দর্পণ | ধারাবাহিক কলম | উপন্যাস ~ কংসাবতী | (পর্ব --৬)




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

 

 উপন্যাস ~ কংসাবতী

   উপস্থাপনায় ~ মহুয়া 


বর্ষার দিন , শহর থেকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরতে পারলেই ভালো । হাত উল্টে একবার রিস্টওয়াচ টা দেখে নিল ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষ । 

------ মোবাইলের লক টা খোলা গেলো ? 

------ স্যার , একটা খোলা গেছে , মনে হচ্ছে কোনো ভদ্রলোকের । মোবাইল খুললেই ছবিটা দেখতে পাবেন । আর একটা স্যার ডাবল লক আছে । ওটা খুলতেই তো অনেক সময় চলে গেলো । এটা দেখার বেশি সময় পাইনি । আপনি চলেও এলেন । ©️

------ ঠিক আছে , যেটা খুলেছে সেটাই নাহয় নেড়েচেড়ে দেখি । ফেলু মিত্তিরের চটি পায়ে গলিয়ে একবার দেখি পরীক্ষায় পাস না ফেল করি , হাহাহাহাহা । এই নাও ৫০ টাকা , রাখো । 

রামধন চলো , বৃষ্টি আসবে মনে হচ্ছে । তিনটে বাজে , যাবার সময় একবার হাসপাতাল হয়ে যাবো । কালকের কেসটা র কি অবস্থা দেখতে হবে । 


ইন্সপেক্টরের ফোনটা বেজে উঠলো ।

------ হ্যালো , ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষ বলছি 

------ স্যার , হাসপাতালের রিসেপশন থেকে মনিকা মিত্র বলছি । সুপার স্যার বললেন ,©️

আপনার সকালে আসার কথা ছিল অ্যাক্সিডেন্ট কেসটা র ব্যাপারে । আপনি এলেন না ,তাই ফোন করছি । 

------ হ্যাঁ ,আমি একটু দরকারে শহরে এসেছিলাম , যাবার পথে হাসপাতাল হয়ে যাবো , সুপারকে বলে দিন ।


বিকেল চারটে র সময় ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষের গাড়ি থামলো খাতড়া মহকুমা হাসপাতালের সামনে । রিসেপশনিস্ট পৌঁছে দিল সুপারের ঘরে । 

------- নমস্কার , কেমন আছে অ্যাক্সিডেন্ট কেসের ওনারা ?

------- স্যার ২৪ঘণ্টা হয়নি এখনও । ভদ্র লোকের একটু জ্ঞান এসেছিল কিছুক্ষণের জন্যে , কিছু যেন বলার চেষ্টা করছিল । তবে ভদ্রমহিলা কিন্তু একভাবেই আছেন , জ্ঞান আসেনি এখনও । তবে রাতের দিকে ©️ আসলেও আসতে পারে । আসলে ভদ্রমহিলার জখম টা বেশ মারাত্মক । 

------ হুম , সেটা হওয়াই স্বাভাবিক । কারণ ট্র্যাক টা তো বাঁ দিকে মেরেছে । মহিলা তো বাঁ সাইডেই ছিলেন । 

------ হ্যাঁ স্যার , মহিলার মাথা আর ঘাড়ে চোট বেশি । ঘাড়ের কাছে শিরদাঁড়ায় চোট পেলে ভবিষ্যতে আর ও কম্প্লিকেশন বাড়বে । আপাতত ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই । 

------ হুম , আপনাদের হাসপাতালের ডিউস গুলো অবশ্যই পেয়ে যাবেন । দেখে তো রিচ ফ্যামিলিই মনে হচ্ছে । আর কাল ওনাদের ব্যাগ সার্চ করে কিছু টাকা পাওয়া গেছে । ন হাজার টাকা , আপাতত এটা রাখুন । পরের টা পরে দেখবো । আজ উঠি তাহলে । নমস্কার ।©️

------- আচ্ছা স্যার , ট্র্যাকটার কোনো ট্রেস পাওয়া গেলো ? এত খারাপভাবে ট্র্যাক চালায়, এদের ধরে জেলে ঢোকানো উচিৎ । শুনলাম গাড়িটা নাকি খাতড়া মোড় থেকে এগিয়ে বড়ো শিমুল গাছটা আছে , তার নিচে এসে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টির মধ্যে । আজ সকালে হাসপাতালে আসবার সময় শিমুল গাছটার উল্টোদিকে একটা চায়ের দোকান আছে না ? ওই দোকানের লোকটা বললো । ও তখন সবে দোকান খুলে উনুনে আঁচ দিচ্ছিল । তার মধ্যেই এই কান্ড । প্রচণ্ড বৃষ্টি ও পড়ছিল । 

----- হুম , দেখা যাক ,কি হয় ? আগে ওনাদের জ্ঞান ফেরাটা জরুরী । নইলে বাড়িতে ফোন করে জানালে বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে । দেখছি কি করা যায় ? আগে ২৪ঘণ্টা কাটুক । আর হ্যাঁ , তেমন কিছু সমস্যা হলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না । ওকে , বাই।©️


গাড়িতে উঠতে যেতেই পেছন থেকে সুপার ডেকে বলেন "স্যার ওই ভদ্রলোকের জামার পকেটে একটা চিরকুট পাওয়া গেছে , এই নিন ।

 ----- রামধন , রাস্তায় যেতে চায়ের দোকান টায় একটু দাঁড়িও , চা খাবো । আর হ্যাঁ , কাল ওই দিদিমনির বাড়ির ঠিকানা টা কি তুমি জানো ?

------ না স্যার , বাড়ির ঠিকানা মনে হয় এককড়ি রেজিস্টারে লিখেছিল ।আমি কাল দিদিমনিকে ফেরার সময় খাতড়া মোড়ে নামাতে বলেছিলেন , সেখানেই নামিয়েছি । 

----- আচ্ছা , ঠিক আছে থানায় চলো । 

কি মনে করে ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষ মোবাইল গুলো বের করে লক খোলা মোবাইলটা তুলে নিলো আর টাচ করতেই অন হয়ে গেলো । স্ক্রিনে গাড়ির সিটে বসা প্রতুল বসু । বেশ সুপুরুষ চেহারা , ঠোঁটে সিগারেট । মোবাইল ঘাঁটতে গিয়ে প্রথমেই চলে গেলো গুগল পিক্স এ । বাহ্ বাঁকুড়ার নানা ছবি । স্বামী স্ত্রীর নানারকম ভঙ্গিমায় তোলা ছবি । দুজনেই বেশ সুন্দর দেখতে , বেশ সৌখিন । ছবি ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ একটা ছবিতে চোখ আটকে গেলো । বেশ পুরনো ছবি , কোথায় যেনো দেখেছে ছবির দুজনকে ?? কোথায় ??©️


(চলবে )


আগের পর্ব পড়ুন ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ