দর্পণ || সাপ্তাহিক ফেসবুক নির্বাচিত কবিতা




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

চিলেকোঠা 

মধুপর্ণা বসু 


হাওয়ায় দোলে ধূসর ছবি বিরহী দিন,

ভীষণ দামী,

'হঠাৎ নীরার জন্য' বইয়ে  প্রশ্নসূচক 

আমার আমি।

স্বপ্ন বোনে রোদের চাদর রোদ্দুরে মেঘ

নেই শরম,

শীতের ছোঁয়া দেবদারুতে তবুও বুকে 

কিসের ওম?

সময় কেমন কুসুম দোলা গল্প কুটির 

চুপ কথার- 

চিলেকোঠা সময় গোনে মিথ্যে শুধুই

স্বপ্ন সার।  

কার কলমে খুঁজছে তারা তুহিন সন্ধ্যা 

উষ্ণ যাম।

একলা স্মৃতি দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্ন ভাঙা 

চিঠির খাম।

**************

শ্রদ্ধাঞ্জলি শক্তি চট্টোপাধ্যায়কে 

ঋষি 


আকাশের নিচে শুয়ে আছে লোকটা 


তার বুকের শহরে বিভিন্নতা দাঁড়িপাল্লায় খুঁজে নিচ্ছে বিতৃষ্ণা 


তার পেটের ভিতর জমা হয়ে আছে বাংলা মদের গালাগাল ,


লোকটা আজ বহুদিন থেমে গেছে 


তার বুকের ভিতর ভালোবাসা আজও ঝরিয়ে দিচ্ছে পাথুরে বার্তা 


আমি স্থবির ,আমি ভীত 


আমি শব্দের পূজারী হয়ে লোকটাকে আজও বিশ্বাস করি 


" বুকের ভিতর কিছু পাথর থাকা ভালো -ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়। "


লোকটা সেই চির যুবকের দলে 


একদিন সেই চার চিরযুবক শাসন করতো অন্ধকার কলকাতার বিষন্নতা ,


স্ট্রিট লাইটের আলো ছিঁড়ে চিৎকার করতো অজস্র ঐশ্বরীরক সৃষ্টি 


আমার উপলব্ধিতে লোকটা আসলে ঈশ্বর ছিল 


যার মানুষ জন্মের উপলব্ধি আজও মানুষকে ভাসায়


যে নষ্ট হয় বারংবার 


যে চিৎকার করে সভ্যতার অন্ধকারকে নালিশ করে 


" বার বার নষ্ট হয়ে যাই


প্রভু, তুমি আমাকে পবিত্র


করো, যাতে লোকে খাঁচাটাই


কেনে, " 


*********

বরং 

নরেন নাইয়া 


বরং, 

কবিদের বদলে কবিতা লিখুক তারা,

যারা কবিতা লেখেনি কখনও

খিদে আর তৃষ্ণায় যাদের পেট চ্যাপ্টা হয়ে গেছে,

ঘুমহীন চোখগুলো যাদের কোটরে চলে যাচ্ছে, 

তারাও কবিতা লিখুক

মেশিনের ঘড়ঘড় শব্দে ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে পাঁজর, 

বা, সিমেন্টের গুঁড়োয় কংক্রিট হয়ে গেছে হৃদয়। 


আমি বরং 

ওদের জন্য জড়ো করি কিছু মানুষ, 

জড়ো করি কিছু আলো.....


এই অন্ধকারে

কবিতা লিখুক ওরা

যতদিন লিখতে পারে।


তুমি বরং

ওদের ছন্দটা শিখে নাও।

*********

শাদা শরীরে

তৌশিক


আবছায়া অন্ধকারে একা হেঁটে যায় শ্মশানের বুক

মৃতদেহ গুলো বসে থাকে পড়ন্ত যৌবনের অপেক্ষায়।


সংসারের দাঁড়িপাল্লায় ঝুলতে থাকে আত্মতুষ্টি...


মহাজীবনের অসম্ভব গ্লানির পরতে বেড়ে ওঠা শরীর

বার বার প্রেমে পড়ে চুল্লির ধোঁয়ায়...


আমাদের অহংকার গুলোকে অমাবশ্যা পাহারা দেয়

উঁইপোকার ঘুন যাতে না লাগে কেঁচোর আবাসনে।


তবুও শরীর শাদা হয়...

একঝাঁক নীল মুখশের অন্ধকারের যৌবনে...

***********

স্বপ্ন দেখা বারণ

শুভেন্দু গাঙ্গুলী


রাতের চাদরে নিশ্চিন্তের ঘুম খোঁজে দিনের দীর্ঘশ্বাস !


রঙীন স্বপ্ন লালিত হয় মনের গোপনে।


ঘুমানো আর হয়ে ওঠেনা...!


ইচ্ছে স্বত্বেও ইচ্ছেডানা মেলা বারণ !


পরিযায়ী মন আটকা পড়ে থাকে কোনো এক মায়ার বাঁধনে...!


প্রাণ আছে তবুও যেন প্রাণহীন,


সময় আছে তবুও মনে হয় অসময়ের মধ্যে সময়ের যাতায়াত,


শেকল নেই তবুও মনে হয় শৃঙ্খলে আবদ্ধ,


সবই আছে তবুও মনে হয় সব ফাঁকা,


সব খাঁ খাঁ...!!!


ত্রিশঙ্কুর মতো ঝুলে থাকা...!


এগোনোর রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায় না;


পেছোনোর উপায় নেই !


শুধু এক একটা করে দিন পেরিয়ে যায় !


বয়স বাড়তে থাকে !


পাল্লা দিয়ে বন্ধনের যাঁতাকলে আরও জড়িয়ে যাওয়া অক্টোপাসের মতো...!


মনের গোপনে লালন করা রঙীন স্বপ্নগুলো আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে যায় !


ইচ্ছেডানার শক্তিও ক্ষীণ হয়ে আসে !


ঝাপসা হতে থাকে দৃষ্টিশক্তি...!


পড়ে থাকে শুধু---

"স্বপ্ন দেখা বারণ" অক্ষরগুলোর নীচে অসম্মতি স্বত্বেও বাধ্য হয়ে সম্মতি দেওয়া অলিখিত সাক্ষর...!!!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. সবগুলো পড়লাম। মধুপর্ণা বসুর চিলেকোঠা’ কবিতাটি বেশি ভালো লেগেছে।

    উত্তরমুছুন