দর্পণ || সাপ্তাহিক ফেসবুক সেরা সাহিত্য || নির্বাচিত কবিতা সোমবার




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

 

Surprise

Mofazzel Haque


Slowly in the chest of the world comes the evening.

Housewives from house to house, light the lamp with utmost care and 

spread the fragrance of incense.

If it rains at such a time,

Out on the fig tree,

next to the open window,

The golden wet fig leaves fall,

Above the window cornice,

Who does not want to touch it!

And the bee flies and sits on 

The fragrance of the housewife's wet folds of the saree,

Smelling incense inside the house.

There's no householder who will not be surprised in this scene.

----------------

কনফুসিয়াস

শাওন আসগর


কোনো একজন কনফুসিয়াস হলেই

খুলে যাবে নিজগৃহের বন্ধ দরোজা

কারাকক্ষ

গর্ভের ভ্রুণ চুম্বনের গাঢ় কথা মামলার জট।


কনফুসিয়াস এলেই

ভেঙ্গে যাবে ব্যারিকেড দুর্গম অরণ্যময় হিংসা বলয়

যে মিছিল নিষিদ্ধ এখন

সে সভায় আসতে মানা শ্রমিকের ঢল কবির চরণ

যে রক্তচক্ষুর ভয়ে গুটিয়ে থাকে প্রেমিকের ডেটিং নথি

বদলে যাবে সব।


কনফুসিয়াস এলেই উজ্জীবিত হবে মানুষের সমুদ্র

স্রোত নামবে মিছিলে মিছিলে

অশ্রুতে ভেজা অনবরত যারা প্রতিক্ষায় থাকে ঘরের চৌকাঠ ধরে

যারা মৃত মানুষের ঘ্রাণ নিয়ে চোখের কেতুর মুছে কয়েদখানায়

তারাও..

তারাও উত্তোলিত হাতে

বিভ্রান্ত রাজপথে অনাগত শিশুর জন্য গাইবে গান

আর মাস্কপড়া আততায়িরা, যারা উৎসব করে মিথ্যা প্রতারণায়

যাবে খোঁয়ারে ঘাসে ও ভুষির লবনাক্ত স্বাদে।


কোনো একজন কনফুসিয়াস এলেই

সভ্য ও সৎ মানুষের জন্য

উন্মুক্ত হবে বিজয়ের পতাকা আবার।

----------

বিপ্রতীপ 

অজয় কুমার দত্ত


এটাই তো জানি যদি সামনে এগোই দু'পা

আমার লক্ষ্যের দিকে

লক্ষ্যও দু'পা এগিয়ে আসে দূরত্ব কমিয়ে

আমার অভিমুখে।


নিয়মটা যেন কেমন করে উল্টো হয়ে গেল

যখন লক্ষ্য হলে তুমি!

যতোই এগিয়ে চলি চেয়ে তোমার  মুখপানে

তোমার পা-ও এগিয়ে চলে যেন দুরন্ত মৌসুমী।


এ কেমনধারা নিয়ম যা বিপ্রতীপ হয়ে যায়!

সবার ক্ষেত্রে একরকমের অন্য তোমার বেলায়~

তোমার আমার মাঝে দূরত্ব একই রয়ে যায়।

-------------

জীবন যেরকম

শিখর চক্রবর্তী


অবিরত জীবন

ছোটো ছোটো বাঁক,

নুড়ি পাথর কথা,

আলাপ জমে যাক।

                             পরিযায়ী হাওয়া,

                              ঘুমপাড়ানি সুর,

                          একটা বিকেলবেলা,

                         মোম আলো রোদ্দুর।

উঠোন বাঁধা পাঁচিল,

ফাটল বুকজোড়া। 

বটের শিশুর উঁকি,

অভিমান বর্ণচোরা।

                              নোনা ধরা ইট,

                            ছাপোষা নিঃশ্বাস,

                           বন্ধকী হাড় পাঁজর,

                             ঘূণধরা সহবাস।

শ্যাওলা ঈশান কোণ

খড়খড়িতে চোখ,

ঘোড়ার খুরে ধুলো,

নিশান মৃত্যুশোক।

                             আয়ুর বেশি বাঁচা,

                              কার হাতে মাপা?

                           একটা বেশি সকাল

                             "সন্ধান চাই" ছাপা।

রাস্তা জোড়া অঙ্ক,

উত্তর পাঁচমাথায়,

গুনতিতে ভুল হলেও

নামটা থাক খাতায়।।

---------------

বিভ্রান্তির অবসান

বেলায়েত হোসেন 


প্রতিদিন সবকিছু বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠছে 

রাজনীতি, অর্থনীতি,সমাজনীতি, পরিবারনীতি সবকিছু ঘোলাটে জলের মত --

অনেকের মধ্যে বারবার প্রদর্শিত শত্রুতার 

অনুমেয় ফুটে  উঠে 

বজ্রের আকস্মিক বিজলির মত

চিলিক ঝলকানিতে বিভ্রান্ত দৃষ্টি। 


একটি গুরুতর হুমকির আসন্ন  মোকাবিলায়

 থেমে থেমে দাঁড়ায় পদক্ষেপ 

ভালোর শাসন যদি থেমে যায় একেবারে 

বিষণ্ণ বিবাদে কেঁপে উঠবে  মানচিত্র 

মহা বিরক্তিকর ধূম্র ছায়া যখন ছড়িয়ে পরে বাতাসে 

সুশাসনের আগ্রহহীন দমন, এটমের ফিউশন শক্তির মত ক্রমাগত ধাবমান 

দাঁড়ানোর জন্য কোন নিরাপদ জায়গা নেই, সুরক্ষার বড় অভাব। 


জীবন যখন সুরক্ষার চাদরে নিজেকে মোড়াতে চায় 

সেই নিরাপদ জায়গার অস্তিত্ব যদিও এখন অলীক 

কিন্তু শতবছর পরে তাই - আরামদায়ক, নির্ভরশীল 

সেই তৃপ্তিদায়ক সময়ের পথে অবিরাম যাত্রা 

আলোর গতির সমতুল্য হয়ে 

একদিন নিশ্চিহ্ন করবে, নিশ্চিত  বিভ্রান্তির মাত্রা। 

--------------

পড়ন্ত বেলায় 

সুমিত রঞ্জন সাহা


হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে এসেছি অনেকটা পথ।

চড়াই উৎরাই পার হতে হতে কখন যে পৌঁছে গেছি খাদের ধারে ,

তা নিজেই জানিনা।


অন্ধকারে উপর থেকে তাকালে পাহাড়ের নিচের জনবসতির আলোগুলো

রাতের আকাশের তারাদের মত মিটমিট করে ।


বিস্মৃতির আধারের মাঝে উঁকি মারে - কত স্মৃতি।

ধ্রুবতারা ,শুকতারাদের মতোই জ্জ্বলজ্বল করে  কিছু কথা - স্মৃতির পট জুড়ে।


চাইলেই কি কিছু ভোলা যায়?


প্রেম ,দুঃখ ,ভালোবাসা - সম্পর্কের টানা পোড়েন,

সাফল্য আর ব্যর্থতার খতিয়ান, 

চাওয়া আর পাওয়ার মাঝের যে ব্যবধান - 

একদিন ফিকে হয়ে যায় সবকিছুই।


শুরু আর শেষের মাঝের যে দুরত্ব - তার নামই কি জীবন?

---------------

কাল্পনিক আবহে

স্নেহাশিস পালিত


মায়ার পৃথিবীতে আকর্ষণ ও অনুভবই শেষ কথা...

আবেগ, বর্ণ, গন্ধে মিশে থাকে মিলনের বার্তা -

রূপ, রসের ভন্ড পূজারী সাজায় দিনরাত!


তারই মাঝে সম্ভোগের কল্প বাসনা বলে -

জাত-পাত সবই তুচ্ছ এই সপ্নিল আবেশে... 

কল্পরাজ্যে সহসা বিচরণের যুক্তিহীন কাব্য!


লাবন্যের পরিপাটি, সিক্ত ঠোঁটের পরিভাষার বিশ্লেষণ...

লাজুক চোখের  অব্যক্ত অভিসারী দৃষ্টি -

নিশ্চুপে বলে যাওয়া না বলা কথা যতো!


কল্পনায় উষ্ণতার খোঁজা বাতুল অভিপ্রায় -

বুঁদ হয়ে থাকা আবিষ্ট মনের কলঙ্কিত অধ্যায়...

ছিন্ন হয় বাস্তবের শুষ্ক কঠিন প্রশ্নবাণে! 


আসলে এ তো প্রকৃত ভালোবাসা নয়, 

সৃষ্টির সাতপাঁচে অনুমিত আপন অস্তিত্ব মাত্র... 

অনধিকার প্রবেশ কোনো এক ফুলের জলসাঘরে!


তারপর? স্বপ্ন ভাঙার বেরসিক আবহে নিজেকে আবিষ্কার,

স্বপ্নিল সজ্জা ভেঙে যায় বাস্তবের কষাঘাতে...

খুঁজে ফেরা আপন অস্তিত্ব কঠিন বেরসিক বাস্তবে!

---------

জেগে থাকো বৃক্ষের মতো 

হাসান জামান 



কর্মহীন জীবন ---

মরুভূমির বুকে পত্রহীন খড়কুটো ঘাস

হতাশার কফিনে জড়ানো জীবন্ত লাশ!

তোমার জীবন---

তোমার স্বপ্ন  তোমার কিবলা কেবল তোমার 

দখলে রাখতে হবে তোমাকেই রঙিন  সংসার! 


মারুক যতোই ঘাই দুখের মাগুর বুকের গহীনে 

মনে রেখো শীতার্ত রাতে যে তোমারে নেয় চিনে 

জেগে থাকো সেই বৃক্ষের মতো ঝড় বৃষ্টি বাদলে 

ঝরুক পাতা গ্রীষ্মের দহনে কিম্বা বর্ষার কাদাজলে। 


কোনো এক দিন -

দুঃখ গুলো উড়ে যাবে আকাশে  পাখির ডানায় 

এখন ঠোঁটে লেগে থাক কিছু হাসি কচুরিপানায়! 


নিস্তব্ধ আঁধারে জোনাকিরা জ্বালবে আলো

রাতজাগা পাখি গাইবে অবিনাশী গান বাসবে ভালো

তোমার স্বপ্ন অশ্রু শিশিরে হেঁটে যায় মহাকাল

পৃথিবীতে হায়নারা হাঁটে অভিমানে আসেনা সকাল। 


পৃথিবীতো অদ্ভুত মোহনীয় কারাগার 

বন্দী সবাই শিকলে  সময়ের হাতে, দাঁড়াবার 

ফুরসত নেই কারো, হোঁচট খাও, পড়ে যাও মাটিতে 

হাত ধরে তুলবে না কেউ, শক্ত রাখো পা নিজ ঘাঁটিতে।


পৃথিবীতো যুদ্ধক্ষেত্র সকল সৃষ্টির --

প্রসারিত করো নতুন দিগন্তে তোমার দৃষ্টির 

পাখির মতো মেলো ডানা জমীনের উন্মুক্ত প্রান্তরে 

রিজিকের সন্ধান আছে ঠিক সেই অলৌকিক মন্তরে। 

কর্মহীন জীবনে ---

যারা ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিতে চায় আশার আলো 

আজ তাদের রেখোনা স্মরণে।।

--------------

মূঢ়  মতে 

রীনা নস্কর


প্রাণনাথ  /  প্রণিপাত            / তব  শ্রীচরণে 

দিন যায়  /  ক্ষীণ প্রায়          / জীবন গ্রহণে ।

অভিমানী /  কায়াখানি        / গেছে সব ভুলে

ভাঙা হাট /  শূন্য ঘাট।        / একা বসে কুলে ।


নিরুচ্ছাসি  /  বানভাসি       /  দৃষ্টি ভারি হল

আঁখিপাত  /  ভেজা পথ     /  সব ধুয়ে গেল  ।

কলতানে   /  কানে কানে    /  স্মৃতি অবান্তর

খেলা শেষ /  মায়া রেশ      /  শুধু  ভাবান্তর ।

দিতে দিতে /  দুটি  হাতে     /  শেষ  হল  যেই 

একা করে /  গেল  দূরে      /  কেউ কাছে নেই ।


মৃতলোকে  /  বৃথাশোকে     /  দিন করি পার 

মূঢ় মতে    /  পাপ পথে       / সোহাগী বিহার ।

কত জানা /  কত শোনা     /   ঠকি   বহুবার 

পরিচয়    /   বাকি রয়       /   শুধু আপনার  !!

-----------

নামতার ছেঁড়া পাতা

কল্যাণ ভট্টাচার্য্য 


তারপর,

ক্ষুব্ধ সমুদ্র, কী ভীষণ অভিমান !

উত্তাল, উদ্দাম, পার ভেঙ্গে চুরমার !

কে আছো কোথায়, সরে যাও

মৃত্যু থেকে যোজন দূর—

দুরন্ত শব্দে শুধু পথবাসি হাসে,

ভেঙ্গ যায়,ভেসে যায় পথ

ডুবে যায় উপেক্ষিত কত প্রাণ !


সমুদ্র শব্দ শেষে

রাষ্ট্র পর্দায় গুণ-ভাগের প্রতিধ্বনি —

ক্লান্ত কান্নায় মৃত অট্টালিকার প্রতিচ্ছবি 

গাছ,পশু,ভ্রমন পিপাসু, আরো,আরও!

শুধু শব্দহীন ছেঁড়া কাপড় মোড়া

জীবন্ত কঙ্কাল সারি 

ভেসে গেছে মৃত্যুর আগে ও পরে

সময়ের অপচয়ে আদি অনন্ত ,এভাবেই। 


এভাবেই ভেসে গেছে

জীবন্ত মানচিত্র যত 

রাষ্ট্রের অনাদৃত ক্ষত

কৃষকের ঘরে সুপ্ত নরম প্রেম

শ্রমিকের চোখে ভেজা ভেজা শিশির 

এভাবেই ইতিহাস জলে কতশত সুতানটী—

আমরা কেবলই বন্দীমন

শহরের রঙিন আলোর জলচ্ছবি ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ