দর্পণ || সাধারণ তন্ত্র দিবস || পর্ব -৫




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

চেতনায় আসুক প্রজাতন্ত্র

সুপর্ণা ঝা


'প্রজাতন্ত্র'সুন্দর এই শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে এক আকাশ স্বাধীনতা।অথবা প্রজাদের স্বাধীন শাসন।

প্রজা অর্থাৎ আম-জনতা।অর্থাৎ আমরা সাধারণ মানুষ।

এই আমাদের হিতের জন্য যখন শাসন ব্যবস্থার প্রণয়ন করা হয় তাকেই বলে প্রজাতন্ত্র।

কাব্যিক ভাষায় বলা যেতে পারে জননগনের জন্য, জনগনের হিতে, জনগন দ্বারা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থাকেই প্রজাতন্ত্র/গনতন্ত্র বলতে পারি।


১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হবার পর, অনেক চিন্তাভাবনার ফলপ্রসূত ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী খাতায় কলমে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে ধরা হয়।

তারপর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই দিনটিতে প্রজাতন্ত্র'দিবস পালন করা হয়।

কিন্তু বর্তমানে সত্যিই কী প্রজাতন্ত্র বলে কিছু আছে!

নাকি শুধুমাত্র ঐ একটি দিনেই 'আনুষ্ঠানিক দিবস'হিসেবে পালিত হয়।

(আমার একান্ত নিজস্ব সামান্য বুদ্ধিতে )মনে হয় প্রজাতন্ত্র' বলতে ঐ একটি দিনের কিছু বিশেষ অনুষ্ঠান অথবা একটি সরকারী ছুটির দিন।

কারণ অতীত থেকে শুরু করে বর্তমানের তিক্ত অভিজ্ঞতা তো তাই বলে।

গদির পরিবর্তন হয় যুগে যুগে কিন্তু সাধারণ মানুষের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না।তাদের মতামতের কোনো দাম দেয়নি অথবা দেন না কোনো সরকার।

তবু সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র( স্বাধীন!) ভোটাধিকার প্রয়োগ করে অনেক আশায় (মাঝে মাঝে)সরকার পরিবর্তন করেন।কিন্তু "যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ"হয়ে রাজা তার ক্ষমতা জাহির করতে থাকেন।

আর সাধারণ মানুষ অর্থাৎ প্রজাগন পিষ্ট হতে থাকেন সেইসব ক্ষমতাশালী শাষকদলের হাতে।

তাদের বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না।অথচ নালিশ করার জায়গাটুকুও তারা কোনোদিন পাননি আর ভবিষ্যতেও পাবেন কিনা  এ বিষয়ে সংশয় রয়ে যায়।


সব শেষে বলা যায়,মানুষ আশাবাদী।তারা স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে একদিন সঠিক গনতন্ত্র স্থাপিত হবে।যেখানে সাধারণ মানুষের মতামতের মূল্য থাকবে।

তাদের প্রতিষ্ঠিত সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত জননায়ক/জননেত্রী সুন্দরভাবে সবকিছু পরিচালনা করবেন।যেখানে অপ্রাপ্তির হাহাকার থাকবে না।শিক্ষা সঠিক মূল্য পাবে।

যেখানে ধনী-দরিদ্র,জাত-পাত,ধর্ম সব কিছুর উর্ধে মানবতা স্থান পাবে।

সেই আশাতেই মানুষ বসে আছেন।

কারণ কথাতেই তো আছে"আশায় বাঁচে চাষা"


******************

আবেদন...... 

কুশল‌ ব্যানার্জ্জী



আমরা দলিত বলছি..... 

আজ প্রজাতন্ত্র দিবস সাথে বসন্ত পঞ্চমীও, 

আমাদের কোনও পার্বণ নেই, 

নেই কোনও পুজোও, 

না আছে কোনও মন্দিরে প্রবেশাধিকার, 

অথচ শুধু মন্দির কেন!!! 

সমস্ত সমাজের আবর্জনা ফেলতে ফেলতে... 

নিজেরাই কবে আবর্জনায় পরিণত হয়ে গেছি 

সত্যি বুঝতেই পারিনি। 

আজ থাক-গে এই সব..... 


আজ হবে প্রজার কথা, প্রজাতন্ত্রের কথা..... 

আমরা কি প্রজা??? 

আমরা কি বলবো‌? 

তোমরা সমাজের মাথা, তা তোমরাই বলে দাও,‌ 

দিয়েছো কি আমাদের প্রজার অধিকার? 

বললেই বলবে-- সরকার আছে-- আছে সংবিধান। 

বলে রাখি কান খুলে শোনো...... 

আমাদের জন্যে না সংবিধান আছে না সরকার, 

দেশ ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস পালন করলো.... 

সবাই বড়ো বড়ো বুলি কপচালো...... 

লাভ টা কি হলো আমাদের? 

আমরা বুঝে গেছি..... 

সরকার-- সংবিধান কারোর চোখ নেই। 

ওরা জন্মান্ধ ঠিক দেশের আইনের মতোই, 

চোখ থাকলেও আজন্ম কালো ফিতে বাঁধা। 

তবে অনেকেই ভোট উৎসবের সময়..... 

আমাদের ঘরে সদলবলে আসে,‌ 

আমাদের সাথে খাবার খায়, 

আমাদের সারা মাসের খরচ একদিনেই খতম, 

সঙ্গে করে নিয়ে আসে একদল পোষা সাংবাদিক, 

খচ্ খচ্ ক্যামেরার আলো জ্বলে, 

সাদা পোশাকের কালো মানুষদের চিৎকার ওঠে... 

মে-রা   দে-শ   ম-হা-ন!!!! 

আশ্চর্য! কি-আশ্চর্য! মহা-আশ্চর্য! অত্যাশ্চর্য! 


আমাদের অবস্থা কেমন জানো? 

ওই রাস্তা গুলোর মতোই....... 

চিত্ করে শুইয়ে ফেলে রেখেছে বছরা-বছর 

ঠিক উলঙ্গ বেশ্যার মতো..... 

বিশাল বিশাল ভারি গাড়ি গুলো...... 

চব্বিশ ঘন্টা বলাৎকার করে যাচ্ছে, 

বর্ষায়, ঋতুকালের অবস্থায়ও কেউ ছাড়েনা, 

নিম্নাঙ্গ উর্দ্ধাঙ্গ সব ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়, 

নাম-মাত্র টোল-ট্যাক্সের বিনিময়ে। 


এবার তোমরা একবার ভালো করে চিন্তা করো, 

এই প্রজাতন্ত্রের মঙ্গল মুহূর্ত...... 

আর কত দিন, মাস, বছর....... 

আমাদের রাস্তার মতো ব্যবহার করবে? 

নিজেরা নিজেদের অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছে যাও, 

আর আমরা! রাস্তার মতো ব্যবহৃত হতে থাকি‌, 

একই জায়গায় পরে থাকি, সেই বেশ্যার মতো! 

যাদের জীবনে, সূর্যদয় সূর্যাস্ত বলে কিচ্ছু নেই।‌‌ 

শুধুই অন্ধকার, নির্যাতন, নিপীড়ন, শোষণ.... 

মহাশূন্যের মতো দম বন্ধ করা অন্ধকার...... 

আমরা আজও ব্ল্যাক-হোলের বাসিন্দা। 


তবুও আমরা রোজ স্বপ্ন দেখি, 

যেমন আজকের প্রজাতন্ত্র দিবসেও দেখছি, 

শুধু একজন ভোটার হিসেবে নয়..... 

চাই আক্ষরিক অর্থে, দেশের নাগরিকের সন্মান, 

চাই তোমাদের মতোই প্রজার সন্মান, 

কোনও পেশা ছোট/হীন বা বড়/মহান হয় না, 

পেশা পেশাই হয়, শুধুমাত্র বিভেদেই আপত্তি। 

তাই তোমাদের সুরে সুর মিলিয়ে..... 

গর্বিত কন্ঠে বলতে চাই!!! 

সারে জাঁহা সে আচ্ছা....... 

বন্দেমাতরম্!

***********************

প্রজাতন্ত্র দিবস

সঞ্চয়িতা মুখার্জি 



আমার দেশ ভারতবর্ষ,

উচ্চারণে মনে জাগে হর্ষ।

এই দেশে আছে নানা ভাষাভাষী, সুখে দুখে সবাই থাকে পাশাপাশি।

আজ বিপন্ন হয়েছে গনতন্ত্র 

বাঁচছে একা প্রজাতন্ত্র। 

আজ সবাই মেতেছে হিংসায়

ব্যক্তিত্ব মিশেছে ধূলায়।

জাগো ভারতবাসী জাগো-

প্রজাতন্ত্র দিবসে হোক

আমাদের শপথ,

যারা ছড়াচ্ছে হিংসা 

আমরা করব তাদের উৎখাত।

রাখবো আমরা ভারতের সম্মান 

আমরা যে ভারতমাতার সন্তান ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ