দর্পণ ফেসবুক সাপ্তাহিক নির্বাচিত কবিতা




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

শাস্তি প্রকৃতির

সুমন ঘোষাল


নিশ্চিন্ত পাহাড়ী পথ একদিন

চেঁচিয়ে ওঠে তীব্র আর্তনাদে ।

কেউ তাকে দিয়েছে ধাক্কা

ঠেলে দিয়েছে অতল খাদে ।


সামনে দাড়িয়ে দেখছে পাহাড়

দেখছে পাথুরে পাহাড়ী ঝর্না ।

গাছ, মাটি দুজনেই বলে দায়ী আমরাও

সব দোষ একা ওর না ।


শিক্ষা তাকে দিয়েছে প্রকৃতি

অনেক কাল শুনানি পরে ।

কি দরকার ছিল সাজতে ওর

পাপী মানুষের প্রয়োজন তরে ।


ভালই ছিল বন জঙ্গল

ভালই ছিল বন্য প্রাণীকুল ।

কাঁচা রাস্তার পাকা হবার

ভাবনাটাই ছিল ওর ভূল ।


মানছি আমি মানুষ লোভী

ভীষণ ভাবে অবুঝ ওরা ।

পাথুরে রাস্তার দরকার ছিল কি

লোভে পরে ওদের কথায় ওড়া ।


বলেছিলাম আমি "তোমার ভুলে

পড়বে বন্য প্রাণী সংকটে ।

নরম হয়োনা তুমি এক্কেবারে

রাগ দেখাও শুকনো খটখটে ।"


শুনলনা ! শুনলনা সে আমার কথা

সেজে ওঠার সে কি বহর ।

ওর ভুলের মাশুল দিয়ে

গুনছে বন্যেরা মৃত্যু প্রহর ।


বাড়লো গাড়ির যাওয়া আসা

পাহাড়ী মসৃণ রাস্তা ধরে ।

গাছের কাঠ, পশুর ছাল

মানুষ করছে লোপাট গায়ের জোড়ে ।


তাই রাস্তাকে দিলাম শিক্ষা আমি

পাপী মন আর লোভের তরে ।

দিলাম ধাক্কা পাহাড় থেকে

দেখি মানুষ কিভাবে রক্ষা করে ।


কাঠ বোঝাই গাড়ির সামনে

ধসে গেলো রাস্তা পাহাড় থেকে ।

জানবেনা মানুষ এই শাস্তি প্রকৃতির 

শুধু "ধস নেমেছে" বলবে হেঁকে ।।


=====

ধ্রুপদী

চন্দ্রনাথ 


লিপস্টিক আর ঠোঁট যখন একই দামে বিকোয়-

তখন একটাই মাত্র হাড় ভাঙ্গা নিয়ে পুরুষ হাহাকার করে ওঠে ;

শিড়দাড়া কে খুঁজে ফেরে , অফিস ফেরত কার দূর্ঘটনায় যেটা গুড়ো-গুড়ো! 


মাসমাইনের বাইরে  বাড়তি  টাকা গুঁজতে চাওয়া এক পুরুষ হাত বুঝিয়ে দেয় কাঁচা মাংস বহুমূল্য ! 


সংসার টা তো চালাতে হবে! 

পঙ্গু বর, অবুঝ শিশু.... 

সদর দরজায় হলুদ ট্যাক্সি নামিয়ে দেওয়ার পর একই সাথে ভিজতে থাকে অশুচি শরীর আর গোলাপি মহাত্মা গান্ধী! 


ফ্লাইওভারের নীচে রাত যত গভীর হয়, ততই বাড়ে জুঁই ফুলের গন্ধ ;

সারি সারি রং-বেরং চারচাকা, 

লালবাতি'র আনাগোনা... 


"মর তুই " হঠাৎ ই শিড়দাড়া টানটান! 


আড়াকাঠ থেকে এখন ও খুলে নেওয়া হয়নি রঙচটা ফাঁস!! 

=====

CONTACT

Milka J. Šolaj

Belgrade, Serbia


That difficult distance

crucified longing,

until I meet you

have to wait...

I want to fly

i can't fly

tears from my eyes

they flow like a river.


  I'm not writing about the wind

about flowers, about a bird,

about a kiss from long ago

in the starry night...

I want to touch

your gentle hands

And just to see

your dark eyes.


I want to tell you

to love you madly

but in the moment

I'm at a loss for words...

Just a touch of the hand

can help me

only he can do it for you

to say everything without words.

=====

সন্দেশ বার্তা 

স্নেহাশিস পালিত


সোনাঝরা মিষ্টি সকাল, দুটি শালিক,

চা'য়ের মৌতাতে সঙ্গী খবরের কাগজ।

পড়ার মেজাজে অলস সময় কাটে বেশ,

আভিজাত্যের ফেলে আসা অতীত ভগ্নস্মৃতি!


মননশীল খবরের আশা নিয়ে -

তন্য তন্য খোঁজা পাতার পর পাতা!

হতাশার দীর্ঘশ্বাস আর অন্তরের অতৃপ্তি... 

ব্যক্ত হয় চোখেমুখে  নিদারুণ অস্বস্তিতে!


যেন পয়সা দিয়ে অখাদ্য খাওয়ার মতো!

হাজার বিজ্ঞাপন, ধর্ষন, হত্যা, ডাকাতি...

সেলিব্রিটি, মন্ত্রীদের সাত কাহন, রূপচর্চা, 

যেন এক এবং একমাত্র খবরের উপজীব্য!


সম্প্রতি যোগ হলো চাকরি বিক্রি,

চ্যানেলে চ্যানেলে তর্জা, তর্ক বিতর্কের রেশ... 

মধ্যবিত্তের নাকানি-চোবানি খাওয়া

আর বিরোধিদের গালভরা মন্তব্যের ফুলঝুরি।


একটা কিছু পেলেই হলো, কেল্লাফতে -

চলতেই থাকে, শেষ আর হয়না!

খরবপ্রেমীরা অসহায়, ভোগে রুচিহীনতায়,

খবর খাওয়ানোর এক নেশায় মাতে!


নতুন পুরানো, ছোট বড় কত দৈনিক, 

কেউ খবর করে, কেউ খবর খোঁজে!

পরিবেশনের শৈল্পীক ছোঁয়া, প্রযুক্তি... 

জাতে ওঠে না হওয়া কত খবর!


শুধু আন্তরিকতা, দায় দায়িত্ব চাপা পড়ে,

চাপা পড়ে চতুর্থ স্তম্ভের দায়বদ্ধতা... 

তবুও, মেনে নিতে হয় আব আর আঁচিল,

ভোগবাদের অনিবার্য্য উপস্থাপনে!

=====

 অভিসার 

প্রহ্লাদ ভৌমিক 


নদী  কখনও সাঁকো পেরিয়ে গেলে

নীরব শব্দগুলিও সরব হয়ে ওঠে ,

বিব্রত চোখের ভিতরে ক্রমশঃ ভাঙনের ছবি

মায়াবী আলোয় অশ্রুসিক্ত হয়,

জেগে ওঠে যেন কোনও গোপন সংকেত ।


ঢেকে রাখি বহু কষ্টে বিষণ্ণতার সব হাহাকার ।

আমি শিউলি ঝরা শিশিরে শরতের স্পর্শ চাই

ও বাতাসে চাই রৌদ্র-ছায়ার খুনসুটি ;

কখনও রহস্যময়তায় রূপকথার কথকতা

অস্থির হয়ে এলে বাতাসের গায়ে আমি

অন্ধের মতো কান পেতে থাকি ।


বুকের তীব্র ওঠাপড়ায় ঝরে পড়ে

অমল স্মৃতির অস্থির পাতারা,

দু'চোখের পাতাও কেঁপে কেঁপে ওঠে,

গড়িয়ে গড়িয়ে নামে বুকে আজও সিসিফাসের পাথর ;


বুঝি না,অভিমানী কোন তিথির চাঁদ

ছুঁতে চায় স্বপ্নের জোয়ারের জল !


নদী বরং সাধারণ মেয়ের মতোই ধীর, স্থির

ও অচঞ্চল থাক,জেগে থাক আমার ভিতর,

রাত্রিগুলি বাঁধা পড়ুক স্বপ্নের পাকে

আর নিভৃত সমারোহে মুখর থাক অভিসার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ