পোস্ট বার দেখা হয়েছে
নীলাঞ্জনা
যতদূরেই যাওনা কেন
দূরত্ব হবে না সৃষ্টি । মনের বাধনে গাঁথা
এ গ্রন্থি শুধু কাঁদাবে তোমাকে ।
জান তো পারিনা কিছুই
লিখতে কবিতা ছাড়া । সব এলোমেলো করে ফেলি
সাজান সংসার তোমার । জল দিতে বলেছিলে
তাতেই ভেঙেছি তোমার সুন্দর ফুলের টব
অকর্মণ্য আমি ।
ফিরে এস নীলাঞ্জনা
ফুটেছে জানালায় একরাশ হাসনু-হেনা ।
==================
সুদূর দ্বীপের মত
এখানেই
এই রাঙামাটির অঙ্গনে শ্রাবণের মেঘ ছায়ায়
রঙিন পাথরের ছড়ানো পথ ধরে পায়ে পায়ে
বিন্দু বিন্দু জমে ওঠে স্বপ্নের সুনীল বীথিকা
যত্নে সাজানো সে বাগান গোধূলিতে সপ্তপদী মায়া
চাঁদের আলোয় ভিজে করে অপেক্ষা কম্পিত অনুভবে।
তবুও সবুজ দ্বীপের মত
দিগন্ত ছোঁয়া জলের ওপারে শুধুই হাতছানি
হাজার নক্ষত্র ভরা আকাশের অবিরাম বিস্ময়ে
কামনার পূজার ফুল দুহাতে ধরে নতমস্তক
পায় না বেদির শুদ্ধতা, অপূর্ণ আর্তি হয়ে নিঃশব্দে
সেকাল, একাল সর্বকালের একই পদাবলী
ঊর্মিলার অদেখা অশ্রুজল নিভৃতে নীরবে
নেমে আসে সবার অজান্তে
প্রাসাদের অন্তরালে।
=====
শুধুই শূণ্যতা
যাব না যাব না করেও , চলে যাই ,
অদৃশ্য হাতছানির পেছনে। দেখি পৌঁছে
শুধুই সীমাহীন শূন্যতা ছুঁয়েছে দিগন্তে ।
চাই না চাই না করেও , বাড়াই দুহাত
সমস্ত বঞ্চনা ভুলে। হাত খালি থেকে যায়
বয়ে যায় সময় ভ্রুক্ষেপহীন আপন প্রবাহে ।
দেখব না দেখব না করেও , তাকাই আশায়
খুঁজে ফিরি হারানো সপ্তর্ষি । হাজার তারার ভিড়ে
সমস্ত অচেনা , মূক আঁধার ছেয়ে থাকে চারিধারে ।
যাব না যাব না আর হাতছানি দেখে
চাই না চাই না কিছুই এই বিরান দুহাতে
দেখব না দেখব না নিয়ে আশা এই দুচোখে ।
প্রশ্ন কর না কিছু , কিছুক্ষণ
একাকী থাকতে দাও আমাকে ।
=====================
সময়ের কার্নিশ
শান্ত শীতের দুপুরে, নরম রোদ্দুর ছুঁয়ে
পায়ে পায়ে হাঁটি কোন গন্তব্য ছাড়াই। ব্যস্ত জনপদে
অগণিত অচেনা মুখ যান্ত্রিক ব্যস্ততায়, আমি
মিশে যাই ভিড়ে।
একসময় প্রতিটি সকাল রাঙামেঘ নিয়ে
সারসের ডানার বিস্তারে হত দীর্ঘতর ।
সবুজ শীষের গন্ধে মাতোয়ারা ,
মত্ত হাওয়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে সাত রঙ উৎসবে
জুঁই চামেলির গাঁথায় তখন
ছিল অপার খুশির স্রোতধারা।
সব আজ পুরোনো কবিতার মত শুধুই স্মৃতি
চারদিকে এক অনিশ্চয়তা, বিশ্বাস ফেরার,
পথে নিজেরই ছায়া দেখে আততায়ী মনে হয়
কখনও তপ্ত জোয়ার অসময়ে ভাসায় সমস্ত শহর।
তবুও কালো জ্যোৎস্নার নিশাবসানে
থাকি প্রতিক্ষায়, রক্তিম শুদ্ধ অরুণোদয়ের
নিরন্তর কামনায় ।
=====
কাহিনী
ভোরের সূর্যস্নাত নরম সবুজে
আকাশের সুনীল অনন্তে, সাগরের অবিরাম স্রোতে
জানিনা কী ছিল লেখা অদৃষ্টে বা ভাগ্যে
ঐতিহ্যের সাজানো বাগান ভেঙে, এঁকে দেওয়া
গণ্ডীর সীমানা ছাড়িয়ে ছুঁয়েছি উজ্জ্বল নক্ষত্র
এক প্রগাঢ় আকর্ষণে। সেদিন হঠাৎ উৎসব যেন
বলাকার ডানায়, মৌমাছির গুঞ্জনে, স্নিগ্ধ সমীরণে
বেজেছিল পূরবীর মূর্ছনা। ধানের শীষ স্পর্শ করে
মেঠোপথ ধরে, একতারা হয়েছিল মাতোয়ারা ।
শত শত শিউলি সারারাত ধরে নামে শিশির দূর্বায়
শারদী মেঘ দেখে, দেখে ঋতুর ঘুঙুর, গেরুয়া ভৈরবী
দুহাত ভরে তুলে রাখি শুধু তোমার কথা ভেবে।
দিনান্তে গোধূলি জন্ম জন্মান্তরের শোনায় কাহিনী
জোনাকির আলোয় কাঁপে শুদ্ধ হৃদয় ধিকি ধিকি
হাজার বছর ধরে এই গাঁথা পাহাড় নদী মাটি সমতলে
মিশে আছে নিরন্তর, আমি আছি তার সাক্ষী হয়ে ।
====
কেন স্বপ্নদীপ নেই ?
একটি স্বপ্নের দীপ
নিভে গেল
ভীষণ ভাল বেসেছিল
বাংলা ভাষা
কলুষিত পরিবেশ
এই অব্যবস্থা আর কতদিন ?
কেন শেষ রাতে
এক মাকে শুনতে হবে
“ আমি ভাল নেই মা - - - । ”
আর পরদিন মর্গে
থাকবে স্বপ্নদীপদের প্রাণহীন দেহ ?
=======
লজ্জা
এখনও কিছু মানুষ আছে
দংশিত বিবেক
মাথা নিচু করতে করতে
কালো ধুলোতে
তাদের ঠেকেছে ঠোঁট, রাস্তায়।
আর কিছু বন্য
শকুনের প্রেতাত্মা
খোলা চোখে অন্ধ
ফিরিয়ে মুখ
নির্লিপ্ত
চলছে খেলা তপ্ত সূর্য নিয়ে
সামনে শুধুই
মণিপুর মালদা
আড়ালে আরও কত অগণিত
সম্পূর্ণ অজানা ।
0 মন্তব্যসমূহ