দর্পণ || কবিতা গুচ্ছ ~ সুব্রত মিত্র




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

অবলুপ্ত মানবতা


যারা ধারা বর্ষ দিয়ে যায় ক্রমাগত

তাদের জীবনধারা প্রশ্নের মুখে

যারা বক্তব্য দিয়ে যায় আমাদের সুখে ও দুখে

তাদের কর্তব্যের গাফিলতি দেখা যায় সর্বত্র চোখে ও মুখে।

যারা পাড়াপড়শির সাংসারিক বিবাদ মেটাতে আসে

তারা নিজেরাই কত মানুষের সংসারে আগুন লাগিয়ে বসে আছে

যারা জনসমক্ষে চরিত্র গঠনের ডাক দেয়

সেইসব মানুষদের নিজেদেরই চরিত্রের ঠিক নেই

এই সমাজে যারা মানবতাবাদী বলে আজ পরিচিত

যাদের মুখে কেবল মহানুভবতা আর রাজনীতির নৈতিক বাণী শোনা যায়

তারা সকলেই পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিতে ডুবে আছে

আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে যারা আদর্শের কথা বলে

তাদের আদর্শ কেবল অর্থ উপার্জন আর স্বার্থের আয়োজন।

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যারা রবীন্দ্রনাথের কথা বলে

তারা রবীন্দ্রনাথ পড়েনি

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যারা নজরুলের কথা বলে প্রশংসা কুড়ায়

তারা গভীরভাবে জানলে এই সময় দাঁড়িয়েও নজরুলকে মানতে পারবে না

যে সকল ছদ্মবেশ মহামানবেরা আজ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী আওড়ায়

তারা আজও বিবেকানন্দের দেখানো পথে চলতে পারছে না

যারা আজ মানুষ গড়ার কথা বলছে

তারা কেউই মানুষ গড়ার কারিগর নয়

তারা সাধু সন্ন্যাসীদের আজ ভিখারি বলে চিহ্নিত করছে

সব তারা গুলো খসে পড়ছে

ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথে মানবতা ঝরে ঝরে পড়ছে।

=====

মাগো আমিও তোমার

                             

           দাদারা করে চাঁদা আদায় ; 

                     অনেকের ইচ্ছায় , অনিচ্ছায় , 

       বুঝিনা এ পুজোর গভীরতা ; মাধুর্যতা কোথায় ?


                  আজকাল ভগবান খোঁজেনা ভক্তি ,

                    খোঁজে কার আছে অর্থের শক্তি

                 নিজের পাপ চাপায় ভগবানের ঘাড়ে ; 

                               উঃ লাগে বিরক্তি ।


                    মায়ের ঘরে হয় বিশৃঙ্খল তাণ্ডব ;

                         বাবার ঘাড়ে রাখে বন্দুক

                       স্বয়ং ভগবানও ফেরাবে মুখ ,

                   দেখো সেদিন মিটে যাবে সমস্ত সুখ ।

               

                             শ্রদ্ধায় মন দাও বাপ ,

         দূরে সরিয়ে রাখ ঐ তেজ অহংকারের উত্তাপ


                              চাঁদা চাঁদা কেন কর ?

          মানুষের কাছে আসো গরীবেরে ভালোবাসো ,


ভগবান আছে দাঁড়ায়ে দেখো মনের কোণে সংগোপনে

নিত্যদিনের গুপ্ত পুজোই পথ দেখাবে ভগবান দর্শনে ,


            আমরাতো মানুষ ; আছে জ্ঞান মনোজ্ঞ

                           তবে কেন করি সৃষ্টি

              ইচ্ছের বিলাসিতায় অভিশাপের যজ্ঞ ?


=======

অবনতির ইঙ্গিত


সমাজে খারাপ মানুষের প্রকোপ বড্ড বেড়ে গেছে

তাদের আনাগোনা আজ সর্বত্র

শুভ ও অ শুভ;

দুঃখ কষ্ট;

সামাজিক আচার বিচারে;

এই ধরনের লোকেরা সর্বত্র, 


বিষের বিষক্রিয়ায়--

এই ধরনের লোকেরা সমাজটাকে বিষিয়ে তুলেছে,

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত ঐতিহ্য

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত শিক্ষা

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যবোধকে।

এই ধরনের বিষাক্ত মানুষেরা---

গ্রাস করছে বর্তমান যুবসমাজ ও আগামী প্রজন্মকে,

বর্তমান সময়ে অসাধু মানুষের পাল্লা ভারী

সাধারণ মানুষ আজ ভীত সন্ত্রস্ত কিট পতঙ্গের মতো

চোরেদের রাজত্বে চোরেরাই আজ; মহারাজ।

যেখানে এনাদের কাহিনী

সেখানে থাকবে অসাধু বাহিনী

এনাদেরই পেছনে ভিড় করে জনতা

অবনতির লক্ষ্যে ছুটে যায় সমাজ।

=====

অবনতির ইঙ্গিত


সমাজে খারাপ মানুষের প্রকোপ বড্ড বেড়ে গেছে

তাদের আনাগোনা আজ সর্বত্র

শুভ ও অ শুভ;

দুঃখ কষ্ট;

সামাজিক আচার বিচারে;

এই ধরনের লোকেরা সর্বত্র, 


বিষের বিষক্রিয়ায়--

এই ধরনের লোকেরা সমাজটাকে বিষিয়ে তুলেছে,

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত ঐতিহ্য

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত শিক্ষা

গ্রাস করছে আমাদের প্রকৃত ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যবোধকে।

এই ধরনের বিষাক্ত মানুষেরা---

গ্রাস করছে বর্তমান যুবসমাজ ও আগামী প্রজন্মকে,

বর্তমান সময়ে অসাধু মানুষের পাল্লা ভারী

সাধারণ মানুষ আজ ভীত সন্ত্রস্ত কিট পতঙ্গের মতো

চোরেদের রাজত্বে চোরেরাই আজ; মহারাজ।

যেখানে এনাদের কাহিনী

সেখানে থাকবে অসাধু বাহিনী

এনাদেরই পেছনে ভিড় করে জনতা

অবনতির লক্ষ্যে ছুটে যায় সমাজ।

=====

ভুল ভাবনায় জীবন ব্যয়


যাদের মনে করতাম তারা খুব ভালো

তারা কেউই ভালো নয়

যাদেরকে মনে করতাম তারা খুব ধার্মিক

তারা কেউই ধার্মিক নয়

যাদেরকে সোজা ভেবেছিলাম

তারা মোটেই সোজা নয়

যাদেরকে বেকা ভেবেছিলাম

তারা কেউই বেকা নয়

যাদেরকে আপন ভেবেছিলাম

তারা কেউই আপন নয়।

যাদেরকে পর ভেবেছিলাম

তারা কেউই পর নয়

যাদেরকে ভেবেছিলাম ভগবান

তারা সবাই শয়তান

যাদেরকে ভেবেছিলাম খুব সচেতন

তারা সবাই পূর্ণ অচেতন

যাদেরকে ভেবেছিলাম ভীষণ সরল

তাদের মন-মানসিকতায় সবচেয়ে গরল

জীবনের স্রোত বয়ে গেছে এ হেন ভুল ভাবনায়

এই নিরুপায় দশায় কাটিয়েছি জীবনের অধিকাংশ সময়

প্রকৃতিতে পাইনি খুঁজে প্রকৃতের নাগাল

পাইনি খুঁজে কোন সমন্বয়।

========

মানুষের ভয়ে


অনেক সত্য লুকিয়ে আছে মানুষের ভয়ে

অনেক মিথ্যে লুকিয়ে আছে মানুষের ভয়ে

অনেক তথ্য হারিয়ে যায় মানুষের ভয়ে

অনেক কথাকেই মুছে দেওয়া হয় মানুষের ভয়ে

অনেক গল্প অপ্রকাশিত থেকে যায় মানুষের ভয়ে

কত কবির কলম থেমে যেতে বাধ্য হয় মানুষের ভয়ে। 


কত ধর্ষিত নারীর আসল খবর হয়নি ছাপা মানুষের ভয়ে

কত পূজারীর ভেঙে গেছে পূজার থালা

ছিড়ে গেছে তার আদর্শের মালা

মানুষের তা হয়নি জানা মানুষের ভয়ে,

ইতিহাসকে ব্যঙ্গ করে দেশকে সাজায় ল্যাংটো করে মানুষের ভয়ে

জঙ্গল হতে আজ পশুও ছুটে পালায় মানুষের ভয়ে

মানুষও আজ পশু হয়ে যায় মানুষেরই ভয়ে

পন্ডিত সেজে থাকে মূর্খ মানুষেরই ভয়ে। 


প্রতিবাদী কন্ঠকে মুছে ফেলে নেতাগণ মানুষের ভয়ে

ঘোলা হয়ে আসে আকাশের রোদ সবকিছু হয়েও হয় না শোধ

মানুষের ভয়েই আজ থেমে থাকে শুভ চেতনার বহিঃপ্রকাশ

মানুষের ভয়ে অসৎ জনরাশির স্রোতের আবহে মাতায় বাতাস। 


মানুষের ভয়েই সবকিছু থাকছে চাপা

মানুষের ভয়েই অগণিত মানুষের গুণের নমুনা যায় না মাপা

মানুষ কেন পায় মানুষকে ভয়

সে কথা এখন ভাববার এসেছে সময়

জেগে ওঠে শুভ সচেতনার সকল মানুষ আর পেয়ো না ভয়

মানুষের দলমত মানুষেরই অভিমত পারে আনতে মানুষের প্রকৃত জয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ