পোস্ট বার দেখা হয়েছে
অবচেতন
কারা দুজন আজও অমন একসঙ্গে হাঁটে,
সন্ধ্যেভাসান হাওয়া যখন বনপলাশীর মাঠে…
তুমিও বুঝি ভালোবাসতে? কে সে? মনে আছে?
এই মাত্র ঝরে পড়ল চাঁদ, একলা তালগাছে,
মেঘ ফুটেছে, মেঘ ফুটেছে, মেঘের আড়াল, কে?
ধূর, ওসব বাজে গুজব, পাড়া বেড়ানি মেয়ে..।
পিছলে যায় পিছলে যায়, মুখ দেখিনা তার
কারা তবে আজও হাঁটে ...ঘর তো অন্ধকার...
====
অসুখ
সুচেতার অসুখ হলে শহরের সব আলো নিভে আসে,
রাস্তার ধারে ধারে বৃক্ষেরা মরে যায়,
পাতায় পাতায় দুঃখ মেলে দেয় ডানা,
ট্রামলাইনে রৌদ্র ঝরে পড়ে একা,
শিয়ালদা হাওড়া ঝলসে যায় তাপে
স্টেশনে স্টেশনে রটে যায়,
অসুখ, অসুখ।
মানুষের মুখ কালো,
বিরক্ত মুখোশেরা টেনে ছেঁড়ে কালো জামা,
অপদেবতার করাল ভ্রুকুটি,
আমি ভয় পাই,
স্যুনামীর প্রবল আঘাতে কলকাতা কেঁপে ওঠে যদি?
ড্রিপ খুলে নিল ডাক্তার?
এইবার চোখ মেলো,
পার্কে পার্কে তরুণ তরুণী চুম্বনে ডুবে যাক,
বাতাসে চম্পকের গন্ধ তোমার ওড়না নিয়ে উড়ে যাক আকাশে,
বঙ্গোপসাগর থেকে জেগে উঠুক তোমার শরীর,
পায়ের পাতা থেকে দুই উরু ভিজিয়ে
সটান উঠে এসো শহরের রাস্তায়,
ভ্রু ভঙ্গিমায় এঁকে দাও শাশ্বত শান্তির টীকা,
অমনি মানুষের ঠোঁটে ঠোঁটে পলাশের হাসি,
জলহাস্যে নড়ে চড়ে ট্রাম নিয়ে আসে
প্রজাপতি ভ্রমণ,
তারা চলে যায় আই পি এলের মাঠে,
স্বস্তিময় হাওয়া কেটে
বাস ট্যাক্সি রিক্সা মিলেমিশে ফিরে যায় বাড়ি,
যেন কিছুই হয় নি।
মেঘ ছিঁড়ে জ্বলে ওঠে সিগারেট, সম্রাটের মুখে,
কপালে এঁকে দেয় তৃতীয় চক্ষু,
তোমার আশিরনখ তুলি বোলাতে বোলাতে
বলে ওঠে,
' এইবার কবিতা আঁকবো '...
====
ক্ষয়
স্তব্ধতা দীর্ঘতর হলে, পাশে এসে বসে এক বিপন্ন বিস্ময়,
আহত শিবির থেকে উঠে আসে প্রাচীন বঞ্চনা,
জামার ভিতর ঘিরে ধরে মৃত্যুময় মেঘ,
শরীরের পালক থেকে বহুদূর উড়ে যায়, যেতে থাকে , স্বপ্নের মিথ্যে ঘরবাড়ি।
তুমি ঘুমের ভিতর কেঁদে ওঠো, অপরাধী সেজে
তোমার নিষাদ রেখে দেয় সাজানো অক্ষর,
দেওয়ালে দেওয়ালে ছিটে যায় রক্ত আল্পনা,
টুপটাপ ঝরে পড়ে স্মৃতির শিশির...
এখন যাবার সময়,
জ্যোৎস্নার গা ঘেঁষে খসে পড়ে তারাদের নাম,
গাছে গাছে তোমার প্রতিশ্রুতি ঝোলে, অনাথ,
চলে যাওয়া নদীদের মরে যাওয়া চর
পায়ের তলায় রেখে
আমি হেঁটে যাই আরও এক শূন্যচক্রবালে,
যেখানে আসেনা কেউ, শুধু এক অসম্পূর্ণ ক্ষয়,
বোধের ভিতর ঘুমে শেষ পরাজয়...
ছবি সংগৃহীত
ঘুম
আলিঙ্গন যাকে কর, যে তোমায় আলিঙ্গন করে,
ক্যানভাস এঁকে রাখে কালের অদৃশ্য অক্ষরে
দেহের দালানকোঠা, তবুও প্রেমেরা আজ ক্লান্ত ভিখারি,
পথে পথে মাথা ঠোকে, বহুদূর কবিতার বাড়ি--
অধরে অধর ছোঁও, হাত দুটি ছুঁয়ে থাকে বুক
হ্রদে হ্রদে ভেসে যায় জলের প্রাচীন অসুখ,
শব্দেরা জেগে ওঠে, উড়ে আসে ওড়নার গান
অটোওয়ালা কাঁচে কাঁচে দেখে রাখে গোপন বাগান,
কালো কে? সাদা কে? তোমার সে দীর্ঘ প্রতিশ্রুতি
প্রেম থেকে অন্য প্রেমে রেখে যায় কমনীয় দ্যুতি
তমসায় নেমে আসে বিশ্রুত মুখ- চাঁদপানা
ঘুমের ভিতর ঘুম, নামহীন একাকী আস্তানা---
====
ছেলেমানুষী
জল ও সাকোঁর ভিতর
একাকী বাতাস অপেক্ষার কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাক...
হাহাকারের মতো তোমার আমার ভিতর যে হাইফেন,
আপাততঃ তাকে পাশে সরিয়ে রেখে ,
এসো গল্প করি।
মাটিতে জায়গা কম,
নির্জনতা পোষাক আশাক খুলে ক্রমাগতঃ
মৃত্যুর দিকে বাঁক নেয়,
তার চেয়ে চলো আকাশে যাওয়া যাক।
একটা তারাকে টেনে নিই কাছে,
দুইদিকে মুখোমুখি কনুইএ ভর দিয়ে দাঁড়াই....
খানিকক্ষণ তোমার স্বামীর গল্প শুনি,
তোমার সংসারের গল্প,
আমি আমার স্ত্রীর কথা বলি, মেয়ের কথা,
তারপর অপেক্ষার প্রচ্ছদ আলতো করে উলটে দিই,
তোমার দুইচোখে নির্মাণ রাখি বিলাপের মতো,
দুই হাতে রাখি জল ও সাঁকোর মৌন দহন,
কালকেও বেঁচে থাকলে তোমাকে আবার দেখতে পাব--
আর্তনাদ করে উঠি গোপনে...
তারাদের শান্ত বাগানে --
ভোরবেলা ফিরে এসে, চলে যেতে বলে,
তোমার ভিতরে তবে আমাকেই রেখে যাই--
অনিচ্ছুক আমার বদলে?
2 মন্তব্যসমূহ
উত্তরমুছুনবলিষ্ঠ কলম
সমৃৃৃৃদ্ধ হলাম
প্রতিটি কবিতাই সমৃদ্ধ করল
উত্তরমুছুন