পোস্ট বার দেখা হয়েছে
।।একগুচ্ছ কবিতা ( দ্বিতীয় পর্ব )
~ দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য ।।
স্মৃতি
দালনগুলো ল্যাম্পপোস্টের আলো জাপটে ধরতে পারে বুকে,
সেই নিঃশ্বাস একলা পৃথিবী আমি শূন্য ঘরে ফেলে এসেছি কবেই,
পাড়ায় পাড়ায় বাউন্ডুলে বোঝাপড়ার রাত -
এখনও দুচোখে, জানলায়,
আমি ফেলে এসেছি সেই গলির চৌত্রিশ নং গেট!
স্বপ্ন গাঁথা সিড়ি মাড়িয়ে উঁকি দিয়েছে ধুলোবালি,
উপরে উঠতে উঠতে কাদার সাম্রাজ্যে কবিতা বলি,
ঘেঁষে ঘেঁষে পাশের বস্তিতে খুদার্ত শিশুদের নাচ,
ছাদের হাতলে সূর্য পোড়া আলোদের ওস্তাদ!
ফেলে এসেছি পড়ার টেবিলে কফির কাপে সময়,
ফেলে এসেছি বেড়ালের আসা যাওয়া অফিসের সস্তা জীবন,
পোস্টাবিশের ধার ধারেনি ফেলে এসেছি বেনামী চিঠি,
নিজেকে ফেলতে পারিনি এখনও -
আয়নায় রোজ দেখি!
লিখতে দ্যায় না
আমাকে লিখতে দ্যায়না লেখার প্রবনতা,
লিখতে দ্যায়না ঘ্রাণের মতো এক সমুদ্র বর্বরতা,
যেখানে স্বপ্নেরা কুড়ে ঘর বাঁধে, প্রসব করে শব্দ,
যেখানে নাম না জানা প্রক্রিয়ায় অনচ্ছিুক পৃথিবীর কালো ধোঁয়া!
তাদের শহর ,আমাকে লিখতে দ্যায় না!
কখনও কখনও নদীর মতো পেতে রাখি সুখ,
বাতাসের মতো পাহাড় থেকে শুষে নিয়ে আসি রং,
তখন আধপেটা বিবর্ণ সভ্যতা আমায় লিখতে দ্যায়না!
ছুঁতে দ্যায়না খাতার নরম মুখ !
কিছু টুকরো টুকরো মোড় , কিছু অপলক কঠিন চোখাচোখি -
সেখানে তোমার কত কথা চুবিয়ে রাখি নির্জনে,
পাশ ফিরে শোবার আগে পর্যন্ত কান্নারা খোঁজ নেয়না,
ওরা আমায় লিখতে দ্যায় না কিছু!
সেই কবি! সেই বিচ্ছিন্ন দিনের জামায়াতের ধরন,
সেকেলে ঘড়ির উল্টে রাখা সময়ের ইতিকথা,
যেভাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে টলে যায় পা -
যে ভাবে অজানা জ্বরে ,জ্বলে ওঠে শিশুর গা,
সেই অনিশ্চয়তার ভিটেমাটি -
সেই বাগানে বাগানে সুতীব্র জিয়ন কাঠি,
আমায় প্রকৃতি সাজায় -
বোঝায় - খোঁজায় - আসে যায় -
লিখতে দ্যায় না! লিখতে দ্যায় না!
নিরুপায়
আলবিদা! পছন্দের মতো চমকপ্রদ ঘটনা,
রোজ পড়তে পড়তে ক্ষয়েছে আনমনা,
চেয়েছি প্রাণপাত করে একটুখানি ধুলোয় মেখে চটি
ছিঁড়েছে প্রতিবার , এখন খালি পায়েই হাঁটি!
পকেটে পকেটে মজুত রয়েছে শুকনো ফুলের গোছা,
পিছিয়ে পরা সরজমিনে, সহজ নয় সোজা!
সেই রাস্তা ধরে যানবাহন চলে না এখনও মনে আছে,
স্টিলের বাসনে সাবান যেমন জলে ধুয়ে যায় -
আমার ঘামে জড়ানো শীতল রাত তোমার উষ্ণতায়- বয়ে গেছে!
এবং আমি নেই এখন, রিস্তা'রা সব ফাঁকি,
যদিও বার্ধক্য মৃত্যুর দূত ,আমি রোজ শুরু থেকেই শিখি!
তোমার কবিতা
শব্দ গুলো গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠে কোমল মনে,
সেইমতো রুদ্ধশ্বাস তোমার কবিতা -
এক গেলাস জলে যেমন ভেজেনা সমুদ্রের পিঠ,
সেই হিসেব কষতে কষতে মাপতে চলি গভীরতা!
গা ছমছমে ইতিহাস আমায় প্রশ্ন করে ডেকে,
"যুদ্ধের রাতে কে আছো জেগে " -
ব্যাথার আঁচলে হারিয়ে গ্যাছে পৃথিবীর ধুলো,
আমরা ময়লা ফ্যালার গাড়িতে বসে রক্তের মতো সজীব!
বাথটাবের কান্নাদের মতো ধারন করেছি নদী,
ডুবতে ডুবতে ভেজার স্বাদ ভুলেছি কবেই -
শিরোনামের ঘরে ভাত নেই খুদার্ত ভাষা বুঝে,
দুই মলাটের প্রেম ,ভেতরে নগ্ন কথা - তোমার কবিতা!
1 মন্তব্যসমূহ
উত্তরমুছুনমুগ্ধ হলাম কবি
ভাবনার গভীরতায়