পোস্ট বার দেখা হয়েছে
"মাতৃভাষার ঋণ"
পিন্টু বেতাল
সদ্য জন্মানো শিশুটি- বোঝে না ভাষা কী?
তবুও এক অমোঘ আকর্ষণে-
সারল্য ও বাৎসল্যসূচক মধুর ক্রন্দনে- অস্ফুটে উচ্চারিত শব্দটি মা (ওঁয়া);
ধীরে ধীরে জন্মদাত্রী ও জন্মভূমি মায়ের পরম মমতায়-
একদিন পরিচয়- মাতৃভাষার প্রথম উচ্চারিত শব্দটিও, "মা"।
ঋণ যেমন অপরিশোধ্য- জন্মদাত্রী কিম্বা মাতৃদুগ্ধের,
মাতৃভাষাটাও, তেমনই অবিস্মরণীয় সাহচর্য্য-
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সীর।
করুণাময়ী মাতৃস্নেহের পরশে শিশু যখন খুশীতে উচ্ছ্বল-
মাতৃভাষাটা- তার, প্রতিটি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুভূতিতে-
জন্মভূমি মায়ের পরম স্নেহের আঁচল;
প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসে- আজ তার মায়ের আশীর্বাদ,
অবিচ্ছেদ্য নাড়ীর টানে- জন্মভূমি ও গর্ভধারিণী, উভয়েরই প্রতি উৎসর্গীকৃত- শেষ রক্তবিন্দুপাত।
সদা মাতৃ আরাধনায়- আজ তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ;
পিছপা হয়নি সে-
জীবনখানা দিতেও,
রক্ষা করতে মায়ের আঁচল- ঐ 'মাতৃভাষা' অমূল্য সম্পদ।
এখন যদি, নিজেদের কথাও বলি-
ধন্য মাগো জন্ম মোদের
ধন্য মোদের জীবনখানা, ঠাঁই নিয়ে তব কোলে;
মোরা- বাংলা মায়ের দামাল ছেলে,
ধন্য- তোমার পরশ পেয়ে,
তোমার উদার প্রাণের ভাষা- বাংলায় কথা বলে।
'বাংলা' মোদের মাতৃদুগ্ধে-
'বাংলা' মোদের রক্তে-
বাংলার বুকে- আমরা বাঙালী, মাতৃঋণ পরিশোধের শর্তে।
মোরা বাংলায় হাসি, বাংলায় কাঁদি,
বাংলায় বুক- আশায় বাঁধি,
জন্ম লভিয়া বাংলার বুকে-
গর্বিত- আজ, আমরা বাঙালী।
ধন্য হে মা,
মোরা যত শ্রমিক, কৃষক, কিম্বা চাষা;
তোমার অপার কৃপাগুণেই-
বাংলাই- মোদের, প্রাণের ভাষা;
বাংলাই- মোদের মাতৃভাষা।
সদ্য জন্মানো শিশুটি- বোঝেনি, ভাষা কী?
তবুও সে মা- সন্তান তব,
তার অবুঝ প্রাণেও স্তুতি- তব,
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সীর;
হয়তো সেটা অস্ফুট ওই ক্রন্দন স্বরে,
শুধু যা একটু ওঁয়া সুরে,
সবারই অলক্ষে কিন্তু, উহ্য "মা" শব্দটাই আসীন।
হে মা-
করছি শপথ- আজ মোরা তাই,
জীবন দিয়েও করবো লড়াই;
কণ্ঠ ছাড়িয়া গাইবো মোরা বাংলারই জয়গান-
প্রত্যেকটা মুহূর্ত, প্রত্যেকটা দিন।
দেহের প্রতিটা রক্তকণা দিয়ে লিখে যাব- মাতৃভাষার ঋণ।।
0 মন্তব্যসমূহ