দর্পণ || কবিতা গুচ্ছ ~ মীনাক্ষী চক্রবর্তী সোম




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

মানুষী খেলা


দ্বন্দ্ব আর চুক্তির মানুষী খেলার নিত‍্য মাতন 

দিগবিদিক জুড়ে অবক্ষয়ের নিখুঁত রাজপাট  

সেইতো দুয়ে দুয়ে চার-ই হবে 

অথবা 

ভুলে ভরা মিল-অমিলের পাতায় আঁকিবুকি।

গুণিতক শিখতে শিখতে প্রতিদিন 

সম্পর্কের বাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে

নতুন সূত্রমালা অজান্তেই জড়ায়  

তবু একদিন ফুরোবে সব লেনদেন।

থেকে যাবে অগুনতি হার-না-মানা জেদের পাণ্ডুলিপি 

পরতে পরতে মিথ্যের জৌলুসহীন বিন‍্যাস।

অতন্দ্র অনুসন্ধানী চিরজাগরুক হৃদয়

বুনে চলে অগ্রন্থিত ছন্দহীন কথামালা 

নিকষ অন্ধকার গ্রাস করে নেবে সব আলোর অধিকার 

তবু

কালের ইতিহাস লিখবে কোন এক বেদব‍্যাস

আগামীর পথচলায় চুলচেরা বিশ্লেষণে 

বিচারের অপেক্ষায় আজকের মনোবিকার

অহংকার ফসিল হয় অগোচরে ।

তবু দ্বন্দ্ব ও চুক্তির মানুষী খেলা চলে অবিরাম ।।

=====

নিদ্রাহরণের কারণ


সময় নিয়ে ট্র‍্যাপিজের খেলা খেলে 

ক্লান্ত এক কালের সাধক শুয়েছিল সবে।

নীরবতা ভাঙে অজস্র শব্দের জটলায়

আলোর ঠিকানার খোঁজে চলেছে ওরা পদযাত্রায় ।

পদাতিক শব্দরা জড়চৈতন‍্যে টোকা দিয়ে 

বাক‍্যবন্ধ সাজিয়ে তোলে নিরন্তর।

শব্দের অনুরণন তীব্র থেকে তীব্রতর যখন 

দুর্দম ক্লান্তি হার মেনে শব্দচয়নে সাথী হয়।

সাধক শুধু জানে নিদ্রাহরণের কারণ 

আর জানে না কেউ।।

=====

ফুল রহস‍্য


মরশুমি ফুলগুলোও আজকাল ভীষণ আহ্লাদী 

ভালোবাসার বারান্দায় লকলকিয়ে বাড়ে,

নাকউঁচু ওদের মনে জাগ্রত স্বাভিমান 

অলীক মোহে প্রেমে ভাসমান।

পাহাড়ি ফুলগুলো অনাদরে সুখ গড়ে

শখের টবে বড্ড বেমানান, বন্দিজীবন যেন। 

কোন একসময় বীতশ্রদ্ধ ফুলমালির 

ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ক্ষোভ জমা হয়।

জল আর মাটির সমীকরণ ঘেঁটে

মালি জেনেছিল আসল রহস‍্য ফুল ফোটানোর।।

=====

সৃষ্টির উল্লাস


প্রতিটি সকাল নতুন সাজে

এক আকাশ ভরা স্বপ্নরা আসে

চোখ মেলে ধরতে গেলে 

ফানুস হয়ে ওড়ে 

পিছু ধাওয়া করি;

ওরা আরো দূরে সরে সরে যায়।

অনেকের ভীড়,

সেখানে আছে চেনা অচেনা মুখ,

কখনো কাছে অথবা দূরে

যদি ধরা দেয় শান্তি সুখ।

অলস দুপুরে, ক্লান্ত বিকেলে, 

স্বপ্নের পেছনে ছুটছি রোজ;

একটু আনন্দ, 

হাসি গান ছন্দ

তারি মাঝে পাই শান্তির খোঁজ।

আমার নিত্য প্রয়োজন মিটাতে

চারপাশে কত কিছু হয় নির্মাণ;

সব নির্মাণ উদ্দেশ্য বয়ে আনে

পাথর কথা বলে অবিরাম,

বাঙ্ময় নিরবতায়

সৃষ্টির আনন্দ করি পান।।

====

 মরশুমী শব্দ 


শব্দ ভাণ্ডার খুঁজে পথে পথে ঘুরে বেড়াই

দিশাহারা সেসব চলায়

মনকেমনের পদাবলি জ্বালায় বড়

শব্দের গোড়ায় ভালোবাসা ঢেলেছি উজাড় করে

তবু ফোটেনি কোন গন্ধকুসুম আলো হয়ে । 

উন্মুক্ত আকাশ দিগন্তে মিলায়

গভীর রাতে ছায়াপথ ভাসে সপ্তর্ষি নিয়ে 

আলোছায়া খেলা করে মনের অতলে

শব্দ নিয়ে খেলি মাঝেমাঝে 

অক্ষরচাষী হতে বাধা নেই কোন

ভালোবাসায় ফসল ফলে কোন এক বাদল দিনে 

আবার খরায় যায় কোন এক মরশুম ।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ