দর্পণ || কবিতা গুচ্ছ ~ হিমেন্দু দাস




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

 বিশ্বাসটাই পুঁজি


ডিম আগে না মুরগি আগে? প্রশ্নটা দেয় উঁকি

মাঝ দরিয়ায় ঝড় উঠিলে নাস্তিকে কয় ঝুঁকি।

ঝুঁকির ঝাঁজে ঝাল ঝেড়ে দেয় ভগবানের প্রতি

পাড়ের কড়ি তড়িঘড়ি আখের গুছায় অতি।

আস্তিকেদের বাঁধাইপথে নাস্তিকেরা পাড়ে

মাঝ দরিয়ায় জাহাজ ডুবি হয় না বারে বারে।

তাতেই বাড়ে তিড়িং বিড়িং ভাবনা গুলো ঝেড়ে 

মোহর পাহাড় ভোগের বাহার নিত্য চলে বেড়ে।

হঠাৎ যদি খাল ভাঙে পা দগদগে ঘা হবে 

তার আগেতে খাল ভরাতে কে হাত লাগায় কবে?

যে হাত লাগায় ভক্তি জাগায় স্বার্থ খানা ছেড়ে

তাকেই আবার মারছে গুঁতো শিবের ষাঁড়ে তেড়ে।

ভগবানের পরীক্ষাটা এমনিধারা নাকি

হাতে হাতে ফল ফলাতে যম বাবাজির ফাঁকি।

চিত্র বাবু বেজায় কাবু বয়সকালের ভারে

হিসেব ভুলে কিংবা গুলে ফল চাপে বে ঘাড়ে।

চোর ডাকাতের জুয়াচুরি বাড়ছে ভুরি ভুরি

ভাঙবে নাকি রাজপ্রাসাদও মারলে যমে তুরি।

কলিকালে হাতটা গালে ঘটার আশায় রাখি

টিকির গিঁটে জবাব মিটে পারলে প্রসাদ চাখি।

ডিম আগে না মুরগি আগে? প্রশ্ন তবু খুঁজি

উত্তরটা রয় অধরা বিশ্বাসটাই পুঁজি।

=====

 থাক না উবের ওলা 


উবেরটা তো বড্ড কুবের খেপ প্রতি হাঁ বেশি 

কুঞ্চিত হাঁ প্রসৃত হয় চললে আবার এসি।

ভিআইপি যান চড়াতে মান বাড়ায় মধ্যবিত্ত 

মাটিতে যেই পা পড়িল কেউ বনে যায় ভৃত্য।

কেউ তো আবার বাবুগিরির হিড়িক বাড়ায় মজে

শন শনা শন মোটর চলে প্যাসেঞ্জারের খোঁজে।

খোঁজ মিলে যায় পান্তাভাতে মোবাইলের আলোয়

শক্ত উপর ভিতরে জল সারবত্তায় মালই।

কুরে কুরে শাঁস খেয়ে নেয়, নিজেই নিজের খানা

বিত্তটা ফাঁক চিত্ততে হাঁক লজ্জা পাওয়া মানা।

তাইতো ওলা বানায় হোলা সুযোগ বুঝে এসে

চাপলে বাসে সবাই হাসে মানটা যাবে শেষে।

চড়তে যদি হয় তবুও বাধ্য হয়ে চলা

পরের খেপে বসলে চেপে থাকবে না এ ছলা।

তকমা যাবে নিম্নদিকে মধ্যবিত্ত মোরা

উচ্চতাতে পা ফেলিতে আমরা রেসের ঘোড়া।

রেসের ঘোড়া মারে ছোরা, রক্ত নিয়ে ছুটি 

শেষ ফোঁটাটা পারলে দিয়ে এরোপ্লেনে উঠি।

ওজন বুঝে পাল্লা খুঁজে চলতে শেখো ভোলা

একসাথে যাই বাসটা যে ধায়, থাক না উবের ওলা।

===

 অগ্নিমিত্র


অগ্নি যখন মিত্র হবে পাকবে তাতে খাবার

জ্বাললে কঠোর অগ্নি জঠর খাদ্যনালী সাবাড়।

পিত্ত গলে অগ্নি জ্বলে গর্ভপাতে সুরী

পান পাতাতে ছেদ ছাতাতে করলে তখন বুড়ি।

দামড়া বুড়ো নামেই খুড়ো উড়ো স্বভাব খানা

মদের বোতল করলো কোতল, গল্প সবার জানা।

মারতে খিদে ভীষণ জিদে শরীর জুড়ে জ্বালা

হাত আগুনে দেয় ফাগুনে, সাক্ষী টোপর মালা।

মিটলে ক্ষুধা কেউতো শুধা অগ্নি মিত্র হল?

হবেই বাছা উদাম কাছা, পূর্ণ আনা ষোলো।

পূর্ণ ষোলো মুখটা খোলো আগুন চোখে দেখি 

ছায়ের স্তুপে দীপে-ধূপে পুড়ছে মানুষ একি!

হা হা হা হা নমঃ স্বহা আহুতিতে অগ্নি

খিদের পেটে ভাত মেরে দেয় মানবতার লগ্নি।

অগ্নি তখন মিত্র হলে জ্বলবে মাঠে ঘাটে

কাস্তে হাতুড় খাস্তে গেলে সুয্যি যাবে পাটে।

পুঁজিবাদে সবাই ছাদে উঠতে পেলো নাকি?

অগ্নিমিত্র মারলে বৃত্র প্রেমের ছবি আঁকি।

উদভ্রান্ত প্রেম ক্লান্ত আজকে চরাচরে

স্পষ্ট কথন কইতে যতন, কলম নাহি ডরে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ