দর্পণ || সাপ্তাহিক পরিচালকীয় কলম




পোস্ট বার দেখা হয়েছে
একদিন থেমে যাবে এই নিঃসীম হাহাকার
এ কে আজাদ

এখন আর কবিতা হয়ে ওঠে না রাত্রির চোখ,
কবিতা হয়ে ওঠে না তারাদের মিটিমিটি,
কবিতা হয়ে ওঠে না প্রেয়সীর ঠোঁট,
কবিতা হয়ে ওঠে না বাঁশরির সুর!

এখন কবিতা হয় দূরত্বের জ্যামিতি!
কবিতা হয় শঙ্কার ডাকাতি ডঙ্কা!
কবিতা হয় আতঙ্কের নিশ্বাস!
কবিতা হয় ছুঁয়ে দেয়ার এক অচেনা অবিশ্বাস!

জানি - একদিন কেটে যাবে অন্ধকার,
একদিন থেমে যাবে এই নিঃসীম হাহাকার!
একদিন ভেঙে যাবে ভয়ের পেণ্ডুলাম,
আবার গাছে গাছে বসবে পাখিদের মেলা,
স্বপ্নের আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠবে বেলা।

একদিন আবার অনুরাগের আদরে ছেয়ে যাবে রাত্রির বাসর,
চন্দ্রমল্লিকার বনে আবার বসবে জোনাকিদের আসর,
শিউলীর ঘ্রাণে আবার ফিরে আসবে প্রাণ,
ছেলের কপালে মায়ের চুমুতে আবার ভরে উঠবে আসমান,
আবার চাঁদের হাসিতে ভরে উঠবে দুধরাঙা রাত্রির কোল,
ভোরের দেয়ালে শোনা যাবে রাতজাগা পাখিদের বোল!

একদিন তসবীর দানায় আবার ভরে উঠবে স্তুতি,
প্রার্থনালয়ে আবার হবে বিশ্বাসী কবুতরের শ্রুতি!
ঘাসের ঠোঁটে দেখা যাবে শিশিরের নিঃশব্দ হাসি,
একদিন পুকুরের জলে হবে হাঁসেদের জলকেলি,
ফাগুনের দুপুরে ঘুঘুরা আবার গেয়ে যাবে গান-
হে জীবন! আমি তোমায় বড্ড ভালবাসি।

====
একমূখী চলাচল
 অমিতাভ মীর 

জনারণ্যের যাপিত জীবনের সমাপনী পথে
অতিশয় কোলাহল
একমুখী চলাচল;
সামনে-পিছনে, ডানে-বাঁয়ে মানুষের ঢল 
ছুটছে অবিরাম অতীন্দ্রিয় অদৈন্য সম্পাতে।

কারো হাত ভরা কারো হাত খালি,
পেছনে বিত্তের বাহার, সামনে অন্ধকার। 
ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ঠেলে-
সে কোন টানে সম্মুখে অনন্তের পথে চলি?

পড়ে থাকে পেছনে গাড়ি-বাড়ি, সম্পদ,
বিত্তের পাহাড়, টাকার চটক, রাজার প্রাসাদ;
জাত্যাভিমান, লালসা, অহংকার, লোভ, মাৎসর্য। 
গন্তব্য পথে শূন্য দুটি হাত, ইচ্ছের অপমৃত্যু,
পারের পারানি নেই; পথ শেষে অন্ধকূপ।

====
এই তমশায়
শিবাজী  সান্যাল

সময়ের অলিন্দে থাকে নিশ্চুপ সাগরের দুন্দুভি
ইতিহাসের তিলে তিলে জমা অশ্রুধারা , থাকে অজানা, 
আগামীর উত্তাল শব্দেরা অযুত , আজও মানুষ 
হাজার বছরের ঋণ নিয়েও পথভ্রান্ত স্বার্থের উন্মত্ততায়
প্রতিদিন সূর্য তাকায় বিস্তীর্ণ  লোকালয়ে , চরাচরে
শতাব্দীর শঙ্খনাদ ছুঁয়ে যায় মাটিতে , পাথরে  , জলে
ঋতুর বক্ষ জুড়ে বিবর্তনে কম্পিত অনুচ্চারিত উচ্চারণ 
বিষ্ণু দের “ অঙ্গার  ” হয়ে মেশে বাতাসে - বরফে । 

এখনও সময় আছে , তাকাও চতুর্দিকে ।  তপ্ত গঙ্গা 
উৎস দেবপ্রয়াগ , যজ্ঞের আগুনে হতে হবে শুদ্ধ আবার 
নয়ত প্রলয় সুনিশ্চিত , কালরাত্রির এই অন্ধকার ব্রহ্মাণ্ডে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ