পোস্ট বার দেখা হয়েছে
অবমানবের পটভূমি
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া পাখিদের কথা জানতে চায়নি কেউ
আমাদের স্মরণ আমাদের মরণ মানতে চায়নি কেউ
আখের গোছানোর দলে ছুটে ছুটে গেছে তারা
ছুটে ছুটে গেছে তারা কুকুরের মত------
রসটুকু চেটেপুটে খাবে যারা।
অভুক্ত পথিকের সাথে থাকো নাই কেহ
কোন রেখা উঠবে জাগি আমারো লাগি
কোন রেখা অস্তমিত হয় হয়ে জাগ্রত মৃতদেহ।
অভিলাষ মৌনতা গ্রাস করে চেতনাকে
চেতনার বিগ্রহে বিনিদ্র নিকেতন প্রাণশূন্য দাবদাহে,
ধুমকেতুর রচনায় আমিও ছিলাম এক সৈনিক
আমিও ছিলাম রুটিন মাফিক তোমাদের শ্রমিক দৈনিক।
ভুলে গেছো সময়টা, ভুলে গেছো; সেই কাল
অবমানবের বিদায় ঘন্টা বাজবে
আসবে গোধূলি লগনের প্রাক্কালের সেই সোনালী বৈকাল,
ভালো থেকো প্রতিপক্ষ; ভালো থেকো প্রতি লক্ষ্য
ভালো থেকো সমকক্ষ; ভালো থেকো ধৃতরাষ্ট্র
তোমাদের শুভ কামনায় আমি আজও বেঁচে আছি, হইনি অভিনষ্ট।
=====
অগ্রবর্তী প্রত্যয়
পথে নামো; পথে নামো; পথে নামো; হে পথিক।।
পথে নামো এবার
এখন যে আর নেই সময় ছায়ায় দাঁড়াবার
করো নাকো ভয়, হবে; হবে জয়।।
ঘুচে যাবে কালো জ্বলবে যে আলো
নয়; নয়; নয়;............
ইহা দাঁড়ানোর সময় নয়।।
কাঁধে কাঁধ বাধি আজি
চলো যাই দল বাধি।।
সত্যেরে দেব আজি আশ্রয়
নাই; নাই; নাই; নাই করি ভয়
রাক্ষস আসে ঐ দিকে দিকে ধেয়ে।।
শকুনের দল ঐ আছে দেখো চেয়ে।
সিংহ যে ব্যস্ত; খাবে গিলে আস্ত
চলো রাখি মনোবল
এসো করি কৌশল।
ঐ দেখো ঝলমল চারিদিক
জয়; জয়; জয়; জয় মোদের নিশ্চিত।
====
নিষ্প্রাণ লোকালয়
জনপথে এগিয়ে চলে আমাদের নক্ষত্র
জনপথে এগিয়ে চলে জনতার স্রোত
জনপথে এগিয়ে চলে জনতার ক্রোধ
জনপথে এগিয়ে চলে আমাদের বোধ
জনপথে এগিয়ে চলে আমাদের হতাশা
জনপথে এগিয়ে চলে আমাদের প্রত্যাশা
জনপথে হারিয়ে যায় আমাদের নৈতিকতা
জনপদ গিলে খায় আমাদের লৌকিকতা জনপথের মোহনায় হারিয়ে যায় নাগরিক অধিকার
জনপথ;জনপথ;জনপথ।জনপথে সবাই নির্বিকার।
====
আজ একুশে জুলাই
আজ একুশে জুলাই
গতকাল রাত থেকেই শহরের প্রতিটি রাস্তায়
যাত্রীশূন্য শত শত বাস লরি; টেম্পু;----
অটো-রিক্সা; ও হাতে টানা রিকশা দাঁড়িয়ে আছে
রাস্তাঘাট ;বাস ;ট্রাম ;সব বন্ধ।
পাশের বাড়ির পরিচারিকা মাসিমার মুখে শুনলাম
আজ সকল রিক্সাওয়ালারা----
একশো টাকা করে চাঁদা দিয়েছেন;
এক প্রকার দিতে বাধ্য হয়েছে;
অবশ্য একটা বিরিয়ানীর প্যাকেট পাওয়া যাবে হয়তো।
থলে নিয়ে এক প্রতিবেশী বৃদ্ধ বাজারে গিয়ে দেখেন
সব দোকানের ঝাপ বন্ধ
ওরা সবাই ধর্মতলায় চলে গেছে
শুনলাম গতকাল কোন এক নেতা ওদেরকে বলে গেছেন
"আগামীকাল দোকান খোলা রাখলে সারা
জীবনের জন্য দোকান বন্ধ হয়ে যাবে"
না খেতে পেয়ে মরার ভয়ে সকল দোকানদারেরা দোকান বন্ধ করে ধর্মতলায় গেছেন।
আজ একুশে জুলাই
ভোর থেকেই অসুস্থতায় কাতরাচ্ছে মুমূর্ষু রোগী
মাগো... বাবা-গো.. প্রাণটা বেরিয়ে গেল... বলে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর থেকে আর্তনাদ বেরিয়ে আসে,
অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার রাস্তাটাও বন্ধ।
আজ একুশে জুলাই
সারাদিন হই হুল্লোড়
১৯৯৩ এর এই দিনে শহীদ হয়েছিল যাঁরা,
আসল ইতিহাস পড়ে আছে চাপা
তাঁহাদের ডাকে কেউ দেয়নিকো সারা।
মঞ্চে আলোকিত উপবিষ্ট ভাষণ
দিনশেষে পড়ে থাকে সব আয়োজন
পড়ে থাকে শূন্য মঞ্চ; পড়ে থাকে শুন্য আসন
যে পতাকার জন্য এত লড়াই--
যে পতাকার জন্য এত বড়াই--
ধুলিময় রাস্তায় পড়ে আছে দেখো;
খাচ্ছে গড়াগড়ি আজও পতাকা সেই-ই,
তলিয়ে যায় দিনটির মহানুভবতা
হয়তো এভাবেই আগামী দিনেও অনবরত চলবেই;
আজ একুশে জুলাই।
=======
তেপান্তরে রূপান্তর
এখনো মাঠের সবটুকু---
গ্রাস করেনি ঐ রাক্ষুসে প্রাচীর
এখনো.............
প্রাচীরের ফাঁকা দিয়ে সবুজ ঘাস গুলো দেখা যায়,
এখনো প্রাচীরের আড়াল হতে ভেতরের ভেজা
ঘাসের ডগায় শিশিরের কণা ঝলমল করে।
এখনো প্রাচীরে মোড়া মাঠটা------------
টাকার বস্তা দিয়ে মুড়ে ফেলা যায়নি
তবে চেষ্টা চলছে খুব জোর।
খুব তাড়াতাড়ি এই মাঠের সকল ইতিহাস পাল্টে যাবে
এই মাঠের ঘাসের জন্মদাতা---------------
সেই মাটির স্তর পাথরে পরিণত হবে
এখানে আগামীতে আর কখনো সবুজ ঘাস দেখা যাবে না।
এখানে আগামীতে আর কখনো-------------
ঘাসের মাথায় শিশিরের কণা করবে না খেলা
এখানে আর কোনদিন-----------
ক্ষুধার্ত গরু-ছাগল ছুটে আসবে না খিদে পেলে।
অফুরন্ত অর্থভাণ্ডারের ঝলকানিতে এই মাঠের সম্পূর্ণটাই এক রাজকীয় চাকচিক্যে মোড় নেবে
আগামীতে এই মাঠে গড়ে উঠবে----
একাধিক যৌথ অট্টালিকা,
গড়ে উঠবে জনবহুল কত বিনোদন মহল
শুধু নেবে বিদায় প্রাণ প্রিয় অন্তরের স্পর্শ সকল।
কত কবির কবিতা লেখা হতো এই মাঠে বসে
কত গায়ক গানের ছন্দ খুঁজে পেতো এই মাঠে
কত সুরকার আকাশের সুর------------
মাঠের মাটিতে বসে থাকা ঘাসের সাথে মেশাতেন;
কত বাউল তার মৃত একতারায়--------------
আবার পুনর্জীবিত হয়ে উঠতেন এই মাঠের`পরে
সব ইতিহাস পাল্টে যাবে আজ,
কাল থেকে এই মাঠ; এই ভূমি হবে প্রাণহীন
হবে রূপান্তর জড়তায় ভরা উন্নত সমাজ।
1 মন্তব্যসমূহ
আমার লেখা একগুচ্ছ কবিতা দর্পণের এই অনলাইন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয় আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত অনুভব করছি। দর্পণ ওয়েব ম্যাগাজিনের সকল পাঠক পাঠিকাদের প্রতি জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন।
উত্তরমুছুন