দর্পণ || সাপ্তাহিক সেরা কবিতা গুচ্ছ




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

ঐ সমুদ্রে

ঝুমা মল্লিক



সাগর পারে এলেম বুঝি

বালির মধ্যে পা ডুবিয়ে,এমন করে মুক্ত খুঁজি,যেন আনমনে সুখ খুঁজি।সুখের পরে সুখ,সুখের পরে সুখ।


সাগর পাড়ে এলেম বুঝি

বৈশাখী রোদ সহজ সরল ,বিকেল গুলো নীরব আজি

ঐ সাগরের শেষে ,আজো আমি তোমায় খুঁজি,ঢেউয়ের সাথে নিত্য যুঝি।দুই হাতে প্রদীপ রাখি,বুকের মধ্যে উষ্ণ বালি।

তারপরে আকাশ পথে এমন করে চলেছি

যেন সব বাঁধন ছেড়ে ,এ জীবন ভুলেছি।


গোধূলি বেলায় ,লালে লাল হয়েছে তোমার হৃদয় ।

মুখোমুখি ,চোখের কোলে ,চোখের  বালি।

সব যেন নোনা জলে ধুঁয়ে দিলে

এমন করে ছুঁয়ে দিলে।

যেন হাজার ঢেউ এগিয়ে এসে বলেছে ,ভেসে যেওনা।ভাসিয়ে দাও যা কিছু জীবনের তান্ডব।বিরহী নদী চুপ করে দেখেছে।


কেউ বলেছে-

অপেক্ষা করো ,সমুদ্র জানে ,তুমি যে করেছো ভালোবাসার অঙ্গীকার।

********************


শিরোনাম-আজ রবিবার/নাজিম হিকমত

অনুবাদ -মোফাজ্জেল হক


আজ প্রথমবার তারা আমাকে বাইরে সূর্যের মধ্যে নিয়ে গেল।

এবং জীবনে প্রথমবারের মতো বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম ,

মাথার উপরে আকাশটা অনেক অনেক দূরে,

আর সে কতখানি নীল, কতটা বিশাল।

আমি গতিহীন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম,

তারপর আমি মাটিতে বসে পড়লাম,

দেয়ালে হেলান দিয়ে,

কিছুক্ষণের জন্যে কোন তরঙ্গ নেই,

কোন যুদ্ধ নেই, কোন স্বাধীনতা নেই,

কোন পত্নী নেই আমার।

আছে শুধু মাটি, সূর্য আর আমি ,

আজকে আমি অনেক অনেক সুখী।

****************

উপচ্ছায়া 

ব না নী 


সমস্ত ক্যানভাসে রং ছড়াছড়ি যেদিন, 

তরুতলে অথচ বাতাস ছিল না 

বুলিয়ে নেওয়ার মত–

দর্পণ পরবর্তী ভাস্কর্যে বৃষ্টিজল ভাঙছিল 

তোমার নোঙর। 


গ্রহণান্তে স্নান সেরে আসা 

সহস্র বছরের তৃষ্ণায় 

মোহর পড়েছিল কেবল সেইটুকুই মাত্র– 

যার হয়তো নাম ছিল রৌদ্রতর, 

অথবা অন্যতমস। 


কিন্তু কেউ গুনে রাখেনি ঋতুবতী সেসব সংকেতে 

কারা ছিল প্রসূতিসম্ভব, কে এসেছিল নিবৃত্তির চূড়ান্তপৃষ্ঠে- সর্বভূক– 


অতএব.... 

ভাড়াটে শহরে আমরাও কোনো 

পেরেক পুঁতিনি আর।


কাচঘেরা হামাম রাখি নি ঈশ্বরবাদী নেত্রের সম্মুখ ! 


পরিবর্তে দোআঁশলা কাঁকর তুলে দিয়েছি 

তর্জনী ও মধ্যমার অনুসন্ধিৎসু উপান্তে, যুদ্ধ বাজবে বলে...


এসো কখনও... সেই রণাঙ্গনে–


বজ্র হয়ে ঝলসে ওঠা কৃষ্ণগহ্বরে, 

পেলব কোনো সিঁড়িঘাট 

হা'মুখ ছবি এবং মোমের শয়ান খুলে 

ওঠে কী ওঠে না 

দেখো 

অনুবাদহীন ওঙ্কারজ্বালা, ভ্রুমধ্যে এবার!


ভ্রুগর্ভ এঁকেবেঁকে দধিগাছ- ঝুরিদাগ- পুত্তলিকার....


******************


গোধুলির চাওয়া

নীল লোহিত 


মঠ মন্দির কাপে থরথর;পুঁজোনীয় পাপে 

মক্কা-মদিনা, মান মরিয়াদা রাগিনীর সুর সাধে।

দিলে পাপ সাথে ক্ষমা,আহবান যত দিলে 

অনাথের তরে খোলা মন্দির  ধরনিতলে মেলে।


ভাষা দিলে তব স্বরন যত 

গাহিব তোমার স্বরে 

মন দিলে প্রভূ নড়বড়ে কভূ 

বে জাতে আছারি মরে।

********************



বেশ্যা ও সংবাদ প্রতিদিন

কল্যাণ ভট্টাচার্য্য 


ক্যামেরার লেন্সে টুকরো নগ্নতা

গলি থেকে রাজপথ সজ্জিত সংবাদ

গোপন জবানবন্দি ধর্ষিত মুহূর্ত গুলো,

বদ্ধ আসরে ক্রেতা-বিক্রতার আপোস সময়—

সভ্যতার নাভিতে পুড়ছে নিহত লজ্জা !


চোখের দূরে মুক্ত আকাশ—

মুখোশের আড়ালে দালানের ঘড়িতে          

প্রতিবাদ হীন নিভন্ত আলো ক্ষতবিক্ষত  

লাঞ্ছিত সংবাদহীন নারী-দিবস !


নীরব শূণ্যে শুধু আবরণ হীন ইচ্ছে গুলো

পাখির ডানার মতো আকাশ বেয়ে—

দেয়ালের ফাটলে জমে আছে

তৃষ্ণার আর্তনাদ আর ব্যথার স্বাধীন চিৎকার !


শহীদ বেদি তে অরণ্য সংলাপ 

মোমবাতির শিখা বেয়ে গলছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ