পোস্ট বার দেখা হয়েছে
নীল ফুল
স্বাতী রায় চৌধুরী
শিরিনবুরুর মাথায় রুমাণ্ডির জঙ্গলে যে আশ্চর্য নীল ফুলগুলো ফুটতে দেখেছিলাম
পৃথিবীর কোথাও আর তা পাওয়া যাবে না জেনেও
সেদিন মানবিক হিংস্রতায় তা উৎপাটিত করে তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম বনলতা;
তোমার উদ্যানে নীল তরঙ্গ তুলবে সেই ফুল;
আর তার হিল্লোলে ভেসে যাব আমরা দুজনে…………………
অথচ আজ অযত্নচর্চিত, শুষ্ক, মৃতপ্রায় সেই বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে বুঝলাম
ভালোবাসতে গেলে বুকের ভিতর নীল ফুল ফোটাতে হয়;
তাকে ছিঁড়ে আনতে নেই।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: শিরিনবুরু ও রুমাণ্ডি এই নাম দুটো সাহিত্যিক শ্রী বুদ্ধদেব গুহের লেখা ' কোয়েলের কাছে ' উপন্যাস থেকে নেওয়া।
************
ঠোঁট থেকে ঠোঁটে
জয়িতা চট্টোপাধ্যায়
তোমার কন্ঠে হ্রদের জলের মতন যে
তাকে তুমি তুলে নাও ঠোঁটের নৌকায়
যে ঘাটে তোমার নদী বাঁধা থাকে
আর তুমি নৌকা হয় আদর বৈঠায়
যাকে তুমি ভালোবেসেছিলে
নিয়েছিলে তার কান্নার খোঁজ?
হঠাৎ চুপচাপ তার চলে যাওয়া
কষ্টকর বাঁকে তার শেষ শব্দ নিখোঁজ।।
**********
ধারা ১৪৪
শ্বেতা ব্যানার্জী
এ-কোন নেশা অনির্বাণ!?
পাথরের বুক থেকে ঘুম কেড়ে নিয়ে শব্দের বীজবোনা।
কেন প্রতীক্ষা! কীসের প্রতীক্ষা?
কেন এ রোদ্দুর মেশান প্রসববেদনা...।
কেন যে শব্দের মোহে ধরা দিয়েছিলাম!?
ভুলগুলো পাশাপাশি সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।
অকাল প্লাবনে একবুক তেষ্টা মিটলো কিনা জানিনা।
তবুও স্বপ্নের উপর স্বপ্ন সাজিয়ে রাতের আলোয়
সূর্য খুঁজেছিলাম।
ব্যাকুলতা অনেকটা ব্যাকটেরিয়ার মতো --
অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া গতি নেই।
এক একদিন মনে হয় নিরুদ্দেশের জন্য তো
চেনা রাস্তার প্রয়োজন নেই।
হাঁটা শুরু করলেই তো হলো...।
তাহ'লে কোন অভিসন্ধি নিয়ে কবিতার গোপন
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের খোঁজে আলপথে হাঁটা।
একটা সময় ছিল দিঘির জলে চাঁদের খুনসুটি দেখেছি।
বেলগাছে কাঠপিঁপড়ের সারি, প্রজাপতির ঘটকালি।। পাখিদের মনোমালিন্য।
কেন যে মায়ের আঁচল থেকে সেইসব দিন গেল চুরি!
কেন যে শব্দের স্রোত বেয়ে সমুদ্র পাড়ি দেবার ইচ্ছে জাগলো।
অদেখা ধ্বনির সুখ স্পর্শ নিতে কেন এ উন্মোচন।
ভেবেছিলাম আসবো, বসবো,ঘুরে বেড়াবো
কবিতার ঝুলবারান্দায়।
কুয়াশার ভিতর বালুচরি ভাবনায় খুঁজে আনব একটুকরো হীরে।
ভেবেছিলাম শেরপা হয়ে শব্দের পাহাড় ডিঙিয়ে যাবো একদিন।
ভেবেছিলাম বাঁধানো চাতালে পা'রেখে ইচ্ছের অধীনে ভাসবো প্রতিদিন।
আজ বালুচরে শুয়ে অতি তেজস্ক্রিয় সূর্যের কিরণ মেখে সূর্যস্নান করি.
সমুদ্র এসে দুঃখ বুঝে ধুয়ে দিয়ে যায় থোকাথোকা
অপমানের সারি।
0 মন্তব্যসমূহ