দর্পণ পত্রিকা || সাপ্তাহিক নির্বাচিত কলম




পোস্ট বার দেখা হয়েছে

ভালোবাসার অনিশ্চয়তা জ্ঞাপন

 মৃত্যুঞ্জয় টিকাদার 


কোনো একনারীকে ভালোবেসে লুকিয়ে আছি আমি যেন দিব্যলোকে

সে ছাড়া কেউই জানে নাকো তা আর ; তার মনের ভেতরে

আমার যাওয়া আসা প্রতিনিয়তই দেখে সে গভীর এক দৃষ্টিতে স্ব-চোখে

আমি তেমনি বলিনিকো তারে কিছুই - ভালোবাসি বলাটা বাহুল্য-স্বভাব ইতরে

এ সব কথাগুলো স্পষ্টই ব্যক্ত করে তিনি ; কিন্ত আমি সেটাই মোহের ঝোঁকে 

বোঝাতে অপারগ তার কাছে, তবু ভালোবাসি বলতে চাই কেমন করে

সে যদি কিছুটা তার দ্যায় নাকো সহজ ইঙ্গিত ; হৃদয় বিষন্নকাতর শোকে

মাঝেমধ্যে তারই লাগি হয় ; তবু তাকে করতে হবে জয় চিরতরে! 


এই বোধটুকু কাজ করে মাথায় আমার ; সে আছে সমস্ত স্বত্তাজুড়ে

আমার দেহ কী মনের ভেতরে ; আমার চোখেও তার প্রতিছবি ভাসে

একবার সেটাই যদি তার সম্মুখেতে তুলে ধরতে পারতাম তবেই বুকপুরে

অনেকটাই শান্তি ও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রইতাম তার বাহুপাশে! 

সে কী কখনো আমার হৃদয়ের ভাষাটুকু বুঝবে - নিজেরই থেকে

আমায় কী কখনো তার বুকেতে দিবে ঠাঁই -অটটু করে ভালোবেসে কাছেতে ডেকে!

=====

 সন্ধ্যা হারিয়ে আলোর ভীড়ে

সুনীত বিশ্বাস


সন্ধ্যা হাঁটছে মাঠের পথে,খালি পায়ে দেহাতি মেয়ে,

সে আসতেই ও মাঠ বাগান,আলো মুছে,আঁধার যাচ্ছে ছেয়ে।

জোনাক সাজছে আলোকের সাজে,ঝোঁপের আড়ালে থেকে,

হেথায় তার আগমন বার্তা, ছড়ায় ৺ঝি৺ঝি তার সুরে ডেকে।


হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যা চলেছে,নগরে শহরে দূরে,

হেথায় সন্ধ্যা আর দেহাতি নয়,আলোকের সাজে শহুরে।

তার কালো রঙ,বিজলী বাতিতে ,কেমন ফ্যাকাসে ঝাপসা,

সাঁঝের গর্ব আঁধার কে নিয়ে গড়েছে ওখানে তামাশা।


হেথায় সাঁঝে চাঁদের হাসি,তারারা আকাশেতে আঁকে নকশা।

হোথা আলোর ভীড়ে,জোছনা কোথায়,শুক্লা কৃষ্ণা একসা।

হারিয়েছে আকাশ বহুতলের ভিড়ে,ঠাঁই নাই কোনো আবেগের,

সন্ধ্যা হারিয়ে আলোর ভীড়ে, অস্তিত্ব নেই আঁধারের।

 ======

বিমূর্ত ছন্দে নক্ষত্র আবর্তে

ডা.শামস রহমান 


কেউ ডাক দিয়ে গেল কারা শুনতে পেলো

কবির জীবন আলেখ‍্য

ওর কপালে ছেঁড়া শ্রীঅযুক্ত চপ্পল মনে আছে 

নীলাকাশ অক্ষ!

কেউ বুঝে তার ভাষা ছড়ায় স্ফুলিঙ্গ এমনই

ব‍্যাপক ব‍্যাপ্তি

জ‍্যোৎস্না জোনাকে মন রাঙিয়ে ঘুরে চোখে

নেই তার সুপ্তি!


সে কেমন করে সাজায় পাণ্ডুলিপিতে

ভাবনাগুলো একে একে

সে ভাবের রাজ‍্যে মধ‍্যমণি,ঘিরে তাকে

বাদ‍্য বাজায় ঢাকে!

অতি সাধারণ কথা অসাধারন হয়ে যায় 

কখনো ভাব ভাষায়

কে কেমন করে বুঝবে মন আলোকিত 

হোক প্রত‍্যাশায়!


শূন‍্যে আছি যেনো হাওয়ায় ভাসি কেউ 

মনের মাঝে ঢেউ খেলে

বলতে পারো কি অবেলার গান কেনো

ভালো লাগে?

আজ না হয় কাল ফিরে আসব আবার 

তোমাদের অঙ্গনে

কোনদিন দেখা হবে এমন পরিবেশে মন 

মাতিয়ে কোন ক্ষণে!


ওপারেতে করে খেলা এপারে বারবেলা,

জীবন মরণঘাতি 

এই ছিল মনে দিন যায় ক্ষণে ক্ষণে,জন্মে 

হৃদয় ভগ্ন!

ভাবনা মনে উদাস করা ক্ষণে,এমন রাতে 

কোথাও আছে মেতে

কে ভাসায় তরী তুলো পাল ত্বরা,যেতে 

হবে মহামিলনে!


সারাবেলা কাটুক মিলনমেলায় ভাসুক 

তরী বেয়ে কল্লোলে

সুবাতাস বয়ে যাক মন ভরায় আজতক 

দখিনার হিল্লোলে।

জোনাক পোঁকায় আঁকে কাব‍্য গাথা ওকি 

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা

বিমূর্ত ছন্দ নক্ষত্র আবর্তে ওর ক‍্যানভাসে

গল্প বলা!

=====

শেষের অপেক্ষায়

মারুফ খাঁন


  প্রেমের দ্বারে তুমি বার বার প্রত্যাখ্যান হয়েছো

  সেই আশায়,,,

  কখনও হিরো জিরো কিংবা কখনও অসম্ভবকে সম্ভব করেছো।


  তবুও লক্ষ  ভ্রষ্ট হয়েছো! তবুও নিজেকে সাজিয়ে তুলেছো,,,

  শত শত স্বপ্ন ও কল্পনাতে।


  যে পথ তোমার অপছন্দ

  সে পথেও তুমি চলেছো,


  ক্ষতবিক্ষত হৃদয়কে,

  কখনও 

  নরম,,,

  গরম,,,

  কত কঠিন করে তুলেছো তুমি নিজেকে সেই পথে।


  অবিচল যেন

  এগিয়ে চলেছো শেষের অপেক্ষায়!


   একদিন দরজা খুলবে

   প্রকৃতির আলো আসবে,

   স্বপ্ন কল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হবে তোমার দ্বারে এসে।

=======

নিষিদ্ধ 

শিখর


না আমার মন খারাপ হয় নি, চোখে জল আসে নি,

একছুটে ছাদের নিভৃতে চলে যাই নি,

বালিশ তো ভেজাই নি বটেই।


নিষেধ আমাকে আরও হিংস্র, বেপরোয়া করে দিয়েছিলো, পাগল করে দিয়েছিলো ঐ ছফুট দু ইঞ্চি,

এলোমেলো চুল, দুদিন শেভ না করা শিরীষ কাগজ গাল,

 ওপরের দুটো বোতাম খোলা গহীন বুক।


একমুখ ধোঁয়া ছেড়ে গিটার টা তুলে বললো

"এটা চে গ্যেভারা কে নিয়ে লিখলাম, শুনবি?"


আমার সাড়ে ষোলোর চারটে ব্রণ ভরা কপাল ঘেমে গেলো,

গিটারে ভেসে গেলো চিলেকোঠার নির্জন দুপুর।

আমার লজ্জা করে নি।

নির্লজ্জ আকুল আমি গিটারের তার হয়ে বাজি রোজ মনে মনে।

 আমি নিষিদ্ধ হয়ে গেলাম অনির্বাণের ছোঁয়ায়।


অদৃশ্য পাঁচিল উঠে গেলো আমার আর অনির্বাণের জানালার মাঝে,

অনেক রক্তচক্ষু ফালাফালা করে দিলো এ বুকটুকু,

এ হয়না, এ অসামাজিক, নিষিদ্ধ।


আমি এখন অপেক্ষা করি শেষ ট্রেনের,

হুইসল বাজিয়ে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে যেতে যেতে শুনবে

আমি অন্ধকার ছাদে দাঁড়িয়ে দুহাত ছড়িয়ে চিৎকার করে বলছি,

"অনিদা আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভালোবাসি"

তুমি নিষিদ্ধ, তুতো দাদা হলেও আমি অনির্বাণ ভালোবাসি।।

=====

আলোর সন্ধানে

পরিতোষ জানা


আলো খুঁজতে খুঁজতে ঠোক্কর খেতে হয় সেই অন্ধকারেই। 

 

হাতড়ে হাতড়ে লণ্ঠনটা খুঁজে পেলেও দেখা গেল তাতে তেল নেই।

চকমকি পাথরটাও ক্ষয়ে ক্ষয়ে শেষ। 


অন্ধকারে ই হেঁটে চলি তাই নিতান্ত অভ্যাস বশে।

জোনাকিরা ও পথ দেখাতে ভুলে গেছে আজকাল

নিজেকেই পথ চিনে চলতে হবে

এছাড়া উপায় নেই। 

দিক নির্ণয়ের একমাত্র অবলম্বন ধ্রুব তারাও ঢেকে আছে মেঘে।


অন্ধকারেই গাছগুলো পতাকা নাড়ছে আর ভেংচি কাটছে , 

মাঝে মাঝে হেঁচকি তুলছে বাতাস। 


দেশাত্মবোধের উন্মাদনায় বোমা ফাটছে এখানে ওখানে। 

হঠাৎ একটা চোপসানো ফানুস এসে পড়লো একেবারে গা ঘেঁষে।


একটু থমকে দাঁড়িয়ে আবার চলার শুরু , 

খানিকটা গিয়ে বুঝতে পারলাম অন্ধকারেই কবিতারা হাঁটছে মিছিলে আলোকের সন্ধানে।

====

Lonely Night

Mofazzel Haque


It was the silent deep night,

I wake up alone with twinkling stars.

Night and day, I see everything around you, are awake and lonely

Only the moon and the stars are moving across the sky.

Sometimes the flame of the moon is extinguished,

Fog covers the sky.

The wall clock tells the depth of the night,

The ticking sound is increasing the alarm,

My throat is drying up in loneliness.

As the darkness deepens,

My mind is restless with fear,

And you are next to me.

Thus passes the time in the sleepless night.

Once I got up and stood next to the balcony grill,

I wanted to give you a handful of Moon light.

My effort failed,

The bright star fell,

The dream broke,

There was only silence.

Slowly the morning light rose,

My chest trembled with fear for some time.

=====

সময় যাবে বয়ে

রাজনারায়ন দাস


মানব তুমি কি ভয় পাচ্ছো 

অস্তিত্বের দিন তোমার আসছে ধেয়ে

চতুর্দিকে হাহাকার শুধু

নিজের আখির খানি তাই কি নিচ্ছ গুছিয়ে

তবুও সময় যাবে বয়ে।


স্বার্থের বশীভূত হয়ে উড়ছে মানুষ

স্বজনরা যাচ্ছে দুরে পালিয়ে

মিলন সুরের ছিঁড়েছে একটু একটু তার

ঘোলা জলে হাবুডুবু খেয়ে

তবুও সময় যাবে বয়ে।


আত্মীয়রা সব থাকে দূরে দূরে 

কখনও সখনও খবর নিয়ে ফোন করে 

হিংস্রতায় ভরা হৃদয়, হৃদ্যতার নেই সময়

তাই লৌকিকতার বহর যায় দেখিয়ে

তবুও সময় যাবে বয়ে।


একদিন ছিল মানুষ অন্যের দুঃখে কাঁদতো আসতো ধেয়ে, মুখে শান্তনার বানি ঝরতো 

এখনও কাঁদছে, তবে তা দেখে অন্যের সুখ 

তাই নিজের মনে থাকে দুঃখিত হয়ে

তবুও সময় যাবে বয়ে।


মনের মানুষের সাথে মিলনের তরে 

সমাজের দায় কর্তব্য এড়িয়ে যায়

আজ থাকলেও কিছু ইচ্ছে সবার

লোক লজ্জায় ভয়ে যায় পিছিয়ে 

তবুও সময় যাবে বয়ে।


মানুষ তুমি বিরত হও স্বার্থান্বেষী লোভের

হিংসার বশীভূত হয়ে ভাঙ্গবে না দ্বার খোভের

হয়তো প্রকৃতই তোমায় সাজা দেবে 

পরিত্রাণ পাবেনা পরিণামের লয়ে 

তবুও সময় যাবে বয়ে।


যখন‌ তোমার ভাঙ্গবে এ ভুল

সেদিনও কি হবে সব ইচ্ছে পূরন চেয়ে?

জড়িয়েছো তুমি কাঁটার জালে নিজেকে

তাই তিলে তিলে শুধু কষ্ট যাবে পেয়ে

তবুও সময় যাবে বয়ে।


এসো আজ মোরা নিই এই প্রন

মিলেমিশে মোরা থাকবো সঘন

সুখ দুঃখের ভাগি হবে মোরা

একে অপরের তরে, সব সয়ে

সময় যতই হোকনা কঠিন

ভাগ করে নেব কষ্টের দিন

মন থেকে সব মুছে দেব হীন

প্রানে হাঁসি মেলে মোরা উঠবো সব গেয়ে

আর এমনি করে সময় যাবে বয়ে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ