কংসাবতী (পর্ব -- ১৮) মহুয়া




পোস্ট বার দেখা হয়েছে


কংসাবতী

(পর্ব -- ১৮)

 মহুয়া


----- হ্যালো , আমি ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষ বলছি । প্রমোদ বাবু আপনি আপনার ভাইদের কলকাতায় নিয়ে যাবার পথে একবার থানায় আসবেন প্লিজ । বলতে ভুলে গিয়েছিলাম , ওনাদের কিছু জিনিসপত্র থানায় জমা আছে , একটা সিগনেচার করে নিয়ে যাবেন । 

----- ঠিক আছে , যাবার পথে অ্যাম্বুলেন্স ঘুরিয়ে থানার থেকে জিনিসগুলো নিয়ে নেবো । আপনি রেডি রাখবেন প্লিজ 

----- নিশ্চয় , ডোন্ট ওরি । 

----- এককড়ি , ওনাদের জিনিসপত্রগুলো বার করে টেবিলে রাখো  আর বড়ো ব্যাগটা একটু সার্চ করে দেখে নাও কি কি আছে ? ওই ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলে বলতে পারবে । আর একটা লিষ্ট ও করে রেখো যা যা পাওয়া গেলো । ভবিষ্যতে প্রতুল বাবু ঠিক হয়ে গেলে উনি খোঁজ নিতেই পারেন আজকের ঘটনার । 

------ আচ্ছা স্যার , এক্ষুনি রাখছি বের করে । আর দেখেও নিচ্ছি । 

হঠাৎ হাবিলদার হরকিষেন ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষকে ডাকাডাকি করতে লাগলো ।

------ কাঁ গইলবা স্যার ? এক আচ্ছা খবর লেকে আইলবা 

------ হাহাহা  কা খবর লাই ? বাঁশুরি মে  ব্যোম শংকর শুনা দো , হরকিষেন বাবা  । 

------ মজাক কা করত হো ? শনশনি খবরো বা , হা 

------ বতাও তো , সুর তো লাগাও পহেলে

------ আজ হাম খাতরা মোড় পে উ চায়ে কা দুকান হ্যায় না , ওহী পর চায়ে পিনে কেলিয়ে থোড়া  ঠহরে , তো ওহ দুকানবালা  বোলা কি উ ম্যাটাডোর কো আজ ফিন দেখা । 

------ কি বলছো ?  সাচ্চি মে দেখা ? ওই একই ম্যাটাডোর ছিল ? তব তো জরুর পুছনা পড়েগা  । কল জায়েঙ্গে , আজ সময় হবে না । 

------ স্যার , ওনাদের সব জিনিসপত্র টেবিলে রেখে দিয়েছি । ওই বড়ো একটা জামাকাপড়ের ব্যাগের পকেট থেকে এই ছোট ডাইরি টা পেলাম । কিন্তু লক করা । এমন ডাইরি কোনোদিন দেখিনি তো ? এটা কি টেবিলের সব জিনিসপত্রের সাথে রেখে দেবো স্যার ? 

------- হ্যাঁ দাও 

এমনসময় অ্যাম্বুলেন্সের হুটারের আওয়াজ পাওয়া গেলো । ইন্সপেক্টর বেরিয়ে এলেন । 

------ আসুন আসুন , কোন হাসপাতালে ট্রান্সফার করবেন বলে স্থির করলেন ? আপনার ভাইয়ের কি সেন্স এসেছিল আর ? আর ওনার মিসেসের ? ডক্টর কি বললেন ?©️

------- বেলভিউ তে কথা বলেছি , ওখানেই রাখবো । ভাইয়ের সেন্স বলতে তেমন কিছু দেখলাম না , মাঝে মাঝে কিছু বলার চেষ্টা করছে আর যন্ত্রণার একটা আওয়াজ করছে । বুঝতে পারলাম না সুচি কে ? সেই মেয়েটি কি ? জানিনা । প্রার্থনা করুন ওকে যেন সুস্থ করে তুলতে পারি । মেরির কন্ডিশন একেবারেই ভালো নয় । ডাক্তার কোনো আশা দিলেন না ।ভেন্টিলেশনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি বলতে বলতে প্রমোদ বাবু কেঁদে ফেলেন । এমন দিন যে আসবে স্বপ্নেও ভাবিনি । 

------ ভেঙে পড়বেন না , মন শক্ত করুন । নেগেটিভ ভাবার চেয়ে পজিটিভ চিন্তা করা জরুরি । অ্যাক্সিডেন্টের আজ থার্ড  ডে । কলকাতায় নিয়ে ভর্তি করতে পারলে বেটার চিকিৎসা হবে । 

হ্যাঁ এই জিনিসপত্রগুলো আমরা গাড়ি থেকে পেয়েছি । আর যে মহিলা ওনাদের কে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি কিছু পেয়েছিলেন । ও হ্যাঁ আপনাকে বলতে ভুলে গেছি , অ্যাক্সিডেন্টের পর একজন মহিলা ওনাদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন । 

এমন অ্যাক্সিডেন্ট হলে যেখানে আজকাল মানুষ ধারেকাছে এগোয় না সেখানে উনি কিন্তু বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন । ওনার নাম সুচেতা চক্রবর্তী ।  আর হ্যাঁ ওনাদের গাড়িটা  থানায় রাখা আছে । সময়মত এসে ঠিক করিয়ে নিয়ে যাবেন ।

------ কি বললেন ?? সুচেতা ..... চক্রবর্তী ? নামটা চেনা লাগছে মনে হয় । কোথায় শুনেছি ? ©️

ঠিক মনে করতে পারছি না । দিন জিনিসগুলো ।

------ এখানে একটা সাইন করে দিন । আর এই ছোট ডাইরি টা আমি রেখে দিলাম । সাবধানে যাবেন । যে কোনো প্রবলেম হলে ফোন করবেন অবশ্যই ।

----- অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ইন্সপেক্টর । আপনার সহযোগিতার জন্যে আমি কৃতজ্ঞ । আসি । 

------ এককড়ি সবে সন্ধ্যে সাড়ে ছটা । রামধন কে বলো গাড়িটা বের করতে । হরেকৃষ্ণ কে বলো গাড়িতে গিয়ে বসতে ।

------- স্যার আপনি হরকিষেনের নাম নিয়ে এত মজা করেন , ও মাঝে মাঝে খেপে গিয়ে বলে "স্যার হামরা নামকা মজাক বনা দিয়া । কভি ব্যো ম শংকর ,কভি কিষান জী তো কভি হরেকিষনা । এহসান কহনে সে খুদ কা নাম  আউর ইয়াদ না রহেঙ্গে । " হাহাহাহাহা

------ রাগ করে নাকি আবার ? হাহাহা , থানার একঘেয়ে কাজের মধ্যে একটু মজা ।তুমি থাকো । আমি বরং ওই চায়ের দোকান থেকে ঘুরে আসি কেষ্টাকে নিয়ে । ম্যাটাডোর টাকে ধরে একটু কড়কে দিতে হবে ।  

বাইরে থেকে জিপের হর্ন শোনা গেলো , ইন্সপেক্টর সুজয় ঘোষ বেরিয়ে গেলেন ।


(চলবে )


আগের পর্ব পড়ুন ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ