেই মায়াময় আকাশ...
শুষে নেবে যে সব যন্ত্রণা ব্লটিং পেপারের মতো!!
মেয়েটি পাথুরে চোখে খুঁজে শীতলপাটির স্পর্শ
লণ্ঠনের আলোয় জড়িয়ে রাখা নকসি কাঁথার ওম,
সে নিজেকে মেরে ফেলে রোজ,,, রোজ,,, রোজ ভাবনাতে গলা টিপে...
আরএকটা আনকোরা মানুষ ভ্রুণের হবে বলে অঙ্কুরূদ্গম।।
মেয়েটি আদুরে সেই নিবিড় ছোঁয়ায় প্রাণ খোঁজে...
হাতের মুঠোয় ধরা হাতে খোঁজে বাঁচার অক্সিজেন সিলিন্ডার,
শরীরের প্রতিটি ইটের অনুভূতি দুমরে মুচড়ে ছুড়ে ফেলে ডাস্টবিনে...
দেখে রোজ ব্যথা বিক্রি হয়, সুর করে বেচে যায় পথের ধারের ভেণ্ডার।।
মেয়েটি খোঁজে মাথায় বিলিকাটা হাত, উদ্বিগ্ন চোখ
ধুলোবালি,স্বেদ লালসায় আকণ্ঠ ডুবে থাকা শরীর ধুয়ে দেবার সাবান,
নিখোঁজ হতে হতে স্তব্ধ রাতের নিশুতি আঁধারে....
চোরাবালিতে আপাদমস্তক ঢেকে... ইস্তেহারে জানাতে চায় ডুবন্ত আরমান।
মেয়েটি মাটির প্রলেপে ডুবে থাকা জ্যান্ত দেহে...
আজন্ম পিপাসার ঠোঁটে ছোঁয়ায় সংজ্ঞা হারাবার হেমলক...
সে তবু নিজেকে নিজের মাঝে হারাতে পারে না...
ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা চিতার আগুনে হৃদয়টা জ্বলতেই থাকে ধকধক।।
0 মন্তব্যসমূহ