দর্পণ || সাপ্তাহিক নির্বাচিত কবিতা




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

দুর্বলতা 

তাপস দে 


আমি দুর্বল বলেই হয়তো

আমার মধ্যে কোন দুর্বলতা নেই,

বয়েসের সাথে সাথেই শেষ হচ্ছে অভিমানী দুর্বলতা,

মৃত্যুর কাছাকাছি এলে নষ্ট হয়ে যায় শাশ্বত নশ্বরতা,

দুর্বলতা শব্দও বড্ড দুর্বল সেখানে।

বিজ্ঞ লোকের মতে -

ভালোবাসা আর দুর্বলতার বয়েস হয় না।

অনিচ্ছা যন্ত্রণায় বেঁকে যাওয়া চাঁদ জানে

ভালোবাসা আর দুর্বলতা সমার্থক শব্দ নয়।

**************

বিচ্ছেদ রেণু মাখা কবিতা

রীনা নস্কর


বিষাদের সংলাপে ক্যানভাসের বোবা দৃষ্টি

নিস্তব্ধ গাঢ় ছায়ার দল

পার্থিব ক্লান্ত, শ্রান্ত বাসনার পরিণতি  ।


আজন্ম লালিত আকাঙ্ক্ষার শিকড়

সপ্ন স্বয়ম্ভরের জ্যোৎস্নালোকে

খোঁজে স্ফোটিকের তাজমহল ।


বিচ্ছেদ রেণুমাখা কবিতাগুলোর উষ্ণ দীর্ঘশ্বাসে

নিশি সপ্ন খোঁজা পাখি অর্ধদগ্ধ !

ক্ষত বিক্ষত দেহ মন নিয়ে কেবলই ডানা ঝাপটায়

প্রিয় মমতাজের স্মৃতিসৌধে !!

*********************


চরিত্রের খোঁজে 

বী রে ন  আ।চা।র্য্য 


শব্দের লাশ ঠেলে কলাবৌ স্নান,

নির্ঘুম বিষণ্ণ রাতে চরিত্রও চরিত্র হারায় ;

জীবননাট‍্যের রঙ্গমঞ্চে নিত‍্য চরিত্রবান সাজা,

কেউবা চরিত্র বেচি সভ‍্যতার ল‍্যাম্পপোষ্টের নীচে ; 

আসলে সব চরিত্রই কাল্পনিক।

ভালোবাসার গল্প পড়েছি বারবার - 

অথচ ভালোবাসার আবির মাখা অপরাহ্নে 

চরিত্রগুলো কেমন যেন আড়চোখে চায়; 

বিশ্বাসের মাটি আলগা হয় - 

বাস্তবের চরিত্রগুলো কেমন কাল্পনিক হয়ে ওঠে; 

ভুল করে ফুল হয় জীবন উপন‍্যাসে- 

আসলে সব চরিত্রই কাল্পনিক।

গাঙচিলের ডানায় ভর করে যখন সোনালী বিকেলটা হুস করে চলে যায় - 

রাত্রির স্তব্ধতায় জেগে ওঠে নিঃসঙ্গ মালকোষ; 

সব চরিত্ররা এসে ভীড় করে ভাবনার গাছতলায়,

কেমন যেন সব অচেনা; 

রঙের আড়ালে ঢাকা যেন প্রকৃত অবয়ব - 

আসলে সব চরিত্রই কাল্পনিক; 

তবুও অলোকানন্দার জঙ্গলে কবিতা খোঁজে চরিত্র।

*****************

পাখির বাঁচা 

কুমকুম চৌধুরী


ছোট্ট সে একটা পাখি

করছে ডাকাডাকি

তার ছোট্ট দুটো ডানা

মস্ত আকাশখানা..


 তুই আয়রে তার বুকে

রাখবে সোহাগ মেখে

নয় শিকল পরা ছল

রাখবি না কথা বল?


হাজার লেখার ফাঁকে

বিদ্ধ করিস যাকে

যখন পশ্চিমী ঝড় বয়

সে তোর কেউ নয়!


 মন পেয়ালা দুঃখে মাতাস

এল যেই সন্ধ্যা বাতাস

রাত জেগে হায় কেনো ভাবিস

এই  হারিস এই  জিতিস।


আসবে সময় ধৈর্য্য ধর

বাঁচার নামে শপথ কর।।

*********************

বেপরোয়া...

নরেন নাইয়া 


হঠাৎ যেমন রঙ লাগে ওই ঈশান কোণে!

একটা তেমন থোড়াই কেয়ার আমার মনে,

হাত পা ছোঁড়ে, শূন্যে ওড়ে,

গোঁত্তা খেয়ে কোথায় পড়ে!!

কি আসে যায়, একটু যদি রক্ত ঝরে?

বেপরোয়া...  আজকে আমি হঠাৎ করে।


থাকবে না আর চোখের নীচে শোকের কালি।

আজ কেটেছি মনখারাপের গাছ গাছালি,

ফল ছিঁড়েছি, ফুল ছিঁড়েছি

অতল থেকে সকল শোকের মূল ছিঁড়েছি

কি আসে যায়, একটা আমি হারিয়ে গেলে?

বেপরোয়া...  আদরমাখা মিষ্টি হাসির গন্ধ পেলে।


না যদি পাই লেপ তোষক আর গরম চাদর?

বয়েই গেছে...

আমার আছে সোহাগরাঙা চাঁদের আদর।

কানায় কানায় উপচে পড়ে, আঁকড়ে ধরে,

উথলানো দুধ হাঁড়ির গায়ে যেমন করে।

কি আসে যায়, না হয় পেলাম চোরাবালি?

বেপরোয়া... বুকের মধ্যে অনেকখানি জায়গা খালি।


দুহাত ফাঁকা! আলগা মুঠো?

ঠিক পেয়ে যায় ভাসতে থাকা খড়ের কুটো।

একটু স্মৃতি গন্ধ পেলে, দিলদরিয়ার নৌকা ফুটো

তৈরী থাকি ডোবার তরে, 

যেমন করে সূর্য থেকে সন্ধ্যা ঝরে...

তেমন যদি ডুবতে পারি সবার ভিতর

বেপরোয়া...  মন পাবে ঠিক পরশ পাথর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ