দর্পণ || সাধারনতন্ত্র দিবস




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

প্রজাতেন্ত্রর রূপকথা

অমল কুমার ব্যানার্জী


প্রজাতন্ত্র আজ রূপকথার দেশে। তবুও প্রজা নামক জীবটি প্রজাই বটে। তন্ত্র মন্ত্র যাই বা থাকুক প্রজা সে তো শুধু প্রজা।

প্রজাতন্ত্র বলতে কি বুঝায় তা বিশ্লেশন করতে হয়তো পারব না তবে আমি যতোটা বুঝি তা হল প্রজাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তন্ত্র বা সিস্টেম। এই সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে প্রজাদের দ্বারা দেশ চালনা করা। যখন প্রজা কথাটি আছে তখন কোথাও না কোথাও রাজা আছেন। এই যে রাজার অবস্থান এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজতন্ত্রে সে রাজা এবং প্রজাতন্ত্রে সে প্রজার ভূমিকায় থাকলে কিন্তু তাকে বাদ দেয়ার প্রশ্ন জাগে না। তাকে রাজার অস্তিত্ব বলে বাদ দেয়ার প্রশ্ন জাগে না। তাই সে প্রজ এবং ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রজাদের প্রতিনিধি। Old wain in new bottle.


প্রজা কথাটিই রাজার অস্তিত্বকে স্বীকার করে।

তাই প্রজাতন্ত্র হচ্ছে রাজতেন্ত্রর পরিমার্জিত সংস্করণ। বলা যেতে পারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ প্রজাতন্ত্রের কৃপায় অনন্ত পাঁচ

বছর রাজ করতে পারেন পয। তাই  প্রজাতন্ত্রে সব সময় রাজতন্ত্রের দোষ ত্রুটি অত্যন্ত প্রখর। যে লঙ্কাতে যায় সেই রাবণ হয়। আর যে রাবণ হতে চায় না তাকে বাধ্য করা হয় নয়তো দোষারোপের বহু পন্থা। শেষমেশ আত্মহত্যা নয়তো এক্সিডেন্ট। 


এর সমাধান কোথায় ??? গণতন্ত্র/ জনগণতন্ত্র। জনগণের কথা তো হল। রাজতন্ত্র তখন কি করবে। তারাও জনগণের একজন । সুতরাং বাধা কোথায়। তাছাড়া তো মানি পাওয়ার ম্যান পাওয়ার ম্যাসেল পাওয়ার যথারীতি রয়েছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই একই সমীকরণ। প্রকৃত অর্থে যিনি প্রকৃত প্রজা তিনি সাত বাও জলে।


আজকের পরিস্থিতিতে প্রজাতন্ত্র, গণতন্ত্র,

জনগণ তন্ত্র আক্ষরিক অর্থে কি বুঝায় তা বিশ্লেশনের প্রয়োজন রাখে কি? এরই মধ্যে পথ খুঁজতে হবে। আপামর জনসাধারণের সমস্যা কি

ও কি ভাবে তার প্রতিকার করা যায়। এখনেও সেই "কিন্তু" কথাটা রয়ে যায়। 


জনগণের পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেও অনেক সমীকরণ। খুব সহজ ভাবে বলছি। কোন একটি মহল্লায় একাধিক দাদা আছেন। আবার ভাল লোকও আছেন। এদের মধ্যে জনগণ কাকে সমর্থন করবে। সজ্জন ব্যক্তিটিকে সমর্থন করলে জনগণের কাজ হত তবে ঐ দাদা লোকেরা তা হতে দেবেন না এবং নানা ধরনের সমস্যা অশান্তির সৃষ্টি করবেন। পুরো এলাকায় বিভীষিকা দেখা দেবে। 


একটুও কমজোরি দাদাকে সমর্থন করলে ঐ একই বিপদ। সুতরাং সবচাইতে যে বড় দাদা তাকে ভোট দিলে ছোট দাদা/ সজ্জন ব্যক্তি সকলেই কনট্রোলে থাকবেন। 


কিছু বাড়াবাড়ি করলে বড় দাদা সামলে নেবেন। জনগনের একটাই লাভ তা হল সব দাদাদের শাসানি থেকে একটু রেহাই আর কি। 


এক ভাবে আজকের প্রজন্মকে তৈরী করতে হচ্ছে। বাধ্য করছে পরিস্থিতি। Struggle for existence 

Darwin's theory. 


প্রজাতন্ত্র আজ ভূল পড়িয়ে ইতিহাস ভুলিয়ে দিচ্ছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস 

তার এক বড় দৃষ্টান্ত। 


পর্যালোচনা প্রয়োজন কতোটা নোংরা নেতাদের দোষ আর কতোটা জনগণের। নেতাদের দুর্নীতি চিরকাল চলমান প্রক্রিয়া। 


জনগণ কখন জাগবে। প্রজাতন্ত্র জটিল থেকে জটিলতর হতে পারে। তার সমাধান জনগণকে করতে হবে।  But who will bell the cat.


এটা শুধু ভারতবর্ষের প্রেক্ষকাপটে নয় সারা বিশ্ব এর শিকার। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস বলেছিলেন,

প্রত্যেক নাগরিকের মিলিটারি ট্রেনিং আবশ্যক। 

কেন? ভারতে অনেক ভাল নেতা ছিলেন যারা অত্যন্ত সুচারু এডমিন্সিট্রেটার।কিন্তু তাদের আইসোলেট করে দেওয়া হয়েছিল। 


সিস্টেমে ঘুষ করাপশন এতো ওতোপ্রত ভাবে জড়িয়ে পড়েছিল যে মানুষের সিভিক্স কনসাসনেস  বলে কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। সেটা অনন্ত পরের কয়েকটি জেনারেশন সুধরে নিয়ে সিভিক্স সেন্স প্রতিষ্ঠিত হলে তা অনন্ত করাপশন কে দূর করে স্বচ্ছ সামাজিক ব্যাবস্থা তৈরী করতে সাহায্য করবে। কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভুত থাকলে কি করে ভূত  ছাড়বে??


যে নেতাদের হাতে পাওয়ার ট্রান্সফার হয়েছিল তা বলাই বাহুল্য। দেশকে টুকরো টুকরো করে নিজেদের নীচে স্বার্থসিদ্ধির করা ছাড়া তাদের আর কোন চিন্তা ছিল না। আজও আমাদের তার মাশুল দিতে হচ্ছে। আর যতো দিন এই দেশ থাকবে মাশুল দিয়ে যেতে হবে।


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা দিয়ে শেষ করছি- "আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে" ধর্মের বিভাজন প্রাদেশিকতার বিভাজন থেকে মুক্ত হয়ে কখন আমরা এক হব। সবাই সবাইকে সমভাবে দেখে সমভাবে সন্মান দেব।

সমভাবে দেশে আদর্শ প্রতিষ্ঠ করে আদর্শ দেশ

ও আদর্শ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।

এতো সব লেখার পরে নিজেকেই সন্দেহ হচ্ছে "অবাস্তব স্বপ্ন ও কল্পনার দেশের কথা আওড়ে গেলাম।"


জয় হিন্দ। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ