দর্পণ || ১৪ তম সংখ্যা || ভাষা সংখ্যা || "মাতৃভাষার ঋণ" - পিন্টু বেতাল




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

"মাতৃভাষার ঋণ"

পিন্টু বেতাল


সদ্য জন্মানো শিশুটি- বোঝে না ভাষা কী?

তবুও এক অমোঘ আকর্ষণে-

সারল্য ও বাৎসল্যসূচক মধুর ক্রন্দনে- অস্ফুটে উচ্চারিত শব্দটি মা (ওঁয়া);

ধীরে ধীরে জন্মদাত্রী ও জন্মভূমি মায়ের পরম মমতায়-

একদিন পরিচয়- মাতৃভাষার প্রথম উচ্চারিত শব্দটিও, "মা"।

ঋণ যেমন অপরিশোধ্য- জন্মদাত্রী কিম্বা মাতৃদুগ্ধের,

মাতৃভাষাটাও, তেমনই অবিস্মরণীয় সাহচর্য্য-

জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সীর।


করুণাময়ী মাতৃস্নেহের পরশে শিশু যখন খুশীতে উচ্ছ্বল-

মাতৃভাষাটা- তার, প্রতিটি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুভূতিতে-

জন্মভূমি মায়ের পরম স্নেহের আঁচল;

প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসে- আজ তার মায়ের আশীর্বাদ,

অবিচ্ছেদ্য নাড়ীর টানে- জন্মভূমি ও গর্ভধারিণী, উভয়েরই প্রতি উৎসর্গীকৃত- শেষ রক্তবিন্দুপাত।


সদা মাতৃ আরাধনায়- আজ তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ;

পিছপা হয়নি সে-

জীবনখানা দিতেও,

রক্ষা করতে মায়ের আঁচল- ঐ 'মাতৃভাষা' অমূল্য সম্পদ।


এখন যদি, নিজেদের কথাও বলি-

ধন্য মাগো জন্ম মোদের

ধন্য মোদের জীবনখানা, ঠাঁই নিয়ে তব কোলে;

মোরা- বাংলা মায়ের দামাল ছেলে,

ধন্য- তোমার পরশ পেয়ে,

তোমার উদার প্রাণের ভাষা- বাংলায় কথা বলে।

'বাংলা' মোদের মাতৃদুগ্ধে-

'বাংলা' মোদের রক্তে-

বাংলার বুকে- আমরা বাঙালী, মাতৃঋণ পরিশোধের শর্তে।


মোরা বাংলায় হাসি, বাংলায় কাঁদি,

বাংলায় বুক- আশায় বাঁধি,

জন্ম লভিয়া বাংলার বুকে-

গর্বিত- আজ, আমরা বাঙালী।


ধন্য হে মা, 

মোরা যত শ্রমিক, কৃষক, কিম্বা চাষা;

তোমার অপার কৃপাগুণেই-

বাংলাই- মোদের, প্রাণের ভাষা;

বাংলাই- মোদের মাতৃভাষা।


সদ্য জন্মানো শিশুটি- বোঝেনি, ভাষা কী?

তবুও সে মা- সন্তান তব,

তার অবুঝ প্রাণেও স্তুতি- তব,

জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সীর;

হয়তো সেটা অস্ফুট ওই ক্রন্দন স্বরে,

শুধু যা একটু ওঁয়া সুরে,

সবারই অলক্ষে কিন্তু, উহ্য "মা" শব্দটাই আসীন।


হে মা-

করছি শপথ- আজ মোরা তাই,

জীবন দিয়েও করবো লড়াই;

কণ্ঠ ছাড়িয়া গাইবো মোরা বাংলারই জয়গান-

প্রত্যেকটা মুহূর্ত, প্রত্যেকটা দিন।

দেহের প্রতিটা রক্তকণা দিয়ে লিখে যাব- মাতৃভাষার ঋণ।।           

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ