দর্পণ || আলোচনা || লেখার সাথে সেল্ফি পোস্টের প্রয়োজনীয়তা || পর্ব -৫




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

নবনিতা সই


যেকোন মানুষ নিজের ওয়ালে সেলফি দিয়ে পোষ্ট করতেই পারেন সেটা তার নিজস্ব পরিধি৷ কিন্তু কোন সংযুক্ত পরিবারে সেলফি নিরথর্ক৷ কিছু লেখার সাথে কিছু ছবি যেন মিলেমিশে যায় , অর্থবহ হয়ে ওঠে ৷ কিন্তু যেকোন কবিতা যখন কবির মনের ভাব ব্যক্ত করে সেখানে ছবি নিস্প্রোজন ৷ আমি নিজেও কবিতার সাথে কোন ভালো শিল্পকলা অথবা প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি দিতাম , এই পরিবারের স্বনামধন্য কবি সায়ন্তিকা ঘোষাল কবিতার সাথে অপূর্ব ছবি পোষ্ট করেন খুব ভালো লাগে ছবিগুলো৷ তবুও আমি বলবো গ্রুপে কোন লেখার সাথে ছবি দেওয়া উচিত না৷ ধন্যবাদ৷


 নীলাঞ্জনা ভৌমিক 


কোনো সৃষ্টির ( কবিতা,গল্প,নিবন্ধ ইত্যাদি ) সঙ্গে সেলফি দিলে সৃষ্টির থেকে নজর সরে সেলফির দিকেই নজর বেশি যায়। সৃষ্টি আর ছবি একই মর্যাদা পায় না। আমার মতে কবি বা লেখকের পরিচিতি প্রথমে তাঁর রচনার মাধ্যমেই হওয়া বাঞ্ছনীয়।

 
কুমকুম চৌধুরী


লেখার সাথে সেলফি পোস্ট করলে সৃষ্টির মূল্য কমে যায় বলে আমার মত।সৃষ্টি সৃষ্টির মত থাক না।সেখানে নিজের ছবি পোস্ট করলে,দারুন লাগছে তোমায়, gorgeous,you are amazing,you are too sweet..জাতীয় কমেন্ট আসে।লেখা অধিকাংশ বন্ধু পড়েই না।হ্যাঁ সেলফির সাথে দুলাইন লিখে পোস্ট হোক না অসুবিধা নেই,কাপস্যান থাকুক।লেখার সাথে অর্থবহ কোন ছবি হতেই পারে যা তার অর্থকে আরেকটু ভালো করে তুলে ধরে।আমি নিজের ছবির সাথে লেখা পোস্ট করার বিরোধী তাতে আমার লেখায় 10টা কমেন্ট এলেও ভালো।


 আরতি ধর


লেখার সাথে সাযুজ্য রেখে কোনো ছবি দেওয়া যেতে পারে তাতে লেখাটি আরও অর্থবহ হয় বলে আমার মনে হয়, তবে সেলফি দেওয়া অর্থহীন। একান্ত নিজস্ব মত।


 সুজাতা সরকার


লেখার সাথে সেলফি দিলে লেখার গুরুত্ব কমে,অনেকের দৃষ্টি তখন শুধুমাত্র সেলফির দিকে ঘুরে যায়।

লেখাটি তখন প্রধান্য পায়না ,হয়তো লেখাটি খুব সুন্দর বা বাস্তব অথবা বার্তাবাহী তবুও সেটির প্রতি পাঠকের মনযোগ আকর্ষিত হয়না, যতটা তারা আকৃষ্ট হন উক্ত সেলফির প্রতি।

 মনোজ কুমার রথ

সব জায়গায় নিজের চেহারা দেখানোর প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই আমার অভিমত; কবিতা,গল্প,প্রবন্ধ,,,, ইত্যাদি যেকোন সৃষ্টিই হোক না কেন, তারই একটা নিজস্ব চেহারা আছে,সৌন্দর্য আছে- আর সেল্ফি (নিজস্বী) তো সৃজনশীল ব্যক্তির নিজস্বী। পাঠক-পাঠিকারা তো ব্যক্তির সৃষ্টিকে দেখতে চান,ব্যক্তিকে তো নয়। ব্যক্তির নিজেকে দেখানোর জন্য লেখার সাথে নিজের ছবি পোস্ট করার প্রয়োজনীয়তা নেই; তার জন্য তো সেল্ফি কন্টেষ্ট হয়, সেখানে নিজের ছবি পোস্ট করে সুন্দর সুন্দর,লোভনীয়,গালভরা মন্তব্যে ভাসলেই হল,,, লেখা বা সৃষ্টির সাথে সেল্ফি ( নিজস্বী) কেন? লেখা বা সৃষ্টির উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে হবে নিজের ছবি দিয়ে?


      আগে লেখা তারপরে সেল্ফি, লেখা বাদ দিয়ে ব্যক্তির কোনো গুরুত্ব নেই; লেখা বা সৃষ্টির মধ্য দিয়েই ব্যক্তির পরিচিতি ঘটে। লেখা বা সৃষ্টির সাথে সেল্ফি জুড়ে দিলে লেখা বা সৃষ্টিটি তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে, সেল্ফিটিই প্রায় সমস্ত আলো শোষণ করে নেয়, সৃষ্টিটি পড়ে থাকে অন্ধকারে! ফলে প্রায় ক্ষেত্রেই লেখাটির জন্য সে'রকম কোনো সুন্দর বা গঠনমূলক মন্তব্য কমেন্ট বক্সে জমা না হয়ে সেল্ফিটির জন্যই বেশি কমেন্ট জমা পড়ে, কারণ বেশিরভাগই সেল্ফিটি দেখেই লাইক ও গতানুগতিক কমেন্ট করে ছেড়ে দেয়, লেখাটিকে তাঁর দৃষ্টি ছুঁয়েও দেখে না। সুতরাং লেখা বা সৃষ্টির সাথে সেল্ফি (নিজস্বী) পোস্টের প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই আমি মনে করি।

 সুজিত চক্রবর্তী

লেখার সাথে সেল্ফি বা নিজস্বী দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আজকের বিতর্ক সভায় এসে প্রথমেই জানাই : আমি মনে করি এর কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই , যদিও সর্বক্ষেত্রে তা অপ্রয়োজনীয় তাও বলছি না ।

        এখানে  অন্য কোনও ছবি দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় নি কথা প্রসঙ্গে বলি , ফেসবুকে অনেকে লেখার সাথে  ছবি ব্যবহার করছেন এবং সেটা সর্বক্ষেত্রে আমার অপছন্দের না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আছে।  


বিস্তারিত ব্যাখ্যা নীচে দিলাম।  


      মনে রাখতে হবে , এ কালের মানুষ টিভি দেখতে দেখতে বড় হয়েছে। তাই ছবি সহ লেখা তাকে বেশি আকর্ষণ করে। অর্থাৎ , তারা ছবি ও ছড়া একসাথে দেখতে ভালবাসে । হয়তো এইজন্য  বিশেষ করে অনেক কবি তাদের কবিতার সাথে ছবি ব্যবহার করছেন। তার মধ্যে কিছু ছবি বেশ অর্থপূর্ণ হওয়ার কারণে কবিতায় এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে। সেগুলো মোটেই খারাপ নয় । আমার মনের একটা কথা এখানে যোগ করি। আগেকার দিনে কবিরা কবিতায় ছবি আঁকতেন ,সেই কবিতা পড়ে শিল্পীরা ছবি আঁকতেন। এখন অনেক গ্রুপে ছবি দেখে কবিতা লেখার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় । আমি নিজেও এতে অংশ নিয়েছি । মন্দ লাগে 

নি । 


             সেল্ফি দিয়ে কবিতা যে কয়েকটি দেখেছি বলে মনে পড়ছে , তাতে নারী মুখের ছবিই মনে আসছে। পুরুষ কবি বা লেখকেরা সেল্ফি সহ লেখা পোস্ট করেন কিনা আমার জানা নেই অথবা বলতে পারেন, দেখেছি বলে  মনে পড়ছে না। 


           যতদূর মনে পড়ে , সব সেল্ফি যে লেখিকা বা কবির নিজের তা আমার অন্তত মনে হয় নি । বহু ক্ষেত্রেই দেখেছি লেখা অত্যন্ত নিম্নমানের হলেও তার রিয়্যাকশন বা কমেন্টের ঘাটতি নেই । কেউ যেন মনে না করেন যে ঈর্ষা থেকে আমি কথাগুলো বলছি ! কারণ, কেউ কেউ সেখানেই বলেন যে সুন্দরী নারীর ছবি এখানে অর্থহীন। আবার একথাও সত্যি সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র। তাই আমাদের চোখ চলে যায় ওই দিকে। আর এই লেখা এই ভাবে অনেকের নজর কাড়তে সক্ষম হয়। তবে যদি লেখা নিম্ন মানের হয় তবে পাঠককে হতাশ হতেই হয় , অবশ্য যদি সেই পাঠকের সাহিত্য বোধ থাকে।  


            বিপরীত দিক থেকে দেখলে এর একটা উপযোগীতা আছে বলে আমার মনে হয়। মনে করুন , লেখা উন্নত মানের হলেও তা পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সুন্দর মুখশ্রী যদি পাঠককে আকর্ষণ করে , তাতে আপত্তির কিছু নেই । আজকাল যখন  বিখ্যাত লেখকের লেখা পড়ার মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে , তখন অখ্যাতদের লেখা কে পড়বে বলুন তো ! 


        সবশেষে আর একটা কথা বলি। বই প্রকাশের ক্ষেত্রে কিন্তু লেখকের ছবি সহ সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়াটাই দস্তুর। দর্পণ ই-মাগাজিন সহ অনেক প্রিন্ট ম্যাগাজিনেও

এই প্রথা অনুসরণ করা হয়।  সেই কারণে ,  

এই প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ অথবা না'তে দিতে বললে কিছুটা মুস্কিলে পড়তে হবে বলেই আমার মনে হয়।

অরিজিৎ রায়

একটি কথাই মনে হয়, লেখায় কনফিডেন্স কম থাকলে তখনই সেল্ফি অথবা অন্যান্য অপ্রাসঙ্গিক ছবির পোস্ট দেখতে পাই। তবে লেখার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছবি পোস্টালে লেখাটি সবার কাছে কৌতূহলের বিষয় হয়ে ওঠে এবং তাতে অনেক বেশী সংখ্যক মানুষ লেখাটি পড়ে ফেলে।

 তসলিম পাটোয়ারি


সাহিত্য দর্পণ বলতে বুঝি, লেখাকে সবার মনোদর্পণের সামনে দাঁড় করানো,ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার জন্য।  লেখার মতো লেখা সবসময় কালজয়ী যা লেখককে ছাড়িয়ে যায়। অন্ধ হোমার মিল্টনের মুখচ্ছবি ব্যথিত করবে কিন্তু তাঁদের লেখা অনন্তকাল প্রেরণা যোগাবে। সুতরাং ছবি দিয়ে লেখাকে ঢাকা অনাবশ্যক মনে করি।

 রাণা চ্যাটার্জী

এ যেন অনেকটা প্যাকেজিং,দৃষ্টি আকর্ষন করার মোড়ক,সেটাই তো অবাক লাগে লেখা টা পাঠক দের পড়তে দিলেন,না হয় সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কবিতা বিষয়ক ছবি দিলেন তাবলে নিজের ছবি কেন!! এতে পোস্ট দাতার ভাবখানা নিয়ে সত্যিই গবেষণার বিষয় । এমনও দেখেই চলেছি,কবিতা সহ সেলফি দেওয়া পোস্টে পাঠক পাঠিকা বৃন্দ ঠিক কি কমেন্ট দেবেন,কতখানি লম্বা তৈল মর্দন সহযোগে কমেন্ট হবে এক আধজন সেটাও লিখে পোস্ট করতে ফোর্স করতে থাকেন...সব শেষে এটাই বলবো আজব এক পাগলা গারদ এই ফেসবুক,ইগো,দ্বন্দ্ব,বড়াই,সেলফি ম্যানিয়া সব কিছুর অফুরান প্রাচুর্য্য ভরা ফেসবুক বসুন্ধরা ।

 ধর্মেন্দ্র রাওয়াত

অ-এ অজগরটি আসছে তেড়ে ,আ -এ আমটি আমি খাব পেড়ে অথবা গ -এ গণেশের যদি ছবি থাকে তবেই শিশুর অক্ষরজ্ঞান হয় বা সুবিধে হয় ।   শিশু বড় হতে হতে এবং যত বড় হয় ছবি হারিয়ে যায় অথবা সরিয়ে নেয়া হয়। আর অ, আ অথবা গ লেখার অক্ষর -এ  বইয়ের পৃষ্ঠায় জ্বলজ্বল করতে থাকে। কবি যত বড় হয় ,যত বড় হতে থাকে, ধীরে ধীরে চিত্র হারিয়ে যায় শুধু  লেখা পড়ে থাকে এবং আমার মনে হয় কবি যত বড় হতে থাকে  লেখাও আকারে ছোট হতে থাকে। মৃন্ময় তখন হয়ে যায় চিন্ময়। 


তবে পক্ষে বলি 

লেখায় ছবি নিরর্থক নয়, প্রয়োজনে প্রয়োজনীয়।

মলয় দাস

আমার প্রোফাইল পিকচারে একটা কথা লেখা আছে মানুষ আমার কবিতা না আমার ছবি কাকে বেশি পছন্দ করে এখানেই বোঝাতে চেয়েছি উত্তর আধুনিক দুবোর্ধ‍্য কবিতার মতো যে ছবি না কবিতা কোনটা পোস্ট করলে মানুষ বেশি লাইক কমেন্টস দেয়।বাস্তবিকই ছবির তুলনায় লেখায় লাইক কমেন্টস অনেক কম হয় কারন ছবিটা দেখেই লাইক করা কয়েক সেকেন্ডের ব‍্যাপার কিন্তু লেখা পড়ে তার মর্মার্থ উদ্ধার করে লাইক করা থেকে  অনেকেই দূরে থাকতে চান তারও বিভিন্ন কারণ আছে আজকে এটা বাদ দিয়ে বলি সেলফি বলতে আসলে সাধারণ ভাবে নিজের ছবি নিজেই তোলাকে বোঝানো হয় তাই লেখার সাথে অপ্রাসঙ্গিক সেলফি পোস্ট করে দেওয়া কেন বোধগম্য হয় না।আর এখানে সেলফি বলতে যদি বুঝি প্রাসঙ্গিক অপ্রাসঙ্গিক ছবি জুড়ে দেওয়া লেখার সাথে তাতেও লেখার আকর্ষণ বাড়াতে অনেকেই করেন ব‍্যক্তিগতভাবে মনে হয় লেখার প্রয়োজনীয়তাই যদি কাম‍্য কোন ছবি সেখানে কাম‍্য নয় কেনোনা যারা ফটোগ্রাফি করেন বা ছবি আঁকেন তাঁদের সেই ছবির ভিতর দিয়ে দিয়ে অনেক গল্প কবিতা লেখেন তাঁদের মতো করে তাই ছবি লেখার সাথে অপ্রাসঙ্গিক কিন্তু ছবি যদি সেই কবিতার শিল্প মাধুর্য তুলে ধরে তবে কিন্তু কিছুটা প্রাসঙ্গিক বলা যেতেই পারে যেমন বৃষ্টির নস্টালজিক রূপের ছবি নস্টালজিক প্রেম বা বর্ষাকে কেন্দ্র করে কোন কবিতাকে আরো নস্টালজিয়ার রূপ দিতে পারে।তবুও বলবো লেখাকে পাঠকের কাছে তুলে ধরতে শুধু লেখাই যথেষ্ট আর প্রাথমিক স্তরে ছবি আর কবিতা মিলেমিশে পাঠককে আনন্দ দিলে ছবি দেওয়া যায়।পাঠক আর লেখক ভাবুক কীভাবে পারস্পরিক হওয়া যায়।সবশেষে বলি লেখার সাথে সেলফি না হয়ে ছবি পোস্ট করার পক্ষে/বিপক্ষে হলে ঠিক হতো মনে হয়।কেনোনা কবিতা সাথে সেলফি পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক।।ধন‍্যবাদ।শুভরাত্রি।সবাই ভালো থাকুন।

 শিবাজী সান্যাল

সাধারণ ভাবে কোন ছবির প্রয়োজন নেই। তবে দেখছি কিছু লেখক একই ছবি তার প্রতিটি লেখায় পোস্ট করে। এতে পাঠকের কাছে একটি ব্র্যান্ড তৈরির মত প্রচেষ্টা। এও সত্যি এতে লেখা চট করে চোখে পড়ে , আর যদি সে লেখকের লেখা " ভাল " বলে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি পেয়ে থাকে , তা আকর্ষন করে। অন্যদিকে মেয়েদের লেখা , নিঃসন্দেহে বেশি লাইক কমেন্ট পায়, সঙ্গে ছবি থাকলে , তা আরও বেড়ে যায়। আমার মতে ফেসবুকের সবকিছুতেই নানা সমালোচনা ও সমর্থন,  দুপক্ষের মধ্যে হয়ে চলেছে। তাই যার ইচ্ছে সে ছবি লাগাক , যে চায়না সে লাগাবে না। খোলা মাঠ , খোলা থাক।

 তনু ঘোষ

লেখা আর সেল্ফি দুটোর আবেদন আছে এবং অবশ্যই তা ভিন্ন ভিন্ন এ নিয়ে দ্বিমত নেই। কিন্তু শুধুমাত্র লেখার আবেদন, আবেগ, লেখার মেসেজ পাঠকের কাছে পৌঁছোয় খুব ধীরে। যেহেতু আজকের দুনিয়া তথা সোস্যাল মিডিয়াতে তা আরও ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে! এখানে লেখক যত বেশি সেখানে পাঠক তার চার ভাগের এক ভাগও আছে কি না সন্দেহ! তাই--

১) যারা লিখছেন তারা চাইছেন বেশি সমাদৃত হতে, তাই সেল্ফি সমেত লেখা পোস্ট করলে জনপ্রিয়তা বাড়ে। (যদিও লেখার বিচার সেখানে গৌণই থেকে যায়) "খুব সুন্দর " ছাড়া আর কিছু মেলে না। 


২) লেখার বিষয়বস্তু কী? যদি নিজের সম্বন্ধে লেখা হয়, সেখানে সেল্ফি পোস্ট যথাযথ। 


৩) ছবির আবেদন ধরা পড়ে দৃষ্টিতে। এক ঝলক দেখেই আমাদের চোখ আটকে যায়, তাই পাঠক কূলের কাছে পৌঁছোনোর একটি সিঁড়ি মাত্র। 


৪) যারা মনে করেন লাইক কমেন্ট মানেই জনপ্রিয়তা বাড়ছে, সেই ধারণা তাদের ভাঙবেই ভাঙবে। সমাজসচেতনতা বা কোনো প্রতিবাদী লেখায় সেল্ফি পোস্ট মানে নিজেকে হাসির খোরাক বানানো। 


৫) কিছু শ্রেণী ভাবে লেখা পোস্ট মানেই কিছু না কিছু ছবি দিতেই হবে, তখন হুটহাট সেল্ফি সহযোগে পরিবেশন! ব্যস😁 


লেখালেখি একটি নিজস্ব শিল্প, তার সাথে প্রাপ্তবয়স্কদের সেল্ফি হাস্যকর। তবে সাযুজ্যপূর্ণ ছবি আকর্ষণীয় এবং অর্থপূর্ণ।

 শিবানী বাগচী 

ছবি তো আঁকা হবে শব্দে! কলমের টানে আনকোরা পাতায় অনুভবী বর্ণনায় ফুটে উঠবে প্রাঞ্জল সতেজ মনের ছবি। আমি কি ভাবছি সেটাই স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠবে ভাবনার মোড়ক খুলে। আর পাঠক মন অবাক চোখে, শব্দের ভেলায় ভাসতে ভাসতে দেখবে সেই সতেজতায় ভরা কল্পিত ছবি খানা। সে ছবি দুঃখের হোক বা সুখের, করুণ হোক বা আবেগের। যে ছবিতে রঙ তুলি লাগবেনা, লাগবে না কোন সেল্ফি, লাগবে না কোনো ছবি। ছবি তো অজান্তেই ফুটে উঠবে অক্ষর মালা হয়ে শব্দ দলের ভেলায়, আর পাঠক সৃষ্টির অতলে ডুব দিয়ে শুক্তি ছেঁচে এনে তা প্রত‍্যক্ষ করবেন, বিশ্লেষণ করবেন, করবেন সমালোচনা ; সার্থক হবে সেই সৃজন।


( তাছাড়া লেখার সাথে সেল্ফি দিয়ে কবিতা বা গল্পটা তাৎপর্যময় কখনোই হয়ে ওঠেনা। আমি সুন্দর থেকে প্রতিদিন আরো সুন্দর হয়ে উঠছি, অথবা সকলকে দেখাতে চাই যে, আমি আরো ব‍্যক্তিময়ী হয়ে উঠছি প্রতি মুহূর্তে। বিষয় বহির্ভূত একটা ছোট্ট ইচ্ছে, যে ইচ্ছেটার মানে আমি আজও খুঁজে পাইনি। তবু আধুনিক প্রযুক্তিকে ভালোবেসে সেল্ফির মাধ‍্যমে নিজেকে 

তুলে ধরতে ক্ষতি কি, তার সৃষ্টিকে ছুঁয়ে? )


সকলকে জানাই শুভেচ্ছা 

ও শুভকামনা


অমল ব্যানার্জী 

এক কথায়,

লেখার সাথে সেলফি সাহিত্যে বেমানান। 

এর চাইতে যাই লিখি সারবস্তু ঐটাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ